অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত

ফারুক আহমেদ : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্য নেতৃত্বে লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত শুধু সময়ের অপেক্ষা। সব কয়েকটি আসনে জয় সুনিশ্চিত করতে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে চলেছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের সঙ্গে পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। কিন্তু দলে নেত্রী একজনই, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

    মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সত্যিই কি পদ্ধতিগত পার্থক্য আছে? এই প্রশ্নের জবাবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পদ্ধতিগত পার্থক্য থাকতেই পারে। সেটা দলের জন্য স্বাস্থ্যকর। যদি না থাকে, তাহলে তো মিথ্যে বলা হবে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমার দূরত্ব তৈরি হয়ে গেল। আমার সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত কোনও বিরোধ নেই। আমি তো বারবার বলি, এখনও বলছি, আমার গলা কেটে দিলেও ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’, ‘তৃণমূল কংগ্রেস জিন্দাবাদ’, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান বেরবেই। তৃণমূলে দুটো দল নেই। আর দুটো, তিনটে, চারটে, যে কটা দলের কথাই বলুন না কেন, আমার কাজ সব জায়গায় ঢুকে জোড়াফুল ফোটানো।’ সম্প্রতি এক মুখোমুখি ইন্টারভিউতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় দ্বন্দ্বের প্রশ্নে জবাব দিয়ে বলেন, ‘সারা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের এত নেতা, কর্মী, সমর্থক। তাঁদের কারও সঙ্গে আমার কোনও দ্বন্দ্ব নেই। এটাই সবচেয়ে বড় কথা। এ বিষয়ে আমি তাঁদের ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা জানাই।’

    বামফ্রন্টের আমলে পিছনের সারিতে চলে যাওয়া এই বাংলাকে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী আবার সামনের সারিতে অধিষ্ঠিত করেছেন, সেই লড়াইয়ের কথা বাংলার ঘরে ঘরে পাঠিয়ে দেওয়ার মাধ্যম হয়ে উঠেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতার সাফল্য, মমতার আগামী দিনের কর্মসূচী প্রচারের মূল দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের এমুহূর্তে তুরুণ তুর্কী অপ্রতিরোধ্য সেনাপ্রধান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো তাঁর যুববাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, মানুষের কাছে যেতে, মানুষকে বোঝাতে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে যে উন্নয়ন যজ্ঞ চলছে, সেই উন্নয়নের বার্তা রাজ্যবাসীর কাছে পৌঁছে দিয়ে মমতার জয় সুনিশ্চিত করে তোলার পিছনে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-এর অবদান কারও থেকে কম নয়। তাঁর দূর্বার ডাকেই তৃণমূলের হাত শক্ত করতে সমর্থনের জোয়ার বয়ে গিয়েছিল। তাইতো, যতই তলে তলে জোট গড়ুক সিপিএম-বিজেপী, মানুষ বুঝতে সমর্থ হয়েছিল, অত্যাচারী সিপিএম আর জুমলা বিজেপি আর নয়, বাংলার বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়েছে যার হাত ধরে তাঁকেই বাংলার কুর্সিতে দরকার। যুব সংগঠনই দলের ভবিষ্যৎ। যুব সংগঠনের বৃদ্ধি না হলে, নতুন মুখ উঠে না এলে, যে-কোনও দলেই পচন ধরে। আর মানুষের পাশে, মানুষের কাছে গেলে, দলে নতুন সদস্যের অন্তর্ভুক্তি হতে বাধ্য। দলীয় সদস্যপদ নবীকরণ হওয়া মানেই দলের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হয়ে ওঠা। সেই সরল সাধারণ মন্ত্রই যুব নেতা হিসাবে রাজ্যের প্রতিটি যুব শাখার অন্দরে প্রবেশ করিয়ে দিতে পেরেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

