পূজায় পথশিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে শুরু হল বারুইপুরের “রূপকথার” বিশেষ কর্মসূচি।।

নিজস্ব সংবাদদাতা, বারুইপুর: টানা এক বছর পর উমা আসবে বাপের বাড়ি । শরতের আকাশে পেজা তুলোর মতো নীল মেঘ আর বসুন্ধরার বুকে মাথা দুলিয়ে কাশ ফুলের দল সঙ্গে মহালয়ার ভোরে সেই বার্তা ভেসে এলে বাঁধ ভাঙা আনন্দের জোয়ারে মেতে ওঠে আপামোর বাঙালি । মণ্ডপে মণ্ডপে আলোর রোশনাই এ নতুন নতুন পোষকে অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠে আবালবৃদ্ধবনিতা । কিন্তু তাদের কথা কেউ মনে করেনা । এই সমাজে তারা ব্রাত্য । কেউ খোঁজ নেয়না ইঁটভাটার মধ্যে বড় হওয়া কচিকাচাদের । খোঁজ নেয়না স্টেশনে , বাজারে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটানো পথশিশুদের আর প্রত্যন্ত গ্রামের হত দরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের । সমাজের বুকে যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা এদের জন্য আজ থেকে দশ বছর আগে তাই এক নতুন ভাবনার জন্ম হয়েছিল ” রূপকথা “র । না , কোনো এন.জি.ও নয় । দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর এর গুটিকয় শিক্ষিত যুবক তিল তিল করে গড়ে তোলে ” রূপকথা ” নামে এই সংগঠন । জন্মলগ্নেই সেদিন শপথ নেয় যে , বছরের বিশেষ বিশেষ সময় যে ভাবেই হোক পাশে দাঁড়াতে হবে তাদের যারা সমাজের অনেক কিছু থেকে আজও বঞ্চিত । আর সেইথেকেই শুরু পথচলা বারুইপুর এর ” রূপকথার “। প্রতিবছরের মত এবছরও পথশিশু , দরিদ্র পরিবারের শিশুদের ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের পূজোয় নতুন বস্ত্র দেওয়ার কর্মসূচি নিয়েছে রূপকথার সদস্যরা । মহালয়ার দিন ভোর থেকে শিয়ালদহ স্টেশনে রাত কাটানো অসহায় শিশু ও দরিদ্র মানুষদের বস্ত্র বিতরনের মাধ্যমে এই কর্মসূচি শুরু হয় । চলবে গোটা সপ্তাহ সপ্তমী পর্যন্ত । বিভিন্ন রেলস্টেশন , ইঁটভাটা থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত গ্রামের অসহায় মানুষের কাছে এই ভাবেই পৌঁছতে চায় রূপকথা । বারুইপুর এর হাটা গ্রামের দরিদ্র পরিবারের প্রায় একশ শিশুকে নতুন পোশাক তুলে দেওয়া হয় রবিবার । এই গ্রামেতে মূলত গরিব ভাগচাষী মানুষের বাস, নতুন জামা কাপড় পেয়ে বাচ্চাদের নিষ্পাপ মুখ গুলিতে ফুটে ওঠে অনাবিল খুশির আনন্দ । সোমবার সকাল থেকে দমদম স্টেশন ও বারুইপুর এর একটি ইঁটভাটাতে ছোট ছোট শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া হয় নতুন পোশাক । রূপকথার অন্যতম সদস্য বিশ্বজিৎ পাল জানান তাদের লক্ষ্য সুন্দর ও স্বচেতন সমাজ গঠন । যেখানে থাকবে বিশ্বাস , শ্রদ্ধা ভালোবাসা । আর সমাজের প্রতিটি মানুষ প্রতিটি মানুষের সুখে দুঃখে পাশে থাকবে । মানুষের মধ্যে সেই জাগরণ আনতেই এই কর্মযজ্ঞে সামিল হয়েছে ” রূপকথা ” ।