|
---|
নিজস্ব প্রতিনিধি; হলদিয়া: গতকাল বিকেলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী ডঃ লক্ষ্মণ চন্দ্র শেঠের সমর্থনে সুতাহাটা থানার অন্তর্গত চৈতন্যপুরে এক সভামঞ্চ বানাতে গিয়ে বাধা পায় দলীয় কর্মীরা।
অভিযোগ, গতকাল সকালে চৈতন্যপুর মোড়ে কংগ্রেসের সমর্থনে যখন সভামঞ্চ তৈরির কাজ চলে, তখন একদল দুষ্কৃতী তাদের ওই মঞ্চ তৈরিতে বাধা দেয় এবং টাঙানো মাইক খুলে দিতে বাধ্য করে। এই অবস্থায় সকাল থেকেই চৈতন্যপুরে রাজনৈতিক আবহাওয়ায় ছিল টান টান উত্তেজনা।
এরপর ঠিক বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ একদল কংগ্রেস সমর্থক ডঃ লক্ষ্মণ চন্দ্র শেঠের সমর্থনে ব্যানার নিয়ে পদযাত্রা আকারে মিছিল বের করে। যেই মিছিলে শ্লোগান ছিল, চৈতন্যপুর মোড়ে কংগ্রেসের মঞ্চ ভেঙে ভোটে জেতা যায় না, যাবে না”।
যেই মিছিল প্রথমে চৈতন্যপুর মহিষাদল রোড থেকে শুরু হয়ে কুকুড়াহাটী রোড, হলদিয়া রোড এবং শেষে ব্রজলালচক্ রোড হয়ে যখন পুনরায় মহিষাদল রোডে ফিরছিল, ঠিক সেই সময় একদল দুষ্কৃতী ওই মিছিলকে লক্ষ্য করে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এরফলে দুষ্কৃতী দ্বারা আক্রান্ত হন মিছিলে থাকা কংগ্রেস নেতা প্রণব দাস সহ অন্যান্যরা।
মিছিলে হামলাকারীদের মুখ থেকে শোনা যায়, “আমরা তোমাদের দল করব না, ফিরে যাও – ফিরে যাও”। ঠিক সেই মুহূর্তে প্রার্থী ডঃ লক্ষ্মণ চন্দ্র শেঠের গাড়ি এসে পড়ে এবং প্রার্থীকেও জনরোষের মধ্যে পড়তে হয়। ঔদ্ধত্য জনতা প্রার্থীর গাড়ি ঘিরে ধরে “আমরা তোমাদের দল করব না, ফিরে যাও – ফিরে যাও” শ্লোগান তুলতে থাকে।
এরপর উত্তেজিত জনতার হাত থেকে ডঃ লক্ষ্মণ চন্দ্র শেঠকে রক্ষা করতে ছুটে আসে সুতাহাটা থানার পুলিশ এবং জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে। বেগতিক বুঝে ততক্ষণাৎ প্রার্থীর গাড়ির চালক গতি বাড়িয়ে মহিষাদলের দিকে রওনা দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বয়ান অনুযায়ী, কংগ্রেস সমর্থিত দলছুট কিছু ব্যক্তি, যারা এখনও কংগ্রেস করেন, তারাই সভামঞ্চ তৈরিতে বাধা দেওয়া থেকে শুরু করে লক্ষ্মণ চন্দ্র শেঠের সভার বিরোধীতা করেছে। আর এরফলেই প্রার্থীকে তার নিজের খাস তালুকে জনরোষের মধ্যে পড়তে লক্ষ্য করা গিয়েছে।
এদিকে গতকালের ওই মিছিলে ধস্তাধস্তির জেরে রাস্তায় পড়ে যান প্রণব দাস। এর ফলে তিনি চোখের কোন সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোট পেয়েছেন। পরে প্রণব বাবুকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। প্রণব দাস বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হলদিয়ার চৈতন্যপুরে সভা করতে এসে বাধার মুখে কংগ্রেস প্রার্থী ডঃ লক্ষন চন্দ্র শেঠ সহ তার দলবলকে যে এভাবে জনরোষের মুখে পড়তে হবে, তার আঁচ পায়নি কেউই। স্থানীয় জনগণের সাথে ধস্তাধস্তির এই ঘটনাটিকে ঘিরে গতকাল থেকেই এলাকা জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে রয়েছে। কংগ্রেসের তরফে অভিযোগের আঙুল তৃণমূলের দিকে হলেও, উল্টে তৃণমূলের দাবী, তৃণমূল অশান্তির রাজনীতি শেখায় না এবং অশান্তির রাজনীতি করেও না। তমলুক লোকসভার সাধারণ জনগন লক্ষণের অত্যাচার আজও ভোলেনি। এটা তারই খুদ্র বহিঃপ্রকাশ।