    বয়সে নবীন হলেও, রাজনৈতিক বিচক্ষণতার সার্থক বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে সমর্থ হয়েছেন সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক। নেত্রীর দেখানো পথই তাঁর এগিয়ে চলার সোপান। তাই তো যুব সংগঠনের দায়িত্ব নিয়েই তিনি বুঝিয়ে দিতে চেয়েছিলেন, শৃঙ্খলা আর অনুশাসনই দলের মূলমন্ত্র। বলেছিলেন দলের অন্দরে অশান্তি-বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত নয়। চূড়ান্ত করে দিয়েছিলেন যুবনেতা-কর্মীদের চলার পথ। তাঁর নির্দেশনামার প্রথমেই ছিল, মানুষের জন্য কাজ। বলেছিলেন, মানুষের জন্য জীবনপাত করুন, স্বার্থসিদ্ধি মানব না। রাজ্য সরকারের কর্মসূচি ও সাফল্যের কথা বুথে বুথে পৌঁছে দিতে হবে। যুব সংগঠনের মাধ্যমেই রাজ্যের তৃণমূল সরকারের সাফল্যের কথা গ্রামেগঞ্জে, শহর-শহরতলির অলি-গলি, তস্য গলিতে ছড়িয়ে পড়বে। রাজ্যের যুব সম্প্রদায়ের মধ্য দিয়ে যদি এই বার্তা মানুষের মনে প্রবেশ করানো যায়, তাঁর প্রভাব পড়বে বহুগুণ। দলের প্রতি, দলনেত্রীর প্রতি মানুষের বিশ্বাস দ্রুত বাড়তে থাকবে। দল বাড়বে। সরকারের উন্নয়নমুখী কাজের প্রচারে যোগ দিতে ভিন্ন ভিন্ন দল থেকে ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের মানুষও ভিড় জমাতে শুরু করবেন। তাঁদের দলে অন্তর্ভুক্তির জন্য ছাঁকনির কাজ করার গুরুদায়িত্ব নিতে হবে যুবকর্মীদের। আরও একটা বড় কাজ, ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে চলা। কেননা ছাত্র সংগঠনের পরের ধাপই যুব সংগঠন। ছাত্র নেতা-কর্মীদের যুবস্তরে নিয়ে আসারও তৈরি করার দায়িত্ব তো যুবনেতা-কর্মীদেরই।

    অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, মূল সংগঠনের সঙ্গে নীতিগত ফারাক বা কোনও সংঘাত তিনি চান না। এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে সর্বস্তরে। মনে রাখতে হবে যুব সংগঠন দলের ডানহাত। এ হাত যত শক্ত হবে, দল ততটাই মজবুত হবে। কিন্তু মূল সংগঠনের সঙ্গে স্বার্থ-সংঘাত থাকা মানে দল নড়বড়ে হয়ে পড়া। যুব শাখার একটা বিশেষ দায়িত্ব থাকে। দলীয় নীতি মেনে সেইসব কাজের মাধ্যমেই দলকে শক্তিশালী করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রাজ্যের উন্নয়নের প্রচারে মুখ একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূল কংগ্রেসে এক, দুই বা তিন বলে কিছু নেই। দলের শীর্ষে আছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর নীচে আছেন কর্মীরা। আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেত্রীর কর্মযজ্ঞকে সফল রূপায়ণে সহায়তা করব। সেই ব্রত নিয়েই তিনি এগিয়ে চলেছেন। যে মন্ত্রে তিনবার বিধানসভায়, পৌরসভা ও পঞ্চায়েত ভোটে বিপুল জয় এসেছে, সেই একই মন্ত্রে এবার লক্ষ্য লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সচেতন নাগরিকগণের কাছে একাটাই দাবি নিয়ে বিজেপিকে কেন্দ্রীয় সরকার থেকে হটিয়ে তাদের পতন সুনিশ্চিত করার। বাংলার প্রাপ্য বকেয়া আদায় করা। গনবিরোধী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে গর্জন করে রুখে দাঁড়ানো। বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতে বিভেদমূলক শক্তির পতন সুনিশ্চিত করা।

