|
---|
বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা : একবিংশ শতাব্দীতে মানবজাতি যন্ত্রযানে রূপায়িত হতে চলেছে। একদা শীত, গ্রীষ্ম,বর্ষা গরু ও মহিষের লাঙ্গলে চাষীর এক মাত্র ভরসা, আজ তা দেখা মেলা ভার । দুইটি গৃহপালিত সমগোত্রীয় পশু কে নিয়ে, সাথে লাঙ্গল,জোয়াল, দড়ি দিয়ে তৈরি করা হতো হাল। আউশ, আমন, বোরো চাষে কিম্বা খরিফ মরশুমে মাঠে চাষ করে সোনার ফসল ফলানোর ব্যবস্থা করতেন চাষীরা। বর্তমানে মাঠে আর দেখা মিলছেনা পল্লীর সেই চিত্র। এখন মাঠে দেখা মিলছে যন্ত্র চালিত টাক্টর কিংবা পাওয়ার টিলার । জমিতে আর দেখা মিলছেনা গোবর,বিষ্ঠা, জৈব সার। রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে ক্রমশই বাড়ছে রোগ পোকার উপদ্রব । দিনের পর দিন মাটির উর্বরতা শক্তি কমে যাচ্ছে। ঐ সমস্ত ফসল প্রতিনিয়ত আহারের ফলে মানব শরিরে বাধচ্ছে রোগের বাসা। আগের দিনে অসুখ বিসুখ হলে জরিবুটি সেবনে তা সেরে যেত। বর্তমানে খেতে হচ্ছে মুঠো মুঠো ঔষধ। সরকারের উদ্যোগে রাসায়নিক সার বর্জন করে জৈব সারের উপরে ভরসা করলে আগামী প্রজন্ম সুস্থ ও সুরক্ষিত হলেও হতে পারে এমনই ধারণা পরিবেশবিদের। বর্তমানে বাড়ছে রোগ ও রোগীর সংখ্যা, নিত্যনূতন অসুখ। চিকিৎসক এই মুহূর্তে নাজেহাল । মান্ধাতা আমলের চাষ-গরু কিংবা মহিষ দিয়ে চাষ দেখা মিলছে না । বিলুপ্তির পথে বাবা ঠাকুরদার প্রথা। এই মুহূর্তে দেখা মিলছে ট্রাক্টর কিংবা পাওয়ার টিলার। দিনের-পর-দিন জমির উর্বরা শক্তি কমার কারণ হিসেবে দেখছে এই ধরণের চাষে সাধারণ মানুষজন। অপরদিকে অধিক মাত্রায় জৈব সার প্রয়োগে জমির উর্বর শক্তি বৃদ্ধি পাবে। অধিকমাত্রায় রাসায়নিক সার প্রয়োগ, যার ফলস্বরুপ সমস্ত শাকসবজি ফলমূল খেয়ে মানুষ শরীরে বাসা বাঁধছে মরণব্যাধি। সাধারণ মানুষ পড়ছে বিপদে। আগামী দিনের মতো ফিরবে সেই পুরানো মান্ধাতার আমলের গরু-মহিষের হাল দিয়ে চাষে ঘরে আসবে অধিক পরিমানে সোনার ফসল । এ সময়ে পরিশ্রমের ফল স্বরূপ চাষি পাচ্ছে না তার ন্যায্য মূল্য। অপরদিকে যন্ত্র চালিত যান যেভাবে দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে তাতেই সাধারন খেটে খাওয়া মানুষের রুজি-রুটির টান পড়তে শুরু করেছে । এমনি চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে কৃষকের ঘরে মিলবে না আর দানা শস্য ।