ভাবাদিঘীতে বৃক্ষরোপন উৎসব

সেখ আব্দুল আজিম, গোঘাট, হুগলি : ভাবাদিঘীর মানুষের ভাবাদিঘী বাঁচানোর আন্দোলন গতি পেল পরিবেশ রক্ষার লক্ষে বৃক্ষরোপণ উৎসবের মধ্যে দিয়ে। দুর্গা পুজোর ষষ্ঠীর দিন সকাল থেকে আবেগ ও উদ্দিপনায় রোপিত হল দিশী বৃক্ষ। এখানে আগে অনেক বৃক্ষ থাকলেও, সরকার তা কেটে পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর ইউক্যালিপটাস গাছ বসিয়ে দেয়। ফলে গাছে পাখির সংখ্যা কমে। নষ্ট বাঁচবে দিঘীর উপর নির্ভরশীল ২৭১টি প্রান্তিক পরিবার। মাছ চাষই যাঁদের অন্যতম জীবিকা। ঐ প্রান্তিক পরিবারগুলিও একান্ত ভাবেই পরিবেশের উপরই নির্ভরশীল। তাই পরিবেশ রক্ষার তাগিদে তাঁরা চাইছেন ৫২ বিঘার জলাশয় ও তার বাস্তুতন্ত্রকে রক্ষা করতে। গত দশ বছর ধরে “ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটি” এই উদ্দেশ্যে আন্দোলন সংগঠিত করছে। প্রশাসন, রেল কর্তৃপক্ষ, আদালত সকলের কাছে দিঘিটি বাঁচিয়ে রেলপথ করার আবেদন করেছে। কিন্তু রেল অনড়, দিঘী বুজিয়ে রেলপথ পাতার লক্ষে। বাধ্য হয়ে মানুষ আন্দোলনে নামে, রেলের কাজ বন্ধ করে দেয়। থমকে যায় লাইন সম্প্রসারণের কাজ। আন্দোলনের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে নানা গণসংগঠন। গড়ে উঠেছে ভাবাদিঘী বাঁচাও সহযোগী মঞ্চ। মঞ্চে পরিবেশ সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, স্বাস্থ্য সংগঠনসহ বহু সংগঠন। দিঘী রক্ষার আন্দোলন সফল করতে ৯ অক্টোবর ২০২৪ সকাল ১০টা থেকে দিঘী ঘিরে আয়োজন করা হয়েছিল বৃক্ষ রোপন উৎসবের। শারদ উৎসবের পাশাপাশি প্রকৃতির উৎসবে গ্রামের মানুষ সকলকে সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। বৃক্ষ রোপনের পাশাপাশি সকলের জন্য সামান্য খিচুড়ির আয়োজনও করেন ওঁরা। এই আয়োজনে সর্বতো ভাবে সামিল হয়েছে ভাবাদিঘী বাঁচাও সহযোগী মঞ্চ।

    আজ সকাল দশটা নাগাদ গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দাদের দিয়ে শুরু হয় বৃক্ষ রোপন উৎসব।
    মঞ্চের অন্যতম সদস্য গৌতম সরকারের বক্তব্য, সকলের কাছে অনুরোধ, সবাই এগিয়ে আসুন। সকলের সক্রিয় সহযোগিতায় রেল চলুক, দিঘী বাঁচুক। ভাবাদিঘী বাঁচাও কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, আজ ভাবাদিঘীর বাইরের মানুষও ভাবাদিঘী নিয়ে ভাবছেন, তাঁরা এসেছেন, বৃক্ষ রোপনে অংশ নিয়েছেন। যা আমাদের বাড়তি সাহস ও শক্তি যোগাচ্ছে। বৃক্ষ রোপনে অংশগ্রহণকারী পরিবেশ কর্মী সেখ মাবুদ আলি বলেন, আমরা সর্বতোভাবে দিঘীর পাশে আছি। স্বাস্থ্যকর্মী সব্যসাচী রায় বলেন সুস্থ পৃথিবীই সুস্থ মানুষ গড়তে পারে। আমরা চাই প্রকৃতি বাঁচুক, রেলও চলুক।