মহা পঞ্চমীতে অসুর বধ হলো বর্ধমানের প্যান্ডেলে।

লুতুব আলি, বর্ধমান, ৮ অক্টোবর : মহা পঞ্চমীতে অসুর বধ হলো বর্ধমানের প্যান্ডেলে। আজ মহা পঞ্চমী। এই মহাপঞ্চমীর দিনে বর্ধমান শহরের বিভিন্ন পুজো প্যান্ডেলে ঝাঁপিয়ে বেড়ালেন জীবন্ত দুর্গা। পূর্ব বর্ধমানের বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বর্ধমান সদর প্যায়ারা নিউট্রিশন ওয়েলফেয়ার সোসাইটি র সৌজন্যে এই জীবন্ত ছবি দেখা গেল। সমাজ ব্যবস্থায় অসুরের দাপাদাপিতে মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে! দেবী দুর্গা যেমনভাবে অসুর কে বধ একই কায়দায় এদিন পাঁচজন আদিবাসী রমণী জ্যান্ত দূর্গা সেজে প্লাস্টিক ও পার্থেনিয়াম রুপি দূষণকারী অসুরদের বধ করে সমাজকে সচেতনতার বার্তা দেন। এদিন জানত মানুষরূপী দুর্গাদের দেখার জন্য বর্ধমান শহরে মানুষের ঢল নামে। এছাড়াও সোসাইটির উদ্যোগে এদিন রানীবাগান, মল্লিক পুকুর, কোড়াপাড়া বস্তি এলাকার ৭০ জন কর্মহীন, দুস্থ অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সমগ্র শহর জুড়ে বসে করে ঠাকুর দেখানো হলো। পারবিরহাটা ট্রাফিক পোস্ট এর কাছে অনুষ্ঠানের নান্দনিক শুভ উদ্বোধন করেন ট্রাফিক সার্জেন্ট। আলমগঞ্জ বারোয়ারি, কেশবগঞ্জ চটি, লালটু স্মৃতি সংঘ, সবুজ সংঘ, পদ্মশ্রী, গোর দৌড় চটি দুর্গা মন্ডপ পরিক্রমা করা হয়। অপসটি অসুর বধ করার জন্য সকলের হাতে তুলে দেয়া হয় ৫০০ গ্রাম সোয়াবিন, ১.৫ লিটার সরষের তেল, ৫০০ গ্রাম ছাতু, ৪০০ গ্রাম সুজি, ১০০ গ্রাম আমুল দুধ ও ৫০০ গ্রাম করে মুড়ি। মধ্যান্য ভজন এর মেনুতে ছিল বেগুনি, ভাত, ডাল, পোস্ত, সবজির তরকারি, মাংস, মাছ, পনির, চাটনি, পাঁপড়, সুস্বাদু মিষ্টি। এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা জানান, এমন আনন্দ যজ্ঞে অংশ নিতে পেরে তারা বেজায় খুশি, ফুগনিদেবী, বিজলী কর্মকার, রুমা ক্ষেত্রপাল রা বলেন, এমন আনন্দ সহকারে, হইহই করে ঠাকুর প্রদর্শন জীবনে এই প্রথম সম্ভব হলো। সোসাইটির সম্পাদক প্রলয় মজুমদার বলেন, মা দুর্গার অপর নাম হল পুষ্টি। পুষ্টি শুধুমাত্র দেহের নয়, পোস্টটি মনেরও এবং WHO ২০০০ সাল থেকে যে আধ্যাত্মিক সুস্থতার কথা বলেছেন সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে প্রত্যেক বছর পুজোর সময় সোসাইটির তরফ থেকে এমন আনন্দ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে মানুষের দৈহিক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার রাস্তাতেও নিয়ে আসা যায়। উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খন্ড শাখার সদস্য জনক কুমার, পূর্ব মেদিনীপুর শাখার সদস্য সুকান্ত ভূঁইয়া, প্রত্যাশা মজুমদার, সুদীপ মন্ডল, ঐন্দ্রিলা সাধুখাঁ, প্রীতম ঘোষ, নার্গিস লায়েক, মনীষা মন্ডল, শিল্পা অধিকারী, অয়ন মাঝি, স্নিগ্ধ দাস, স্বর্ণশ্রী চ্যাটার্জি সহ সংস্থার অন্যান্য সদস্য সদস্যরা। সোসাইটির মিডিয়া অফিসার অঙ্কিতা সাম বলেন সোসাইটির পক্ষ থেকে এদিনের এই বর্ণময়ী অনুষ্ঠানে মানুষের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। অনুষ্ঠানের শেষে জীবন্ত দূর্গাদলের প্রতিটি সদস্যকে পাঁচশত টাকা করে এবং সেরা অবদানকারী কে এক হাজার টাকা উপহারস্বরূপ দেওয়া হয়।