বানভাসি মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এলেন হাজী আব্দুস সালাম

বাবলু হাসান লস্কর, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা :
আম্ফান, বুলবুল, কিংবা যশ নামক প্রাকৃতিক দুর্যোগে নদীবাঁধ ভেঙ্গে প্রত্যন্ত এলাকায় নোনা জল এসে পড়ায়, সাধারন মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। সেই করুণ চিত্র ছড়িয়ে পরে বিভিন্ন সোশ্যাল সাইটে। এই সমস্ত অসহায় মানুষদের পাশে কেমন ভাবে সহযোগিতা করা যায় , তার রূপরেখা তৈরি করতে শুরু করেন বিভিন্ন সুহৃদ ব্যক্তিবর্গ।

    বিষ্ণুপুর বিধানসভা- মহেশতলা থানার চট্টা কালিকাপুর চালকি পাড়ার বাসিন্দার হাজী আব্দুস সালাম সাহেব। নিজ উপার্জনের অর্থে লকডাউনে কাজ হারানো চার হাজারের অধিক মানুষদের মুদি সামগ্রী প্রদান করেছেন। রুজি-রোজগার হীন যে সমস্ত ব্যক্তি অনাহারে কিম্বা অর্ধাহারে থাকা ব্যক্তিদের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন চাল, ডাল, আলু, পিঁয়াজ, তেল,নুন,দুধ সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি দ্রব্য। এই সমস্ত দ্রব্য দিয়েও তিনি ক্ষান্ত ছিলেন না। যে কোন পরিবারের কোনো কিছু সমস্যা হলে তাকে জানালে তিনি নিজ উপার্জিত নগত অর্থ সাহায্য করেছেন। গাঙ্গেয় সুন্দরবন এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে জলমগ্ন হেক্টরের পর হেক্টর চাষের জমি,ভেড়ি সহ পুকুর,খাল,বিল নালার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসেন । কুলতলীর বিভিন্ন প্রান্তের দুই শত অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মানবিকতার নজির গড়েন। বাসন্তীর ভরতগড় এলাকায় ছয় শত পরিবারের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। গঙ্গাসাগর ঘোড়ামারা দ্বীপের দুই শত পরিবারের সহযোগিতা করেছেন। গোসাবা বিধানসভার পাখিরালয়ের তিন শতাধিক পরিবারের সহযোগিতা করেছেন। রায়দিঘি বিধানসভার পাঁচ শতাধিক পরিবারের সহযোগিতা করেছেন। রায়দিঘির বিধানসভার বিধায়ক অলোক জলদাদা পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ও এলাকার প্রধান সহযোগিতা করেছেন।

    পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামের দুই শতাধিক পরিবারের ও রামনগর দুই শত পরিবারের পাশে থেকেছেন। এই কাজে সেখ সুফিয়ান ও অখিল গিরি তাকে সহযোগিতা করেছেন। দীঘার তিন শতাধিক পরিবারের সহযোগিতা করেছেন। নদীর বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ায় কিছু কিছু মাটির বাড়ি ভেঁঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগর ব্লকের তালগাছাড়ী দু’নম্বর পঞ্চায়েতের পাঁচ শতাধিক পরিবারের হাতে তুলে দিলেন ত্রিপল । যশ কিম্বা করোনা সংক্রামন ঠেকাতে লগডাউনে এই মুহূর্তে সংকটে মরার উপর খাঁড়ার ঘা সুন্দরবন বাসীর। তার মধ্যে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস একদিকে করোনা মহামারী তার উপরে চলা লকডাউন, আর এই লকডাউনের মধ্যে নুন আনতে পান্তা ফুরানো পরিবারদের রুজি রোজগারে টান। চাষের উপরে নির্ভরশীল-পশুপালন , আমন কিম্বা বোরো ধানের চাষ। আর এই মুহূর্তে তাদের অবস্থা করুন যেখানে নদী ভাঙনে এলাকা প্লাবিত অপরদিকে পুকুরে মাছ চাষ তার দফারফা হয়েছে এ সময়। মাছ চাষের মধ্যে জীবিকা নির্বাহের মাধ্যম যাদের তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ।একদিকে সুন্দরবনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসছে দিনের পর দিন। অপরদিকে সাধারণ মানুষের বাঁচার অধিকার টুকু কেড়ে নিচ্ছে। যেখানে জীবন জীবিকার স্বার্থে চাষবাস পশুপালন একেবারেই জলাঞ্জলি দিতে হচ্ছে । প্রাকৃতিক বিপর্যয় এর সাথে সাথে করোনা নামক মারণব্যাধিতে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি। কেমনে বাচবে এই সমস্ত পরিবার!