|
---|
আজিজুর রহমান, গলসি : একই রাস্তা সংস্কারের জন্য একবার, দুইবার নয়—পুরো তিনবার টেন্ডার! কাজ না করিয়েই সেই টেন্ডারের টাকা একজন ঠিকাদারকে পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গলসিতে। ঘটনায় সরাসরি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করে প্রধানের পদত্যাগের দাবি জানিয়েছেন।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, গলসি ১ নম্বর ব্লকের লোয়াপুর কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের লোয়াপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে সোদপুর পুরোনো সেতু পর্যন্ত ৫০০ মিটার দীর্ঘ চলাচলের অযোগ্য রাস্তা সংস্কারে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। মাত্র দুই-তিন মাসে তিনবার টেন্ডার করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। অথচ রাস্তার অবস্থা এতটুকুও বদলায়নি।
বিজেপি নেতা রাজু পাত্র বলেন, “কাজ হলে মানুষ পথে নেমে আন্দোলন করত না। অফলাইন টেন্ডার করে তিনটি কাজই একজনকে পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল নেতারা এভাবেই সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন। বিষয়টি তদন্ত হওয়া দরকার।”
তবে পঞ্চায়েত প্রধান মিরাজ মল্লিক সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি কী করেছে, তা জানি না। তবে লোয়াপুর কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত ওই রাস্তা সংস্কার করেছে। এর জিও-ট্যাগসহ সমস্ত প্রমাণ রয়েছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, গলসি ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি গত ৬ নভেম্বর ৯২,১৬২ টাকা এবং ১১ নভেম্বর ৯২,৩৪৮ টাকার টেন্ডার করেছে। এরপরও ৮ জানুয়ারি ২০২৫ সালে লোয়াপুর কৃষ্ণরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পক্ষ থেকে মেরামতির জন্য ৫১,৮২৯ টাকার টেন্ডার করা হয়েছে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, মাত্র দুই-তিন মাসের ব্যবধানে ওই তিনটি কাজই পেয়েছে একই ঠিকাদারি সংস্থা! ফলে মোট ২,৩৬,৩৩৯ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, এবং সেই কারণেই প্রধান মিরাজ মল্লিককে কাঠগড়ায় তুলেছেন স্থানীয়দের একাংশ।
বিষয়টি নিয়ে গলসি ১ নম্বর ব্লকের বিডিও জয়প্রকাশ মণ্ডল বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি নিয়ম মেনেই টেন্ডার করেছে এবং কাজও হয়েছে। তবে পঞ্চায়েত ওই রাস্তা সংস্কার করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখে বলতে পারব।”
ঠিকাদারি সংস্থার কর্ণধার সিতারাম গড়াই জানান, “কাজের বরাদ্দকৃত অর্থ এক লক্ষ টাকার বেশি হওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতি দুটি অফলাইন টেন্ডার করেছিল। সেই টাকাতেও রাস্তার সংস্কার সম্পূর্ণ না হওয়ায় পঞ্চায়েত আবার একটি টেন্ডার করে। তিনটি কাজই আমি করেছি। বিডিও এসে কাজ দেখে গেছেন, তারপরই আমি টাকাও পেয়েছি।”