সুন্দরবন জঙ্গলের বাঘ লোকালয়ে চলে আসার কারণ ও তার প্রতিকার

হাসান লস্কর, কুলতলী দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, শীত পড়লেই জঙ্গলের বাঘ চলে আসে লোকালয়ে আর এমনই কানা ঘুষো শোনা যায় কেবলমাত্র শীতকালেই। প্রতিনিয়ত মৎস্যজীবীরা জীবন জীবিকার সন্ধানে তারা নদীতে মাছ কাঁকড়া ধরতে যাওয়ায়- বাড়ি সংলগ্ন জঙ্গল হয়ে নদী খাঁড়ি পার হয়ে গভীর জঙ্গল সংলগ্ন নদীতে । আর এই সমস্ত মৎস্যজীবীদের যাওয়া আসার পথে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগারের গন্ধ ও পায় তারা, শুধু গন্ধ বললেই ভুল হবে বাঘের পায়ের পাক মার্ক দেখেই তারা অনুমান করতে পারে বাঘ এর গতিবিধিও । কোন দিকে তার অবস্থান, লোকালয়ের দিকে না গভীর জঙ্গলের দিকে। শীতকাল এলে সন্ধ্যা ও সকালে কুয়াশায় এদের পারাপারে বিশেষ সুবিধা ও হয়। এই সময়ে সমস্ত বন্য জীবজন্তুর দেখা মেলে লোকালয়ের আসে পাশে শুকর হরিণ সহ একাধিক বন্যপ্রাণী, তারা সাজ সব্জি ফল মূল ও তার সাথে পাকা ধান খেতে ভালোবাসে,সেই জন্য ছুটে আসছে লোকালয়ে। আর তাদের পিছে পিছে বাঘ মামা ও আসতে দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে বনদপ্তরের প্রতিদিনের রুটিন মাফিক তদারকি।জঙ্গল সংলগ্ন মানুষদের জঙ্গলকে টিকিয়ে রাখার যে ভাবনা এলাকার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের এবং একাধিক আধিকারিকদের জঙ্গল না কাটার সুফল বিষয়ে পরামর্শ দেওয়ায় এই মুহূর্তে গ্রাম সংলগ্ন ভেড়িতে গভীর অরণ্যের ও সৃষ্টি হওয়ার কারণ এমনই মত পোষণ করেছেন দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের জীব বৈচিত্র্য নিয়ে একাধিক গ্রন্থপ্রণেতা শেখ শামসুদ্দিন গবেষক উদ্যালক পাবলো সুন্দরবনের পর্যটন ব্যবসায়ী সুমিত ঘোষ অপ্রতীম সিনহা ভূগোলের শিক্ষক উমাশঙ্কর মন্ডলের।তাদের কথায় গ্রাম সংলগ্ন গভীর জঙ্গল সৃষ্টি হওয়ায় দিকভ্রষ্ট হয়ে জঙ্গল সংলগ্ন গ্রামে আসার প্রবণতা বাড়ছে এই সমস্ত বন্যপ্রাণীদের। যেমন কুলতলীর গৌড়ের চক দেউলবাড়ির পেটকুল চাঁদ মধ্য গুড়গুড়িয়া বৈকুন্ঠপুর বোসের চকে।

    বাসন্তীর গোসাবা ব্লকের লাহিড়িপুর,চরঘেরি, পরশমনি মিত্র বাড়ি ছোট মোল্লাখালি কুমিরমারীর বাগনা এলাকায় সহ একাধিক এলাকায়। প্রতিনিয়ত বনকর্মীদের নজরদারি।
    ম্যানগ্রোভ রোপণ ও পরিচর্যা বিষয়ে মানুষের সম্মুখ ধারণা দেওয়ার কারণে।
    ম্যানগ্রোভ এর উপকারিতা ম্যানগ্রোভ না থাকলে পরিবেশ এর উপরে কতটা ক্ষতি, তার সচেতনতা বৃদ্ধি করার কারণেই।
    মুক্ত অক্সিজেন সেবন করতে ম্যানগ্রোভের পরিচর্যা রাখা দায়িত্ব ও কর্তব্য আমাদের।
    ম্যানগ্রোভ যেমন নদী বাঁধ রক্ষা করে তেমনি গৃহপালিত পশু ও শুকনো জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা সহজলভ্য। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা বন দপ্তরের শতাধিক কিলোমিটার লাইলনের ফ্রেন্ডশিপ নেট দিয়ে ঘেরা আছে। যাতে লোকালয়ে বাঘ না আসতে পারে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বন দপ্তরের ৭৪ কিলোমিটার তার মধ্যে রায়দিঘি রেঞ্জ এর এরিয়া ৪৭ কিলোমিটার কুলতলীর ২৬’৪৩, কিলোমিটার, রামগঙ্গার ১৮ কিলোমিটার, মাতলা রেঞ্জের আট। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা বন আধিকারিক নিশা গোস্বামী ও মিলন মন্ডলের কথায় উঠে এলো বাঘ আমাদের যেমন জাতীয় পশু তেমনি সুন্দরবনে বাঘের দর্শন পর্যটকদের ও আকর্ষণ বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে লোকালয়ে বা গেলে খবর পাওয়ার সাথে সাথে এলাকায় ফ্রেন্ডশিপ নেট দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় এবং কুইক রেসপন্স টিমের সদস্যদের নিয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা জঙ্গলের সারচিং করে বাঘকে তার ডেরায় ফিরিয়ে দেয়া হয় যাতে বাঘ না আর আসতে পারে গ্রামে। এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে বনদপ্তর সর্বদা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করছেন।