ক্রমশ পর্দা সরছে দেবাঞ্জন দেবের একের পর এক জালিয়াতির উপর থেকে

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: ক্রমশ পর্দা সরছে দেবাঞ্জন দেবের একের পর এক জালিয়াতির উপর থেকে। তদন্তের জাল গোটাচ্ছে পুলিশ। ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জনের কসবা অফিসের যে ঘর বন্ধ ছিল এতদিন সোমবার সেটি খোলার অনুমতি পেল পুলিশ। আলিপুর আদালত থেকে অনুমতি পেয়ে অফিস ঘরটি খোলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। এই মামলায় তদন্তকারীরা এ পর্যন্ত যা তথ্য পেয়েছেন তাতে তদন্তের গতি প্রকৃতি যেরকম এগোচ্ছে, তার থেকে অনেক বেশি প্রমাণ পাওয়ার আশা রয়েছে ওই ঘরটি থেকেই। যেটিকে এককথায় বলা যায় দেবাঞ্জনের জাল কারবারের ল্যাবরেটরি।

    সূত্রের খবর, ঘরটিতে উন্নত মানের ডিজিটাল প্রিন্টার, স্কানার এবং কম্পিউটার রয়েছে। প্রত্যেকটি সরকারি নথি স্ক্যান করে কিংবা ডিটিপি করে ডিজাইন করে, প্রস্তুত করত পীযূষ নামে দেবাঞ্জনের এক কর্মী। ওই ঘরটিতে অন্যান্য কর্মীদের যাওয়া একদমই বারণ ছিল। অনেকে বলছেন,পুলিশ এ পর্যন্ত যা যা পেয়েছে তার থেকে অনেক বেশি প্রমাণপত্র উঠে আসবে এই অফিস থেকেই।

    দেবাঞ্জনের জালিয়াতির আঁতুরঘর নাম জানাতে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন কর্মী রয়েছেন যাঁরা কাজ করতেন ওই অফিসে। তাদের বক্তব্য, দেবাঞ্জন কখনও তথ্য-সংস্কৃতি দপ্তরের প্রধান হিসেবে পরিচয় দিতেন। আবার কখনও কর্পোরেশনের যুগ্ম কমিশনার হিসেবে। সেই সর্বেসর্বা আইএএসএস এর লেটারহেড স্বর্ণালী অক্ষরে লেখা রয়েছে ওই ঘরে। এছাড়াও অশোকস্তম্ভ দেওয়া প্যাড, এনব্লেম রয়েছে এই ঘরে।রয়েছে টেন্ডারের বিভিন্ন নোটিশ, দরপত্র। প্রচুর ভোটার লিস্ট ও রয়েছে।

    বিশেষ ঘরে চলতো নথি জাল চক্র এই ঘরটি খুলতে পারলেই বেশ কিছু প্রোমোটার এবং নিচুতলার প্রভাবশালী নেতাদের নাম উঠে আসবে বলে দাবি জানিয়েছেন অনেকেই। এবার তদন্তকারীদের দৃষ্টি যাবে পীযুষের দিকে। পীযূষই যত সরকারি জাল ডিজাইন করতেন কম্পিউটারে ওই অফিসের বেশ কিছু কর্মী যারা বলেছেন,পীযুষকে চাকরি চলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে কাজগুলো করাত দেবাঞ্জন। পীযূষ খুব গরীব বাড়ির ছেলে বলেই সম্ভবত ‘প্রভাবশালী আইএএস অফিসারের’ চাপের মুখে এই কাজ করে চলেছিলেন। এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে এই অফিসের কর্মীদের অনেকেই।

    তদন্তের সূত্র বলছে, দেবাঞ্জন সমান্তরাল ভাবে কলকাতা পৌরসভার আদলে নকল অফিস চালাচ্ছিলেন। কিন্তু লক্ষ্য কী ছিল? সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে শহর এবং শহরতলীর প্রচুর কন্ট্রাক্টর এবং প্রোমোটার দেবাঞ্জনের ফাঁদে পড়েছিল এ বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।