    গ্রামের উন্নয়নে তাঁকে দলনেত্রী যেভাবে কাজে লাগিয়েছেন, সেই মতোই তিনি দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়ে বিপুল কাজ করছেন। গ্রামে বিগত দিনে যে উন্নয়নের ঝড় বয়ে গিয়েছে, তা তিনি তুলে ধরছেন তাঁর যুববাহিনীর মাধ্যমে। বলছেন ভবিষ্যৎ কর্ম যজ্ঞের কথাও। এখন বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করতে তিনি শোকসভা নির্বাচনে বিভিন্ন আসনে অংশ গ্রহণকারী প্রার্থীদের হয়ে জোরালো প্রচার চালিয়ে যাবেন। এবার ভোটেও কর্মীদের যে-কোনোও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি। বলেছেন, অসন্তোষ থাকলে দলের মধ্যেই আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে। যুব সংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে তিনি আদর্শ যুবনেতার পরিচয় বহন করতেই আগ্রহী ছিলেন আমরা সবাই দেখেছি। একন তিনি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অনেক বড় দায়িত্ব কাঁধে। তিনি চান দুর্যোগ বা ঝড়ে প্রকৃত কাণ্ডারীর মতোই শক্ত হাতে হাল ধরতে। স্বচ্ছ প্রশাসন রাজ্যবাসীকে উপহার দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলার যুবরাজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বদ্ধপরিকর। যুবাদের অনুপ্রেরণার তিনিই উৎস। আবার রাজনীতিতেও সক্রিয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শক্ত হাতে হাল ধরেছেন।

    ২০২১ বিধানসভা ভোটেও তৃণমূল কংগ্রেসকে বিপুল ভাবে জিতিয়ে আনতে তিনিই প্রধান সেনাপতি ছিলেন। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাংলায় পুনরায় ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে তিনি সংগঠনকে ঢেলে সাজিয়ে ছিলেন। হ্যাট্রিক করতে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরবর্তীকালে তিনিই মুখ্যমন্ত্রী হবেন, এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। বাংলার প্রতি প্রান্তে সংগঠন ও সদস্য সংখ্যা বাড়াতে দৃঢ় পদক্ষেপ নিচ্ছেন তিনি। বাংলার কল্যাণে ও দেশের কল্যাণে যুব সম্প্রদায়ের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে আদর্শ ভারত গড়তে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিদির যোগ্য উত্তরসূরি। তিনিই আলোর দিশা হয়ে উঠছেন।

    শিক্ষক ও অধ্যাপকদের ওপর নৈতিক দায়িত্ব থাকে সুস্থ সমাজ গড়তে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার শিক্ষা প্রসারে ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেছে বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে। নতুন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে নয়া ইতিহাস রচনা করেছে তৃণমূল কংগ্রেসের সরকার।

    পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের উদ্যোগে ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩.৮৯ কোটি স্কলারশিপ প্রদান করা হয়েছে প্রায় ৭৮০০ সাত হাজার আটশো কোটি টাকা অর্থমূল্য। বিত্তনিগম শুধুমাত্র লোনপ্রদান করে না, এছাড়াও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের প্রদান করা হয় পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ যা প্রথম শ্রেণি থেকে পি এইচ ডি পর্যন্ত পাঠরত ছাত্রছাত্রীরা পেয়ে থাকে। এই ঐক্যশ্রী স্কলারশিপের সূচনা ঘটে ২০১৯ সালে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে। প্রথম বছরেই ৩৭.৫ লক্ষ ছাত্র-ছাত্রী এই স্কলারশিপ পেয়েছিল যা সারা ভারতবর্ষের একটি বিস্ময়কর ঘটনা। গত বছরে অর্থাৎ ২০২২-২৩ এ প্রায় ৪৫ লক্ষ স্কলারশিপের আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে প্রায় ৪২ লক্ষ স্কলারশিপ বিতরণ করা হয়েছে, এবং যার অর্থমূল্য আনুমানিক ১০০০ কোটি টাকার বেশি। এই স্কলারশিপের পুরোটাই পশ্চিমবঙ্গ সরকার বহন করে। এ বছরেও অর্থাৎ ২০২৩-২৪ এ স্কলারশিপ প্রকল্পে প্রায় ৪২ লক্ষ আবেদন জমা পড়েছে, যার মধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ স্কলারশিপ প্রদান করা হয়ে গেছে। এ ছাড়া প্রত্যেক বছর প্রায় ১১০০ ব্যক্তি ঋণ ও প্রায় এক লক্ষ স্বনির্ভর দলের সদস্যদের ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে।

