মেমারির অরুন কান্তি পাল পাঁচ দশক ধরে গ্রামে গ্রামে সাইকেলে ঘুরে তবলায় প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন।

লুতুব আলি : তবলায় নিবেদিতপ্রাণ মেমারির অরুন কান্তি পাল পাঁচ দশক ধরে গ্রামে গ্রামসা ইকেলে ঘুরে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। স্কুল বেলায় অরুণকান্তির পড়াশোনায় তো তেমন মনোযোগ ছিল না। অরুণ বাবুর জন্ম ১৯৫৯ সালে। অরুণকান্তি পিতা দুর্গাপদ পাল একজন জাতীয় শিক্ষক ছিলেন। বাবা চেয়ে ছিলেন তরুণ কান্তি হয়তো একজন শিক্ষক হবেন। সত্তরের দশকে মান্নাদের বেতারের গান শুনে ওর মনটা উড়ু উড়ু হয়ে যায়। সংগীতের প্রতি আকৃষ্ট হয়েও গান আর তার শেখা হলো না। অরুণ বাবুরবাড়ি মেমারির উপকণ্ঠে গন্তার গ্রামে। কৈশোর অবস্থায় একজন ভালো ফুটবলার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। ফুট বল ও আর খেলা হলো না। বিদ্যালয় থেকে পালিয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতে যেতেন। শ্রী হরি পুরের বিনয় কৃষ্ণ ঘোষ ও জুরানপুর এর ননীগোপাল কোলের কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে তিনি তবলা শেখেন। ১৯৮০ সালে কলকাতায় পন্ডিত সুজিত সাহার কাছে তিনি তবলা শেখেন। ১৯৮১ সালে হুগলিতে তবলার কম্পিটিশনে অরুণকান্তি প্রথম স্থান লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে দূরদর্শন এ সুযোগ পান। ২০১৬ সালে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড কালচার ফেস্টিভ্যালে যোগদান করেন। ওস্তাদ মইনুদ্দিন খাঁ, পন্ডিত শম্ভুনাথ বাগ, চন্দননগরের বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী পন্ডিত নলিনী চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি নিয়মিত বাজাতেন। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির বাড়িতে আমন্ত্রিত হয়ে অরুণ বাবু তিনবার গিয়েছিলেন। তারপর আর অরুণ বাবু কে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। গ্রামের প্রতি অরুণ বাবুর অসীম থাকায় কলকাতার মায়া ত্যাগ করে তিনি গ্রামে ফিরে আসেন। প্রায় পাঁচ দশক ধরে তিনি সাইকেলে করে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ছেলেমেয়েদের প্রায় বিনা পারিশ্রমিকে এ তবলার প্রতি তিনি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছেন। অরুণ বাবু ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে তবলা লহরার সমবেত গ্রুপ তৈরি করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি এক ঘরানার তৈরি করেছেন।