২১শে জুলাই শহীদ স্বরণে ভার্চ্যুয়াল সভা সাগরদিঘিতে

রবিউল ইসলাম ও সামিম হোসেন : করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে ২০২০ সালে ভার্চ্যুয়াল সভার মাধ্যমে ২১শে জুলাইয়ের ‘শহীদ দিবস’ পালন করেছিল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। এবছরও ভার্চ্যুয়াল সভায় পালিত হল ‘শহীদ দিবস’। তবে এবারই প্রথম রাজ্যের সীমানার গন্ডি ছাড়িয়ে ২১শে জুলাইয়ের দিনে দেশের দিল্লি, গুজরাত সহ ৬টি রাজ্যে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ।

    উল্লেখ্য, ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে সেই সময়ে তৎকালীন যুব কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের সভানেত্রী ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবি তোলেন। সেই দাবি নিয়ে ২১শে জুলাই তৎকালীন রাজ্যের বাম সরকারের মূল সচিবালয় কলকাতা মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয় কংগ্রেসের তরফে।কিন্তু সেই সময়ে গুলি চালানো হয় তাঁদের মিছিলে। তাতে মৃত্যু হয় ১৩ জন কর্মীর। ঘটনা ঘিরে সেই সময়ে তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক তরজা। পরবর্তীকালে কংগ্রেস ছেড়ে ১৯৯৮ সালে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়া দলের জন্মলগ্নের পরেও ২১শে জুলাই ভোলেননি তিনি। প্রতি বছরই এই দিনটি ‘শহীদ দিবস’ হিসাবে পালন করে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই মিছিলে গুলিতে মারা গিয়েছিলেন-শ্রীকান্ত শর্মা, বন্দনা দাস, দিলীপ দাস, মুরারী চক্রবর্তী, রতন মণ্ডল , কল্যান বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বনাথ রায়, অসীম দাস, কেশব বৈরাগী , রঞ্জিৎ দাস , প্রদীপ রায়, আব্দুল খালেক, ইনু মিঞা।
    বুধবার ২১শে জুলাইয়ের ভার্চ্যুয়াল সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষণে বলেন, বিজেপি বাংলাকে উচিত শিক্ষা দিয়েছে। এবার অন্যান্য রাজও বিজেপিকে শিক্ষা দেবে। করোনার দ্বিতীয় ওয়েভ কেন্দ্রের জন্যই হয়েছে। নির্বাচন, সংবাদমাধ্যম এবং বিচার বিভাগ, গণতন্ত্রের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ কাঠামোই ভেঙে দিয়েছে। গণতন্ত্রের বদলে দেশ জুড়ে স্পাইগিরি চালাচ্ছে বিজেপি।বিজেপি পার্টিতেই গদ্দাদের জন্ম হয়।করোনার চেয়েও বিপদজনক ভাইরাস বিজেপি। হিংসাকে ভিত্তি করে সরকার চালাচ্ছে। এছাড়াও তিনি জানান, একটা খেলা হয়েছে, এবার রাজ্যে রাজ্যেও খেলা হবে ১৬ই অগাস্ট ‘খেলা দিবস’ পালন হবে রাজ্যে।

    রাজ্যের সাথে তাল মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘির বালিয়াতেও ২১শে জুলাই (বুধবার)’ শহীদ দিবস’ ভার্চ্যুয়াল সভার মাধ্যমে পালিত হল। উপস্থিত ছিলেন সাগরদিঘির বিধায়ক তথা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্য প্রকিয়াকরণ ও উদ্যান পালন দপ্তরের মন্ত্রী শ্রী সুব্রত সাহা মহাশয়, সমাজসেবি অধ্যাপক সপ্তর্ষি সাহা, কিসমত আলি, ভারতী হাঁসদা ও ব্লকের একনিষ্ঠ তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকগণ।
    মন্ত্রী মাননীয় শ্রী সুব্রত সাহা মহাশয় ২১শে জুলাইয়ের শহীদ দিবসের শহীদ স্বরণে মাল্যদান করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালে জুলাই মাসে কলকাতা মহাকরণ অভিযানের ডাকে ১৩ জন কর্মীর মৃত্যু হয় মিছিলে। সেই দিন টিকে ২১শে জুলাই সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ২৮ বছর ধরে শহীদদের স্বরণে ‘শহীদ দিবস ‘ পালন করে আসছে। এছাড়াও তিনি বলেন,সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস আগামী দিনে দিল্লি থেকে সাম্প্রদায়িক কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকারের পতন ঘটাবো এটাই আমাদের কাছে আজকের দিনের শপথ। এদিন মন্ত্রীর হাত ধরে বেশ কিছু মানুষ অন্য দল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন।
    পাশাপাশি এদিন মন্ত্রী মাননীয় শ্রী সুব্রত সাহা মহাশয় বালিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন ভবনের ‘শুভ শিলান্যাস ‘করেন এবং এই গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি শববাহী গাড়ি উদ্বোধন করেন।