    সংখ্যালঘু কল্যাণে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আন্তরিক তা বাজেটেই প্রমাণ মেলে। সংখ্যাগুরু সমাজের একটি অংশ, যাঁরা আজ উটপাখির মতো মরুবালিতে মুখ গুঁজে উপেক্ষিত অংশের জাগরণকে স্বীকার করতে দ্বিধান্বিত, তাঁদের বোধোদয় হবে এমন প্রত্যাশা করা যায়। ভারতের ঐতিহ্যের, পরম্পরার এবং সংহতির ঘোর বিরোধী গেরুয়া শাসনের অবসান ঘটাতে এগিয়ে এসেছেন সচেতন পশ্চিমবাংলার নাগরিকগণ। সীমাহীন রাজকীয় ক্ষমতানির্ভর সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে, ঘাড়ে-গর্দানে এক-হয়ে-যাওয়া কেন্দ্রীয় সরকারের রাজাবাবুরা এতদিন যে সংখ্যালঘু ও দলিত সম্প্রদায়ের উপস্থিতিকেই স্বীকার করত না, আজ তারাই বেমক্কা নির্লজ্জভাবে ছুটে গিয়েছেন প্রান্তিকের কাছে ভোট ভিক্ষা চাইতে।
    ইতিহাস বলে, বিজেপি’র মূল চালিকা শক্তি আরএসএস ও তার তৎকালীন দোসর হিন্দু মহাসভা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করেনি। বরং ইংরেজদের পক্ষেই ছিল তারা। শুধু তাই নয়, দেশভাগের মূলে প্রকৃতপক্ষে ওই দুই সংগঠনের নেতাদের ভূমিকাই ছিল আসল। অথচ, সেই আরএসএস-জাত বিজেপি’র অধুনা নেতারা দেশভক্তির পরাকাষ্ঠা দেখাতে কী না করছেন! বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহ’র শাসনে ভারতের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে, তীব্র বেকারত্ব ও ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির জোড়া ধাক্কায় দেশবাসীর নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম হয়েছে। সাধারণ মানুষকে দেওয়া প্রায় কোনও প্রতিশ্রুতিই পালন করতে পারছেন না মোদি ও তাঁর দোসররা। কৃষি বিল নিয়ে আন্দোলন চলছে আজও, কৃষি বিল বাতিল করতে এগিয়ে আসছে না বিজেপির সরকার।
    এই ব্যর্থতা থেকে নজর ঘুরিয়ে দিতে ধর্মকে হাতিয়ার করছেন গেরুয়া নেতারা। ধর্মের ভিত্তিতে ভারতবাসীকে বিভক্ত করে নিজেদের আসন নির্বিঘ্ন রাখতে মরিয়া তাঁরা। সেই পরিকল্পনার আরও একটি অংশ হল বিভিন্ন আঞ্চলিক সংস্কৃতিকে গ্রাস করে নেওয়া। হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্থানের স্বপ্নে বিভোর তাঁরা। ওই স্বপ্ন সফল করতে তারা হাত বাড়িয়েছিল বাংলার দিকে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনের দখল নিতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেছিল। বাংলার মানুষের রায়ে বিজেপি বড় চোট পেয়েছে।
    বাংলার যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আর সবার প্রিয় দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর প্রতি মানুষ আস্থা রেখেছেন এবং বাংলা থেকে বিজেপির পতন শুরু হয়েছে। আগামীতে বিভিন্ন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে এবং লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির পতন সুনিশ্চিত করবে বিরোধী শক্তি ইন্ডিয়া জোট। জোটবদ্ধভাবে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে জয় সুনিশ্চিত করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এখন ভরসা। সামনের নির্বাচনে বিজেপির হাত থেকে শাসন ব্যবস্থা তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে আসার রাস্তা তৈরি হচ্ছে।

