বর্ধমানে দুস্থদের মেলা থেকে দামোদর বাঁচাও এর ডাক।

লুতুব আলি, বর্ধমান, নতুন গতি : বর্ধমানে দুস্থদের মেলা থেকে দামোদর বাঁচাও এর ডাক। বর্ধমানের অগ্রজ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটির উদ্যোগে ২২ ডিসেম্বর বর্ধমান শহরের উপকণ্ঠে দামোদর নদীর তীরে বিদ্যাসাগর পল্লীর মাঠে অনুষ্ঠিত হলো এক মহামিলন উৎসব। এই মহামিলন উৎসবে প্রান্তিক দুস্থ মানুষ থেকে শুরু করে শিশুদের উপস্থিতি ছিল চোখে পরার মত। মহামিলন উৎসবের সূচনা পর্বে স্বাগত ভাষণ দেন সংস্থার সম্পাদক প্রলয় মজুমদার। এই মহামিলন উৎসবের ময়দান থেকে দামোদর বাঁচাও এর ডাক দেওয়া হয়। দামোদরের চড় কে ব্যবহার করে দামোদরে আবর্জনার স্তুপ ফেলে দেয়া হচ্ছে বলে সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। এর ফলে দামোদর দূষণ তো হচ্ছেই সর্বোপরি এই জঞ্জাল এর স্তুপ থেকে পরিবেশ দূষিত ও হচ্ছে। এদিন একইসঙ্গে মৎস্যজীবীদেরও হাজির করানো হয়। মৎস্যজীবীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরা হয়। এই উৎসবে প্রায় ৯০০ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় যার মধ্যে ৫০০ জন প্রান্তিক মানুষ এবং ৪০০ জন স্কুল কলেজ পড়ুয়া, সাধারণ মানুষ এবং সোসাইটি সদস্য সদস্যরা ছিলেন। প্রান্তিক মানুষদের বিনামূল্যে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহযোগিতায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয় এবং ক্রেতা সুরক্ষার বিষয়ে সচেতনতার পাঠ দেয়া হয়। ছিলেন ক্রেতা সুরক্ষা দপ্তরের বর্তমান রিজিয়নের আধিকারিক সুচিস্মিতা মুখার্জী। উৎসব প্রাঙ্গণ থেকে দামোদর বাঁচাও কর্মসূচি নেওয়া হয় এবং দামোদরের মৎস্যজীবীরা উপস্থিত থেকে তাদের জীবন যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। বয়স্ক দুস্থ মানুষদের মিউজিক্যাল চেয়ার ও বল ছড়ার মত খেলায় অংশগ্রহণ করতেও দেখা যায় এদিনের মহামিলন উৎসবে। বিলি বাগ, সুমিত্রা চৌধুরী, খাইরুন্নেসা বিবি, শেখ হাবিবুর রহমানরা বলেন, ছোট্টবেলায় ফিরে গেলাম, ভুলে গেলাম কিছুক্ষণের জন্য বাতের ব্যথা। প্রতিটি ইভেন্টের বিজয়ীদের পুরস্কৃত করা হয়। মাছ মাংসের নানা পদের সঙ্গে বিশেষ আকর্ষণ ছিল দামোদরের মাছ। উৎসবের শেষ লগ্নে, প্রান্তিক মানুষদের হাতে শীতের চাদর তুলে দেওয়া হয়। সোসাইটি সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, বিগত সাত বছর ধরে এই মিলনমেলার আয়োজন হচ্ছে। এই মেলা মহামিলন মেলার আকার ধারণ করে চলেছে। এই মহামিলন উৎসবের মাধ্যমে দুঃস্থ মানুষদের মানসিক সুস্থ রাখার এক প্রচেষ্টা। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মেলবন্ধনের মাধ্যমে মানুষের রোগ প্রবণতা কমানো সম্ভব এবং আয়ু বাড়ানো সম্ভব। এছাড়াও এবছর থেকে বর্ধমানের আয়ু রেখা দামোদরকে বাঁচানোর ডাক দেয়া হয় এবং বর্ধমানবাসীকে দামোদরের টাটকা সুস্বাদু মাছ কেনা উৎসাহিত করা হয়। সংস্থার মিডিয়া অফিসার অঙ্কিতা সাম বলেন, এই মহামিলন উৎসব আক্ষরিক অর্থে এক অন্য মাত্রা এনে দেয়। সংস্থার যে বার্তা সেই বার্তাকে সুদূরপ্রসারী হোক। মহামিলন উৎসবে উপস্থিত তিনজন মৎস্যজীবী সুকুমার রায়, শচীন মণ্ডল, রাজীব হাজরা বলেন, দূষণের ফলে দামোদরে মাছ ধরতে ভীষণ অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয়। বিশেষ করে দামোদরকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংস্কার করা দরকার। এদিনের মহামিলন উৎসবে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস, সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দ্যুতি কোনার, চৈতালি ঘোষ, ঐন্দ্রিলা সাধুখাঁ, অনির্বাণ নন্দী, ওয়াসেফ আলি প্রমুখ।