|
---|
সেখ আব্দুল আজিম, হুগলী : পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সাম্প্রতিক এস ও পি বিষয়ে চন্দননগরে মেয়রকে চিঠি দিল আশ্রয় হোম এন্ড হসপিটাল ফর এ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ার এ্যাসোসিয়েশন নামক পশু প্রেমী সংগঠন। ঐ সংগঠনের বক্তব্য,প্রায় পাঁচ হাজার বছর যাবৎ মানুষের সঙ্গে কুকুরের সহাবস্থান। সেই প্রাচীনকাল থেকেই কুকুর মানুষের পরম বন্ধুুও বটে। মহাকাব্যের অন্যতম নায়ক যুধিষ্ঠিরও কুকুরকে রেখে স্বর্গবাস অস্বীকার করেন। তেমনই কুকুরেরও মানুষকে ভালবাসার অসংখ্য নজির আছে। কিন্তু মানুষ পশুর সংঘাতের নজিরও কম নেই। প্রায়শই দেখা যায় পথকুকুরদের উপর নির্যাতনের ঘটনাও। পিটিয়ে মারা, বিষ দিয়ে কুকুর মারার ঘটনাও আকছার ঘটে। সকলেই পশুপক্ষী ভালবাসবেন তেমনটা হয়তো হবে না কিন্তু পশু নির্যাতন করার অধিকার কারো থাকার কথা নয়। আবার নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সদিচ্ছার অভাবও প্রশাসনের লক্ষ্য করা যায়। এই প্রেক্ষিতে নগরোন্নয়ন দফতরের এস ও পির নির্দেশিকা একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত। তা দ্রুত রূপায়ণও জরুরি। কিন্তু তা বাস্তব সম্মত না হলে এস ও পি কোনো কাজে আসবে না।
সংবাদ মাধ্যম থেকে আমরা জানতে পারি , পৌরনিগম একটি বা কয়েকটি স্থান নির্বাচন করে দেবে, এবং পথকুকুরদের সেই নির্বাচিত স্থানেই খেতে দেওয়া যাবে। এই বিষয়টি অনভিজ্ঞতা প্রসূত বলেই মনে হয়। কেননা এটা সর্বজনবিদিত পথকুকুরের নির্দিষ্ট এলাকা থাকে, তার বাইরে ওরা কখনও যাবে না।খাবার দিলেও যাবে না। গেলেও সেই এলাকার পথকুকুররা ওদের খেতে দেবে না, উল্টে সংঘাত বাধবে। আবার অন্য দিকে যেখানে ওরা খেয়ে অভ্যস্ত সেখানে খাবার দেওয়া না হলে ওরা খেতে পাবে না, ফলে ক্ষিপ্ত হবে। মানুষকে আক্রমণ করাও অস্বাভাবিক হবে না। ফলে উত্তরোত্তর মানুষ-পশু সংঘাত বাড়বে। দ্বিতীয়ত খাবারের যে সময়সূচি বাঁধা হয়েছে তাও বিজ্ঞানসম্মত নয়, সকাল সাতটার আগে এবং সন্ধ্যা সাতটা থেকে ন’টা খাবার দেওয়া হলে সারাদিন পশুরা অভুক্ত থাকবে, ফলে পশু আক্রমণাত্মক হয়ে উঠবে যা সাধারণ বুদ্ধিতেই বোধগম্য হয় তাতে মানুষ-পশু সংঘাত আরও বাড়বে। দীর্ঘক্ষণ কোনো জীবকে অভূক্ত রাখাও নির্যাতনের সামিল। আশ্রয়ের সম্পাদক গৌতম সরকার বলেন, বিষয়টি নগরোন্নয়ন দফতরের আরও খতিয়ে দেখা দরকার, পাশাপাশি পৌর নিগমের এলাকায় ঐ বিধি চালু করার আগে সব দিক খতিয়ে দেখা ও পশু নির্যাতন নিবারণে যথাযথ উদ্যোগ আমরা প্রত্যাশা করছি।
ঐ সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুরজিৎ সেন বলেন, আজ আমরা চন্দননগরের মেয়রকে চিঠি দিয়ে আমাদের প্রস্তাব জানিয়েছি। উনি চাইলে আমরা ওনার সঙ্গে দেখা করে বিস্তারিত আলোচনা করব।
আশ্রয়ের সভাপতি ভাস্কর চ্যাটার্জি বলেন, মানুষের জন্য ২৪ঘন্টা খাবারের দোকান খোলা থাকবে, আর পশুরা নির্দিষ্ট সময়ে খেতে বাধ্য হবে,এটা অমানবিক। সকলের সসম্মানে বাঁচার অধিকার আছে।