    ২০২৩-২৪ বর্ষে সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ছিল ৫১১৬.৯৯ কোটি টাকা।
    ২০২৪-২৫ বর্ষে সংখ্যালঘু উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ ৫৫৩০.৬৫ কোটি টাকা।
    বাজেট ২০২৪-২৫ সংখ্যালঘু বরাদ্দে দেখা যাচ্ছে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ৪৭ কোটি ৯৮ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা। আন এডেড মাদ্রাসার সহায়তায় জন্য ১০০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গ পাহাড়িয়া মাইনরিটি ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের জন্য ১৯ লক্ষ ৬ হাজার টাকা। রাজ্য হজ কমিটির জন্য ২ কোটি ৭৬ লক্ষ ৩ হাজার টাকা। ওয়াকফ বোর্ডের জন্য ১৬২ কোটি ৮৮ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা। পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের জন্য ৫ কোটি ৫৯ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা।
    সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের জন্য ৭ কোটি ১৩ লক্ষ ৫৩ হাজার টাকা।
    মাদ্রাসায় ছাত্রীদের উৎসাহ ভাতা ২০ কোটি টাকা। মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য ১০৫ কোটি টাকা। জেলায় সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের হস্টেল নির্মাণের জন্য ২ কোটি ৭৬ লক্ষ ৩ হাজার টাকা। সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের ট্যালেন্ট সাপোর্ট প্রকল্পে ১২০১ কোটি টাকা। আন এডেড মাদ্রাসায় বিজ্ঞান সামগ্রীর জন্য ১০০ কোটি টাকা। মাদ্রাসা শিক্ষা কেন্দ্রের জন্য ১০৫ কোটি টাকা। সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের সাইকেল বিলির জন্য ২২০ কোটি টাকা। উর্দু ভাষার প্রসারে ১৮ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। কারমাইকেল ও বেকার হস্টেল সংস্কার ও বর্ধিতকরণের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা। মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের জন্য ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকা। ওয়াকফ সম্পত্তির উন্নয়নের জন্য ১৬ কোটি টাকা। সংখ্যালঘু সংস্কৃতি উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ কেন্দ্র নির্মাণে ২০ কোটি টাকা। সত্যি বলতে সুপরিকল্পিত ভাবে বিভিন্ন খাতে সার্বিক কল্যাণের জন্য জনমুখী সার্থক বাজেট পেশ করেছে রাজ্য সরকার।
    ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজ্যে বাজেটে সংখ্যালঘু খাতে বরাদ্দ বাড়ল চারশো কোটি টাকারও বেশি।

    সংখ্যালঘু কল্যাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৎপরতার সঙ্গে কাজ করছেন বাজেটে চোখ রাখলেই তা বুঝতে পারবে দেশের মানুষ। স্বাধীনতা লাভের পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলার সমস্ত মুখ্যমন্ত্রীকে পিছনে ফেলে রেখে অফুরন্ত কাজ করছেন বাংলার সেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকাল মানুষের কল্যাণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আন্তরিক হয়ে যেসব কাজ ইতিমধ্যেই করেছেন তা ইতিহাস রচনা করেছে। ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন সাধারণ মানুষকে। মালদা দক্ষিণ আসনে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসে প্রার্থী বিশিষ্ট কলামিষ্ট শাহনওয়াজ আলী রায়হান জোড়া ফুল প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার জন্য মনোনীত হয়েছেন। জঙ্গিপুর লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত করতে আবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবার জন্য মনোনীত হয়েছেন খলিলুর রহমান ও মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে আবু তাহের খান। বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রে চমক তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ইউসুফ পাঠান। বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে হাজী নুরুল ইসলাম অনেক ভোটে জিতে সবরকম কুৎসার জবাব দিতে তৈরি হলেন। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের জয়জয়কার সুনিশ্চিত করতে ৬ জন মুসলিম প্রার্থী জোরদার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।

    লেখক: সম্পাদক ও প্রকাশক উদার আকাশ। নিউজ লেটার ইনচার্জ কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের।