|
---|
দেবজিৎ মুখার্জি, কলকাতা: কেন্দ্র থেকে যে পরিমাণ খাদ্য সরবরাহ করে রাজ্যকে। তার অধিকাংশটাই চুরি যায়। সেই চুরি কেমন ভাবে হয়? সেটা খাদ্য দফতরের কর্মীরা বোঝাচ্ছিলেন। কিন্তু কেউই তাদের নাম প্রকাশে ইচ্ছুক নন। ইডি বাকিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সেই বাকিবুর অপরাধের পাহাড়ে একটা ছোট্ট পাথরের খন্ড মাত্র বলে দাবি করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
২০১২ সালে এই খাদ্য দফতরে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক মন্ত্রী থাকাকালীন,গমের বড় দুর্নীতির সামনে এসে ছিল। সেই সময় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানিয়েছিলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত করবেন। কিন্তু বিষয়টির পরবর্তী পদক্ষেপ, তিনি সেই তদন্ত করাননি। সে সময় দক্ষিণ কলকাতায় খাদ্য দফতরের প্রায় ৪০০ কোটি টাকার গম কেলেঙ্কারি সামনে এসেছিল।
কী ছিল সেই গমের কেলেঙ্কারি? হিসেবটা অনেকটা এই রকম-কেন্দ্র সরকারের থেকে রেশন কার্ড পিছু সপ্তাহে গমের বরাদ্দ ছিল ৫০০ গ্রাম করে। দক্ষিণ কলকাতায় ২০১২ সালে গমের কার্ড পিছু বরাদ্দ করেছিল ৪৫০ গ্রাম। দক্ষিণ কলকাতায় রেশন কার্ডের সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষেরও বেশি।তাহলে,মধ্যে থেকে ৫০ গ্রাম করে গম উধাও হয়ে কোথায় গেল? ভাবতে পারেন!
৫০ গ্রাম গুণিতক ১০ লক্ষ। যার পরিমাণ হয় ৫০ টন। শুধু দক্ষিণ কলকাতা থেকে প্রতিমাসে ২০০ টন করে গম চুরি হয়েছিল। তাহলে সারা বাংলায় সেই চুরির পরিমাণ কত ছিল? টাকার হিসাব করলে বুঝতে পারবেন, দুর্নীতি কোন আকাশ ছুঁয়েছিল৷ ২০১২-২০১৪ পর্যন্ত অভিজিৎ নামে হাওড়ার বাসিন্দা জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আপ্ত সহায়কের কাজ করতেন।
২০১২ সালে এই কেলেঙ্কারি সামনে আসার পর অভিজিৎকে খাদ্য ভবন থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু বিশ্বম্ভর বসু নামে রেশন ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের এক নেতার নাম সে সময় দুর্নীতির সুর চড়িয়েছিলেন। পরে অবশ্য সেটা নিয়ে আর কোনভাবে নাড়াচাড়া হয়নি। তবে সেই অতিরিক্ত গম বিভিন্ন আটা মিল এবং বাংলাদেশে পাচার হয়েছিল বলে সূত্রের খবর।
এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট এখন কি করে, তার অপেক্ষায় রয়েছে সবাই।তবে খাদ্য ভবনে কর্মীদের বড় একটা অংশ চাইছে সম্পূর্ণ তদন্ত হোক।প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী যেরকম অভিযুক্ত হয়েছেন। তার সঙ্গে খাদ্য দফতরের বিভিন্ন ডিরেক্টররা জড়িত বলে তাদের দাবি।