ব্যক্তিগত কারণে আত্মহত্যা করেছেন বিধায়ক মিলেছে সুইসাইড নোট,নিয়েছিলেন ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: হেমতাবাদের বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়ের অস্বাভাবিক মৃত্যুকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর চললেও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বিধায়কের গলায় ফাঁস লেগেই মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্টে ঘাড়ে একটা কালসিটে দাগ এবং বাঁ হাতে ক্ষতচিহ্নের কথা উল্লেখ আছে। আর কোনও আঘাতের কথা উল্লেখ করা নেই। বিধায়কের ঝুলেই মৃত্যু হয়েছে । পরবর্তী তথ্য পাওয়া যাবে কেমিক্যাল পরীক্ষার পর। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট, প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয় এবং বিভিন্ন প্রমাণের ভিত্তিতে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান ঘটনাটি সম্ভবত আত্মহত্যা ।”

    স্বরাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, “প্রয়াত বিধায়কের পকেটে একটি নোট পাওয়া গিয়েছে। যেখানে তাঁর নিজের হাতে লেখা কিছু তথ্য, দুটি ছবি এবং দুটি ফোন নম্বর পাওয়া গিয়েছে। সেই সঙ্গে ওই দুই ব্যক্তির সম্পর্কে কিছু মন্তব্যও করা আছে।” এছাড়া পুলিসের তদন্তে উঠে এসেছে প্রচুর পরিমাণে ধার করা টাকা শোধ করতে না পারায় হতাশাতেই সম্ভবত আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়।

    দেখে নেওয়া যাক পুলিসি তদন্তে আর্থিক সংক্রান্ত কোন তথ্য উঠে এসেছে —

    1. ** বাম আমল থেকে মোহিনীগঞ্জ মিনি ব্যাঙ্কের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার ছিলেন মৃত বিধায়ক দেবেন্দ্রনাথ রায়।
    2. ** ওই ব্যাঙ্কেরই বিন্দোল ব্রাঞ্চের ম্যানেজার ছিলেন কৃষ্ণপুরের গোপাল মালাকার। দেবেন্দ্রনাথ রায় এবং গোপাল মালাকার মিলে চাল কলের ব্যবসা করতে চেয়েছিলেন। সেই সূত্রে গোপাল মালাকার মাবুদ আলির সঙ্গে দেবেন্দ্রনাথ রায়ের আলাপ করায়। আবার মাবুদের মাধ্যমেই ইংরেজবাজারের নিলয় সিনহার পরিচয় হয়। এরপর রায়গঞ্জে দেবেন্দ্রনাথ রায়ের বাড়িতে বছর ছয়েক ভাড়া ছিলেন নিলয় সিনহা।
    3. ** ব্যবসা শুরুর জন্য মাবুদের মাধ্যমে নিলয়কে প্রায় দেড় কোটি টাকা দেন দেবেন্দ্রনাথ রায়।
    4. ** ২০১৬ সালে দেবেন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে মোহিনীগঞ্জ ব্যাঙ্ক থেকে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা আত্মসাত্‍ করার অভিযোগ ওঠে।
    5. ** রায়গঞ্জে সম্পত্তি বন্ধক রেখে নাবার্ডের কাছ থেকে আরও ২৫ লক্ষ টাকা ঋণ নেন দেবেন্দ্রনাথ।
    6. ** মোটা টাকা চলে যাওয়ায় গত ৫-৬ মাস ধরে চরম হতাশায় ভুগছিলেন মৃত বিধায়ক।
    7. ** বারবার চেষ্টা করেও নিলয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বিজেপি বিধায়ক।
    8. ** টাকা উদ্ধারের জন্য মাবুদই তখন ওঠে একমাত্র ভরসা। বিধায়কের কললিস্ট খতিয়ে দেখা যায়, মৃত্যুর দিনও একাধিকবার দেবেন্দ্রনাথের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয় মাবুদের।
    9. ** প্রচুর পরিমাণে ধার করা টাকা শোধ করতে না পারায় হতাশায় আত্মহত্যা করতে পারেন দেবেন্দ্রনাথ।
      এদিকে বিজেপি বিধায়কের পকেটে যে সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে তাতে রীতিমতো ছবি দিয়ে তাঁর মৃত্যুর জন্য কে দায়ী উল্লেখ করে গিয়েছেন দেবেন্দ্রনাথ রায়। সামনে এসেছে নিলয় সিনহা ও মাবুদা আলি নামে দুজনের নাম। ইতিমধ্যেই নিলয়কে আটক করেছে পুলিস।
      সৌজন্যে – ZEE ২৪ ঘন্টা বাংলা