শহীদ সেনা জওয়ানকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজারো মানুষের ঢল

 

    খান আরশাদ, বীরভূম :
    কাশ্মীরে শহীদ সেনা জওয়ানকে চোখের জলে বিদায় দিলেন বীরভূমবাসী। বীরভূমের রাজনগরে রাজনগর ব্লকের ভবানীপুর অঞ্চলের কুন্ডীরা গ্রামের সুজয় ঘোষ(২৭) ২০১৮ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। গত দেড় বছর ধরে কাশ্মীরে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন সুজয়। জঙ্গি দমনে সেনাবাহিনীর বিশেষ অভিযানে বেরিয়ে অনন্ত নাগে তুষার ঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন কর্তব্যরত দুই সেনা জওয়ান মুর্শিদাবাদ জেলার পলাশ ঘোষ ও বীরভূমের সুজয় ঘোষ। বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদ সেনা জওয়ানের নিথর দেহ উদ্ধার হলেও তখন পর্যন্ত বীরভূমের সুজয় ঘোষের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এরপর শুক্রবার দুপুর নাগাদ রাজনগর ব্লকের কুন্ডিরা গ্রামের বাড়িতে সুজয়ের আহত হওয়ার খবর আসে। পরে সুজয় ঘোষের শহীদ হওয়ার খবর আসে। পুরো রাজনগর সহ বীরভূমবাসী শোকে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে এই খবর শোনামাত্র। সেনা জওয়ানের পরিবার সূত্রে জানা যায় দুর্গাপূজায় ছুটি না পেয়ে কালী পূজাতে বাড়ীতে আসার কথা ছিল। পরিবারের লোকজন সহ গ্রামবাসী আশায় আশায় দিন গুণ ছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাস কালীপুজোর আগেই বাড়ি ফিরলেন তবে কফিনবন্দি হয়ে। শহীদ সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই ছেলের ছবি বুকের জড়িয়ে ধরে একনাগারে কেঁদেই চলেছেন বীর শহীদ সেনা জওয়ানের মা। চোখের জল মুছতে মুছতে প্রহর গুনছেন মৃত সেনার বাবা, দাদা, দাদু, ভাই বন্ধুরা। কাঁদছে সমগ্র গ্রামের মানুষজন। শনিবার বিকেলে
    শহীদ সুজয় ঘোষকে চোখের জলে শেষ বিদায় জানালেন রাজনগরবাসী। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাজনগরের কুন্ডিরা গ্রামে শহীদ সুজয় ঘোষের শবদেহ আনতেই চোখের জলে ভাসে আত্মীয় পরিজন সহ গ্রামবাসীরা। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে হাজার হাজার মানুষ উপস্থিত হন রাজনগরের ভবানীপুর অঞ্চলের কুন্ডিরা গ্রামে। কফিনে তেরঙ্গা পতাকা দিয়ে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। শেষ শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত ছিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখ, জেলাশাসক বিধান রায়, সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক বিকাশ রায় চৌধুরী, দুবরাজপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক অনুপ সাহা, প্রদেশ কংগ্রেস সম্পাদক সঞ্জয় অধিকারী, বিজেপি ব্লক সভাপতি ধ্রুব সাহা, রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত-কর্মাধক্ষ সুকুমার সাধু, বিডিও শুভাশিস চক্রবর্তী সহ অগণিত রাজনৈতিক অরাজনৈতিক মানুষ। সকলেই শহীদের পরিবারকে সমবেদনা জানান। শহীদ সুজয়কে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর পর বক্রেশ্বর মহাশ্মশানে গান স্যালুট জানিয়ে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়।