তৃণমূলের মধ্যেই বিজেপি রয়েছে, বিজয়া সম্মেলন মঞ্চ থেকেই তোপ দাগলেন রাজ্য নেত্রী প্রিয়দর্শনী ঘোষ

সঞ্জয় মণ্ডল, বাঁকুড়া : দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর নির্দেশে গোটা রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে অত্যন্ত আরম্বরের সাথেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠান চলছে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কড়া নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের প্রতিটি ব্লকেই দীপাবলীর আগেই বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠান সেরে ফেলতে হবে। বিগত দিনেও তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠান হলেও এ বছরের বিজয়া সম্মেলনের অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ দলের নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই করতে হচ্ছে প্রতিটি ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতিদের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারের অভিমুখ একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে স্থির হয়ে গেছে।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর নির্দেশে রাজ্যের প্রতিটি ব্লকের বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকছেন নির্দিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য নেতৃত্বরা। সোমবার বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার গঙ্গাজলঘাটি দু’নম্বর ব্লকের বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ থেকে তোপ ডাকলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য যুব নেত্রী প্রিয়দর্শিনী ঘোষ। নেত্রী প্রিয়দর্শিনী বলেন দলের ভেতরেই ঘর শত্রু বিভীষণ রা রয়েছে। এদের বার করে চিহ্নিত করতে হবে। ব্লক সভাপতি জিতেন গড়াই এর নেতৃত্বে দুর্লভপুর এ অনুষ্ঠিত এই বিজয় সম্মেলনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়া সাংগঠনিকের জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায়,বাঁকুড়ার সংসদ অরূপ চক্রবর্তী, বাঁকুড়া জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি রথীন ব্যানার্জি, দেবদাস বাজপাই, নিমাই মাজী সহ তৃণমূল কংগ্রেসের একাধিক নেতা ও কর্মী। এদিনের বিজয়ের সম্মেলনী অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য যুব নেত্রী প্রিয়দর্শনী ঘোষ। প্রিয়দর্শিনী তার বক্তব্যে বলেন দলের প্রতিটি নেতা ও কর্মীকে আত্ম সমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের ভুলত্রুটিকে সংশোধন করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে এবং এর পাশাপাশি তিনি বলেন দলের অন্তরেই বহু মানুষ রয়েছে যারা বিজেপির হয়ে কাজ করছে। এরা তৃণমূলের মধ্যে থেকে বিজেপির হয়ে ভোট করাচ্ছে। এদেরকে চিহ্নিত করতে হবে। প্রিয়দর্শিনী একটি প্রচলিত বাংলার প্রবাদ কে উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করে বলেন ” সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে, সেই ভূত গুলোকে খুঁজে বার করতে হবে “। প্রিয়দর্শিনী এই বক্তব্য উপস্থিত কর্মী ও সমর্থকদের হৃদয়কে ছুঁয়ে যায়, মুহূর্তের মধ্যেই কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উন্মাদনা তৈরি হয়, করতালির মাধ্যমে সমর্থক ও কর্মীরা প্রিয়দর্শনীর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে এটাই বোঝানোর চেষ্টা করেন যে তিনি তাদের মনের কথা বলে দিয়েছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বেশ কয়েকদিন আগে একটি সভামঞ্চে বাঁকুড়া জেলা আইএনটিটিউসির সভাপতি রথীন ব্যানার্জি বলেছিলেন” তৃ ণমূলের মধ্যে থেকে বিজেপি সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষাকারী মানুষজনকে চিহ্নিত করার কাজ শেষ হয়েছে। সেই সমস্ত বিভীষণ রা যদি নিজেদের না শুধরে নেয় তাহলে দল কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে”। এদিন রাজ্য নেতৃত্ব প্রিয়দর্শনী ঘোষ পারো তো পক্ষে শ্রমিক নেতা রথীন ব্যানার্জীর বক্তব্যকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব প্রিয়দর্শিনী ঘোষ জানান ২০২১ সালে শালতোড়া বিধানসভা বিজেপির দখলে গেছে, কিন্তু ২০২৬ এর বিধানসভায় সেই আসন আবার তৃণমূলের দখলে ফিরিয়ে নিয়ে আসতেই হবে, তাই দলের প্রতিটি নেতা কর্মী ও সমর্থকদের তিনি আহ্বান করেন যে সব বাধা-বিপত্তি সরিয়ে নিজেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াই করুন, মানুষ তৃণমূলের সাথেই আছে। এদিনের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বাঁকুড়া সাংগঠনিক এর জেলা সভাপতি তারাশঙ্কর রায়ের গলাতেও রাজ্য নেত্রীর সুর ই ভেসে ও ভেসে ওঠে। সোমবারে যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে হাল তোর আর মানুষ বিজেপির সাথেই আছে, বিজেপির পক্ষ থেকে আরো জানানো হয়েছে যে ২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিগত 2021 সালের থেকে আরও বড় ব্যবধানে তৃণমূল কংগ্রেসকে পরাজিত করে বিজেপি প্রার্থী শালতোড়া বিধানসভায় জয়লাভ করবে। তবে সময় বলে দেবে মানুষ কাদের পাশে আছে তৃণমূল নাকি বিজেপি।