মাটির সরার ওপর সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছবি এঁকে সম্মান রাজনগরের ছাত্রের

 

     

     

    খান আরশাদ, বীরভূম:

    মাটির সরার ওপর প্রতিকৃতি এঁকে সমস্ত শিক্ষকদের হাতে তুলে দিয়ে সম্মান জানাল রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র।
    শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের উপহার তুলে দিয়ে থাকে ছাত্র ছাত্রীরা। সাধারণতো বাজার থেকে কেনা বই, পেন, ফুলদানি, ঘড়ি থেকে শুরু করে ঘর সাজানো বিভিন্ন জিনিস প্রিয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের হাতে তুলে দিয়ে প্রণাম জানিয়ে পড়ুয়ারা সম্মান জানায়। শিক্ষক শিক্ষিকারাও তাঁদের প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাণ ভরে আশীর্বাদ করেন।
    কিন্তু বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্র অর্পণ এক অভিনব উপহার দিয়ে তার শিক্ষাগুরুদের সম্মান জানালো।
    বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র এক একটা মাটির সরার ওপর এক একজন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতিকৃতি এঁকে তাঁদের উপহার দিয়ে সম্মান জানালো।
    রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র অর্পণ লোহার গত দুই বছর আগে থেকেই ভেবে রেখেছিল শিক্ষক দিবস উপলক্ষে তার শিক্ষাগুরুদের নতুন কিছু উপহার দিয়ে সম্মান জানাবে। অর্পনের বাবা মৃত্যুঞ্জয় লোহার বিভিন্ন জায়গায় দেওয়ালে ছবি আঁকার কাজ করে থাকেন।পাশাপাশি তিনি একজন গৃহ শিক্ষকও।
    অর্পণ তার নিজের শিল্পকর্মকে তার শিক্ষা গুরুদের কাছে মেলে ধরতে তাদেরই প্রতিকৃতি উপহার দিয়ে আশীর্বাদ গ্রহণ করার ইচ্ছা পোষণ করে তার বাবার কাছে। তার বাবাও এতে সায় দিয়ে তাকে উৎসাহ দেন। অর্পণ স্থির করে এক একটি মাটির সরার মধ্যে একেক জন শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছবি এঁকে তাদের প্রত্যেককে উপহার দেবে।
    এরপর অর্পণ প্রায় দেড় মাসের চেষ্টায় মাটির সরার মধ্যে তার প্রায় সব শিক্ষক শিক্ষিকাদের ছবি এঁকে ফেলে।
    শনিবার রাজনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ উপস্থিত সমস্ত শিক্ষক শিক্ষিকাদের হাতে তার এই শিল্প কর্মটি উপহারস্বরূপ তুলে দেয়।
    অর্পনের হাতে আঁকা ভক্তি শ্রদ্ধা মিশ্রিত এই উপহার পেয়ে খুশিতে আত্মহারা সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকারা।
    প্রধান শিক্ষক কৌশিক দত্ত, সহ-শিক্ষক দিব্যেন্দু চ্যাটার্জী, শিক্ষিকা নবনীতা দাস, মোনালিসা ধারা বলেন অর্পনের হাতে আঁকা তাঁদের এই প্রতিকৃতি উপহার পেয়ে খুবই খুশি।বাবার কাছে ছোটবেলা থেকেই আঁকা শুরু করে অর্পণ। এরপর থেকে বাবার পাশাপাশি নিজেও আঁকার কাজ চালিয়ে যায়।
    শিক্ষক জীবনে অনেক কিছুই তাঁরা উপহার পেয়েছেন, কিন্তু অর্পণের এই উপহারের মধ্যে তার পরিশ্রমের সাথে সাথে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রতি ভক্তি শ্রদ্ধা মিশিয়ে রয়েছে। এই উপহার তাঁদের কাছে এখনো পর্যন্ত সেরা উপহার। প্রতিটি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একেবারে হুবহু ছবি তার তুলির মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। অর্পণ নিজেও খুবই খুশি তার শিক্ষাগুরুদের এই দেড় মাসের পরিশ্রমের ফল উপহার দিতে।
    প্রধান শিক্ষক কৌশিক দত্ত অর্পণ ও তার বাবার হাতে মিষ্টির প্যাকেট তুলে দিয়ে তাদেরকেও শুভেচ্ছা জানান।