|
---|
লালমিয়া মোল্লা : কিংবদন্তি তুল্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধানসভার সদস্য ও মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নিজ বাসস্থান দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামে প্রয়াত হয়েছেন। মৃত্যু কালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ হয়ে গ্রামের বাড়িতেই ছিলেন। রেখে গেলেন স্ত্রী ও দুই পুত্রকে। তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেজ্জাক মোল্লাকে তাঁর সহকর্মী ও অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং ভূমি সংস্কারে তাঁর অবদান উল্লেখ করে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন। এছাড়া রাজ্য সরকার রেজ্জাক মোল্লার মৃত্যুতে অর্ধ দিবস ছুটি ঘোষণা করেছে।
কলেজ-পড়ুয়া রেজ্জাক কলকাতার বেকার হস্টেলে থাকাকালীন বাম রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হন। তারপর কলেজ শেষ করে কৃষক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সরাসরি সিপিআইএম দলের সদস্যপদ লাভ করেন এবং দ্রুত দলের মধ্যে নিজেকে নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন।
রেজ্জাক মোল্লা ১৯৭৭ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র থেকে টানা পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য ছিলেন। বাম আমলে প্রথম সুন্দরবন উন্নয়ন, হর্টি কালচার ও খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণ এবং পরে গুরুত্বপূর্ন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।
পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সময় শেষ দিকে তাঁর সাথে নীতিগত বিরোধ দেখা দেয়। এই সময় তিনি প্রকাশ্যে দলীয় কার্যকলাপ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ সহ ও মুখ্যমন্ত্রীর সমালোচনা শুরু করেন। ফলে পার্টি ২০১৪ সালে তাঁকে দলবিরোধী আচরণের জন্য দল থেকে বহিষ্কার করে। এরপর ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টিতে যোগদান করেন। কিন্তু সেখানেও বেশিদিন থাকতে পারেননি। অবশেষে ২০১৬ সালে তৃণমূলে যোগদান করেন এবং ভাঙড় থেকে নির্বাচনে জিতে মন্ত্রী হন। কিন্তু এখানেও তিনি তৃণমূলের ক্রিয়াকর্ম ও নীতির সাথে বেশিদিন আপস করতে পারেননি। সে কারণে তিনি নিজেকে পুরোপুরি রাজনীতি থেকে গুটিয়ে নেন। শেষে বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় একেবারে গৃহবন্দী ছিলেন।