মনসা মন্দির সংস্কারে অর্থ সাহায্য ফজিলার

আজিজুর রহমান, গলসি : সম্প্রীতির মেলবন্ধনে আরও একবার উদাহরণ তৈরি করলেন লোয়া রামগোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ফজিলা বেগম। গলসির বিরিংপুর গ্রামে অবস্থিত বহু পুরনো মনসা মন্দিরের সংস্কারে অর্থসাহায্য করলেন তিনি। ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে দায়িত্ব ও সহমর্মিতার বার্তা দিলেন ফজিলা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মনসা মন্দিরটি বহু পুরনো। বছরের পর বছর ধরে অবহেলায় পরে ছিল। যেকারনে মন্দিরটি ভগ্নপ্রায় হয়ে যায়। এমন সময় গ্রামবাসীরা সংস্কারের উদ্দ্যোগ নেন। প্রায় দুই মাস আগে শুরু হয় নির্মাণের কাজ। তবে কাজের মাঝপথেই অর্থসংকটে পড়ে যান তাঁরা। বাধ্য হয়েই স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ফজিলা বেগমের দ্বারস্থ হন গ্রামবাসীরা। সোমবার, গ্রামবাসীদের ডাকে সাড়া দিয়ে ফজিলা বেগম আসেন মন্দির প্রাঙ্গণে। এরপরই ত্রিশ হাজার টাকার একটি চেক গ্রামবাসীদের হাতে তুলে দেন। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতেও মন্দিরের সৌন্দর্যায়নে সাহায্যের আশ্বাস দেন তিনি। প্রধান ফজিলা বেগম বলেন, গ্রামবাসীরা যখন আমাকে অনুরোধ জানিয়েছিলেন, তখনই ঠিক করি পাশে দাঁড়াব। মন্দির সংস্কারের জন্য আমি আজ ত্রিশ হাজার টাকার সাহায্য দিলাম। আগামী দিনে আরও কিছু লাগলে সাধ্যমতো পাশে থাকব। আমি চাই এই এলাকায় হিন্দু-মুসলিম সবাই মিলেমিশে থাকুক। তাঁর এই উদ্যোগে খুশি গ্রামের মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দা প্রণব কুমার মণ্ডল জানান, আমরা নিজেরা মন্দির সংস্কারের কাজ শুরু করেছিলাম, কিন্তু টাকার অভাবে কাজ থেমে যায়। প্রধান ম্যাডামের ব্যক্তিগত সহযোগিতায় সেই কাজ আবার শুরু করতে পারব। আমরা কৃতজ্ঞ ফজিলা দেবীর কাছে। একইসঙ্গে, গ্রামেরই আর এক মহিলা আরতি সামন্ত বলেন, ফজিলা বেগম প্রধান হওয়ার পর থেকেই গ্রামে যে কোনও সমস্যা হলে তিনি পাশে থাকেন। এবারও তার অন্যথা হল না। আমরা খুবই খুশি হয়ছি তিনি পাশে থাকায়। এলাকার বাসিন্দা বদরুদ্দোজা মন্ডল জানান, একটি মুসলিম প্রধানের এই ভূমিকা শুধু একটি মন্দির সংস্কারের সহায়তা নয়, এটা একটি সমন্বয় তৈরি। ধর্ম ও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এই ছবি আমাদের বাংলার গর্ব।