রহস্যমৃত্যু! ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের দেহ

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: কোচবিহারের গুঞ্জবাড়িতে একই পরিবারের ৩ জনের রহস্যমৃত্যু। ভাড়াবাড়ি থেকে উদ্ধার হল কলেজ শিক্ষক, তাঁর স্ত্রী ও সন্তানের দেহ। পুলিশ সূত্রে দাবি, মিলেছে ১২ পাতার সুইসাইড নোট। তাতে লেখা হয়েছে, কীভাবে স্ত্রী ও সন্তানকে খুন করে নিজেকে শেষ করেছেন তিনি। যদিও  কী কারণে এই ঘটনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

    এই ঘটনা প্রসঙ্গে কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীত কুমার বলেন, “১২ পাতার সুইসাইড নোট মিলেছে। সুইসাইড নোটে  প্রথমে স্ত্রী পুত্রকে খুন করার কথা লেখা হয়েছে। তারপরে নিজে কীভাবে বারবার মরার চেষ্টা করেছেন, তা লিখেছেন। প্রাথমিক অনুমান খুন করে আত্মহত্যা। পরিবার খুনের অভিযোগ করলে তা খতিয়ে দেখা হবে।”

    কোচবিহারের গোসানিমারির বাসিন্দা উৎপল বর্মন। পেশায় ছিলেন, আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজের বাংলার শিক্ষক। কামেশ্বরী রোডে এই ভাড়া বাড়িতে থাকতেন স্ত্রী অঞ্জনা ও একমাত্র ছেলে অদ্রীশকে নিয়ে। বৃহস্পতিবার ভাড়াবাড়ি থেকেই তিনজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃত পরিবারের ভাড়া বাড়ির মালিক ডলি দাস বলেন, ” বাড়ির লোক এসে বলল মিসিং। আমরা জানতাম বাড়িতে গিয়েছে। কোনও অশান্তি কিছু ছিল না। সেরকম কিছু শুনিওনি। কাল ওঁদের বাড়ির লোক এসেছিল খোঁজ করে গিয়েছে। আজও আসে। তালা ভাঙতেই সামনে আসে।”

    পুলিশ সূত্রে খবর, বেডরুমে সিলিং থেকে ঝুলছিল কলেজ শিক্ষকের মৃতদেহ। তাঁর দুটি হাত পিছন দিকে মোবাইলের হেডফোনের তার দিয়ে বাঁধা ছিল। ওই ঘরেই খাটের ওপর ছিল তাঁর স্ত্রী ও একমাত্র ছেলের মৃতদেহ। পুলিশ সূত্রে খবর, দুজনের গলাতেই ফাঁসের দাগ মিলেছে। মৃতদেহের পাশে পড়েছিল মোবাইল চার্জারের তার। পুলিশের অনুমান, ওই তার স্ত্রী ও ছেলের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করেন কলেজ শিক্ষক। তারপর সিলিং থেকে ঝুলে আত্মঘাতী হন। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ২ হাত হেডফোনের তার দিয়ে বেঁধে দিয়েছিলেন শিক্ষক। প্রাথমিক তদন্তে এমনই অনুমান পুলিশের।

    তদন্তকারীদের দাবি, উদ্ধার হওয়া সুইসাইড নোটে লেখা হয়েছে, নিজের স্ত্রী ও ছেলেকে খুন করে কীভাবে বারবার নিজেকে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন কলেজ শিক্ষক! কিন্তু কী কারণে ঘটল এমন ঘটনা? মৃত উৎপল বর্মনের দিদি চন্দনা বর্মন বলেন, “ওর কিছু লোন ছিল শুনেছিলাম। বলতে পারব না কিসের ঋণ। তবে বিভিন্ন খেলাতেও টাকা লাগাত বলে শুনেছি।” মৃতদেহগুলি পাঠানো হয়েছে ময়নাতদন্তে, জানিয়েছে পুলিশ।