|
---|
আজিজুর রহমান,গলসি : গুসকরা-বর্ধমান ভায়া অভিরামপুর বাসে চড়ে গলসিতে মাধ্যমিকের ইংরাজী পরীক্ষা দিতে আসছিলেন ৩২ জন পরীক্ষার্থী। পরীক্ষা কেন্দ্রের আট-দশ কিলোমিটার দূরে বনসুজাপুর রেলগেটের ওপারে আচমকা খারাপ হয়ে যায় যাত্রীবাহী বাসটি। চিন্তায় পড়ে পরীক্ষার্থীরা হাঁটতে শুরু করেন।
এলাকার ভিলেজ পুলিশ সৌভিক সামের মাধ্যমে খবর পান গলসি থানার ওসি অরুণ কুমার সোম। কালবিলম্ব না করে তিনি পাঁচ-ছয়টি গাড়ি নিয়ে বনসুজাপুর রেলগেটে পৌঁছান। পুলিশ গাড়ির ফোর্স নামিয়ে দ্রুত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। পরীক্ষা শুরুর আগেই ৩২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে সক্ষম হন। ওসির এমন মানবিক কাজের প্রশংসা করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী সমরেশ ঠাকুর ও রাজীব রায়।
সমরেশ বলেন, “সময়মতো ওসি ও থানার গাড়ি না এলে পরীক্ষার্থীরা যথাসময়ে কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারত না। এমন কাজের মধ্য দিয়ে তিনি দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। পুলিশের এমন মানবিক রূপ দেখে আমরা খুশি।”
রাজীব রায় বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ছাড়াও যে পুলিশ আরও অনেক কাজ করে, তা আমরা অরুণবাবুর কাজে দেখলাম। ওনাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
এদিকে, পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসার পর ওসি জানতে পারেন গলিগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে ছয় জন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী দীর্ঘক্ষণ বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে গলিগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছান এবং ছয় পরীক্ষার্থীকে নিজের গাড়িতে করে গলসি উচ্চ বিদ্যালয় ও কালিমতীদেবী উচ্চ বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেন।
পরীক্ষার্থী সাথী ঘোষ জানান, “রাস্তায় কাজ চলার কারণে বাস আসতে দেরি হচ্ছিল। খুব চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। যথাসময়ে ওসি স্যার না আসলে আমরা ছয় পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে পারতাম না। ফলে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারতাম না। এতে আমাদের বড় ক্ষতি হতো। উনি আমাদের কাছে দেবতার মতো এসে সহযোগিতা করেছেন।”
আর এক পরীক্ষার্থী উর্মিলা বাগদি জানান, “ওসিকে কেউ ফোন করে জানিয়েছিল। তারপরই থানার গাড়ি নিয়ে তিনি আসেন এবং আমাদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেন। উনি খুব ভালো মানুষ। আমাদেরকে নিজের ফোন নম্বরও দিয়েছেন এবং বলেছেন, যে কোনো সমস্যায় ফোন করতে।”সহযোগিতার জন্য ওসিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন উর্মিলা ও অন্যান্য পরীক্ষার্থীরা।