|
---|
রবিউল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ : গত ২১শে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মাহাত্ম্যে মুর্শিদাবাদের ম্যাকেঞ্জি ময়দানে শুরু হয়েছিল ১৯তম জঙ্গিপুর বইমেলা,যা ২৮শে ফেব্রুয়ারি শুক্রবার নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ বছরের বইমেলার সফল সমাপ্তি ঘটে এক বর্ণাঢ্য কবি সম্মেলনের মাধ্যমে। এবারের বইমেলায় ছিল বিপুল বইয়ের সম্ভার। বইমেলা কেবল বই কেনাবেচার স্থান নয়, এটি বইয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরির অন্যতম মাধ্যম। নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করতে হলে শুধু বই প্রকাশ করলেই চলবে না, তাদের বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট করার ব্যবস্থাও করতে হবে-এই লক্ষ্যেই জঙ্গিপুর বইমেলা কমিটি এই আয়োজন করেছে। প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বই পড়ার অভ্যাস অনেকের মধ্যেই কমে যাচ্ছে। মোবাইল, টেলিভিশন ও সোশ্যাল মিডিয়ার দখলে তরুণদের বেশির ভাগ সময় কাটে। কিন্তু জ্ঞানের প্রকৃত আলো পেতে বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। এই বাস্তবতায় নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করার অন্যতম মাধ্যম হল বইমেলা।
বইমেলার শেষ দিনে আয়োজিত কবি সম্মেলনে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে খ্যাতনামা কবিরা অংশগ্রহণ করেন। তাঁদের আবৃত্তিতে উঠে আসে সমাজ, প্রেম, প্রকৃতি ও জীবনের নানা অনুষঙ্গ। নতুন প্রজন্মের কবিরাও তাদের লেখা শোনানোর সুযোগ পান, যা মেলায় এক নতুন দিগন্তের সৃষ্টি করেছে। স্বরচিত কবিতা পাঠে অংশ নেন সুদূর জার্মানি থেকে আগত প্রবাসী কবি ড. দ্বৈতা হাজরা গোস্বামী, সাহিন হোসেন, রীণা কংসবণিক, আব্দুস সালাম, গোলাম কাদের, ওহিদ রেহমান, সোমনাথ কর, রুনা রায়, সাফিকা বেগম, ইমতিয়াজ কবীর, তনুশ্রী মন্ডল প্রমুখ। এছাড়াও অন্যান্য বিশিষ্ট কবিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তাসলিম আরিফ, তোহা সেখ, মোফাক হোসেন এবং অন্যান্যরা যাদের আবৃত্তি শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছে।এই কবি সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন রানীনগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সেমিনার কমিটির সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, সমাজসেবী রেজাউল করিম, লস্করপুর হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আসরাফ আলী রেজভী প্রমুখ।
সাগরদিঘির তরুণ কবি সাহিন হোসেন জানান, ‘ বইমেলা শুধু বইয়ের প্রদর্শনী নয়, এটি জ্ঞান ও সৃজনশীলতার উৎসব, যা নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় উৎসাহিত করে এবং সাহিত্য-সংস্কৃতির বিকাশ ঘটায়। প্রবীণ ও নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করা অত্যন্ত জরুরি। সর্বোপরি, দেশবরেণ্য কবি ও সাহিত্যিকদের উপস্থিতি মেলাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে ‘।প্রবীণ ও নবীন প্রজন্মের সংযোগস্থল হয়ে ওঠা এই মেলা নতুন বই ও নতুন ভাবনার পথ তৈরি করেছে। এবারের সফল আয়োজন আগামী বছর আরও সমৃদ্ধ হয়ে ফিরে আসবে-এমনটাই প্রত্যাশা সকল পাঠকদের।
ছবি : সামিম হোসেন।