বসন্তক্ষণে ফাগুন রঙে সাজছে মন, সর্বত্র চলছে দোলের আয়োজন

শরিফুল ইসলাম ,শান্তিপুর, নতুন গতি: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। পার্বণের এই বারোমাস‍্যায় প্রতিটি মাসই সঙ্গে নিয়ে আসে কোনো না কোনো উৎসব। প্রতিটি উৎসবই 

    আবার স্বাতন্ত্র্য বৈশিষ্ট্য ও আভিজাত্যে উজ্জ্বল।

    আক্ষরিক অর্থেই বসন্ত হল রঙের উৎসব। রঙিন হওয়ার উৎসব।

    ঋতুরাজ বসন্ত এলেই যেন প্রেমিক হয়ে ওঠে মন। হিমেল হাওয়া আর শিমুল-পলাশের সুঘ্রাণে মেতে ওঠে মন। কচি আম মুকুলের গন্ধ আকাশ-বাতাস নেশা ছড়ায়। অনাবিল আনন্দ, স্ফূর্তির জোয়ারে কটা দিন যেন সমস্ত অবসাদ উধাও হয়ে যায়।

    নীল আকাশে ভাসে শ্বেত-শুভ্র মেঘ যেন রাশি রাশি পেঁজা তুলো। কোথাও বা যতদূর চোখ যায় গভীর শুন্যতায় ঢাকা শুধু নীল।

    বে-রঙ্গীন মনটাও যেন সমস্ত দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ছাড়িয়ে, কারণে অকারণে সব বাঁধা কাটিয়ে খুশিতে ভ’রে ওঠে।

    মন বলে ‘বসন্ত এসে গেছে।’

    সঙ্গে সঙ্গে মনের দোদুল দোলনায় ছুটে আসে রং নিয়ে নানা রঙের ধারা। দোল পূর্ণিমায় আবির ও রং খেলা এক অসাধারণ বর্ণময়তায় মনটা ভরিয়ে দিয়ে যায়। ফাগুনের রঙে রঙিন হতে ছুটে যায় মন।

    বসন্ত ও দোল নিয়ে কথায় শান্তিনিকেতনের কথা উঠে এলেও এ- বঙ্গের সর্বত্র নিজস্বতা অনুয়ায়ী দোল উৎসবে মেতে ওঠে রাজ্যবাসী।

    সেখানে নবদ্বীপ ,বর্ধমান, কোচবিহার, ঝাড় গ্রাম পুরুলিয়ার মতন শান্তিপুরেও দোল ধর্মীয় বৈশিষ্টের বাইরেও বিশেষ নান্দনিকতার দাবি রাখে।

    নদিয়ার শান্তিপুরের দোল উৎসব একদিনের নয়। চলে এক মাস ধরে। পর পর কয়েকটি ধাপে বিভিন্ন অঞ্চলে জুড়ে। ধর্মীয় তাত্ত্বিকতার খুঁটিনাটি বিষয়টি বাদ দিলেও প্রত্যেক দোলেই আবির সহ নানা রং খেলার রেওয়াজ দেখা যায় এখানে।
    পুজো শেষে ছোট-মেজ, সেজ ও বড় গোপালের হাতে মস্ত একটা সন্দেশ সমেত সন্ধ্যার পর আলোকোজ্জ্বল বর্ণময় শোভা যাত্রা জুড়ে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে রাজ রাস্তার দুই ধারে মানুষের ঢল নামে যা সত্যিই চোখে পড়ার মতন নান্দনিক একটা বিষয়।
    বাতাসে আবির। বিচিত্র বর্ণের আলোকের ঝর্ণা। অজস্র মানুষের ভিড়ে ভিড়ে অবশেষে ডালিধরা।