জলের উচ্চতা মাপার ডিভাইস তৈরি করে তাক লাগালেন হুগলির এক ছাত্র

নিয়ন্ত্রণে কাজ করবে এমন ডিভাইস তৈরি করে তাক লাগাল হুগলির ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র অয়ন বাগ (Ayan Bag)। জলের উচ্চতা মাপার কাজ করবে এই ডিভাইস। যার নাম ‘ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম’ (Flood Monitoring System)।

    অনেক সময় দেখা যায় ডিভিসি মাইথন অথবা পাঞ্চেতের মত জলাধারগুলো অতি বৃষ্টি হলে জল ধরে রাখতে পারে না। জল ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে নদী বা ক্যানেলগুলো প্লাবিত হয়। ডিভিসি জল ছাড়লে নিম্ন দামোদর অববাহিকায় বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার একাংশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে অয়নের তৈরি ডিভাইস নদীতেই থাকবে। আর তা দিয়ে প্রশাসনের কর্তারা তাঁদের দফতরে বা বাড়িতে বসেই জলস্তর মাপতে পারবেন। সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও নিতে পারবেন।

    ‘ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম’ নামে এই ডিভাইস কাজ করবে আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। এটি পরিচালিত হবে একটি অ্যাপের সাহায্যে। পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যেখানে ইন্টারনেট আছে, সেখানেই জানা যাবে সেইসময় কোন নদীতে ওয়াটার লেভেল কী অবস্থায় আছে। নদীর জল বাড়লে হলুদ সতর্কতা, লাল সতর্কতা জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে। সাবধান করা হয় নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষদের। প্রয়োজনে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অন্যত্র। এই ডিভাইস সেই কাজকেই আরও গতি দেবে।

    বাঁধগুলো যেখানে জল ধরে রাখে এবং প্রয়োজনে জল ছাড়ে তারাও সুবিধা পাবে। কিউসেক মেপে জল ছাড়ে বাঁধগুলো। একসঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণ জল নদীগুলো নিতে পারে না। যারফলেই প্লাবিত হয় বিস্তীর্ণ এলাকা। এই ‘ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম’ ডিভাইস দিয়ে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে পারবে বাঁধ কর্তৃপক্ষ। হুগলি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ইতিমধ্যেই অয়নের কাজ দেখে প্রসংশা করেছেন। হুগলির আরামবাগ মহকুমা বন্যাপ্রবণ এলাকা। ফি বছরই এখানে বন্যা হয়। এই ডিভাইসকে সেই বন্যা নিয়ন্ত্রণে কাজে লাগানো হতে পারে। তারজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।

    চন্দননগরের বাসিন্দা অয়নের দাবি, ১৫ কিমি অন্তর এই ডিভাইস বসিয়ে রাখলে জলের উচ্চতা কতটা বাড়ল বা কমল তা বোঝা যাবে। বাঁধগুলো থেকে নিয়ন্ত্রিত জল ছাড়তে খুবই কার্যকরী হবে এই ‘ফ্লাড মনিটারিং সিস্টেম’।