|
---|
নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে তোপ দাগলেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল। ফলে ফের অস্বস্তি বাড়ল গেরুয়া শিবিরের। তাহলে কী মুকুল রায়ের পর এবার জোড়া-ফুলমুখী সুনীল মণ্ডল? শুরু হয়েছে জোর চর্চা।
শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গেই গত ডিসেম্বরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল। একুশের ভোটে পদ্ম শিবিরের প্রচারেও তাঁকে দেখা গিয়েছিলো। কটাক্ষ করেছিলেন মমতা সরকারেরর। কিন্তু ভোটে বিজেপির বিপর্যয় ও মুকুল রায়ের দল বদলের পরই দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এবার ‘বেসুরো’ সুনীল মণ্ডল। ইতিমধ্যেই দলত্যাগী সুনীলের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে চিঠি দিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই সাংসদের এহেন মন্তব্য রাজনৈতিক দিক থেকে তাৎপর্যবাহী।
কী বলেছেন সুনীল মণ্ডল?
ভোটের পরই একে একে ‘বেসুরো’ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া গেরুয়া নেতারা। অনেকেই জোড়া-ফুলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করে তৃণমূল নেত্রীকে কাতর আবেদন করেছেন। তার মধ্যেই ঘরওয়াপসী হয়েছে মুকুল রায়ের। যাকে কেন্দ্র করে বঙ্গ রাজনীতির উত্তাপ তুঙ্গে। নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দলত্য়াগীদের কেন এত ক্ষোভ? জবাবে সুনীল মণ্ডল বলেছেন, ‘যাঁরা তৃণমূল থেকে এসেছে, বিজেপি তাঁদের মানতে পারছে না। বিজেপি মনে করছে এদের বিশ্বাস করা ঠিক হচ্ছে না।’ এপ্রসঙ্গে বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়ের ‘ট্রয়ের ঘোড়া’র উপমাও টেনে আনেন তিনি। এসব মন্তব্যেই দলের সঙ্গে ভিন দল থেকে বিজেপিতে যোগদানকারীদের দূরত্ব বাড়চ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
পদ্মবনে যে পূর্ব বর্ধমানের সাংসদের মোহভঙ্গ হয়েছে সেটাও কার্যত বুধিয়ে দিয়েছেন সুনীল মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘ভেবেছিলাম বিজেপি সাংগঠনিক ভাবে বড় দল। কিন্তু সেরকম ভাবে পাচ্ছি না। দলে যোগনকারীদের কোনও কাজের জায়গা দেওয়া হচ্ছে না।’ অর্থাৎ, দসত্যাগীদের যোগ্য সম্মান না দেওয়াতেই বঙ্গে বিজেপির এই পরিণতি বলে দাবি সাংসদের।
শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই সুনীলের পদ্ম শিবিরে যোগদান। কিন্তু আপাতত যে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার সঙ্গে সাংসদের সম্পর্ক খুব মসৃণ নয় এদিন তাও স্পষ্ট করেছেন সুনীল মণ্ডল। তাঁর দাবি, ‘শুভেন্দু প্রথম আমারা বাড়ি আসে। আমায় যে যে কথা দিয়েছিল, একটা কথা মানেনি। দাদা ভাই হয়ে এক সঙ্গে কাজ করব বলেছিল। কিন্তু কথা রাখেনি।’ তাহলে কী শুভেন্দু সুনীলের সঙ্গে প্রতরণা করেছেন? উত্তরে সাংসদ বলেন, ‘শুধু আমার আমার সঙ্গে নয়, অনেকের সঙ্গেই করেছে।’ এরপর বলেন, ‘শুভেন্দুকে নিয়ে আমি আর একটাও কথা বলতে চাই না। আমার সঙ্গে এখন সম্পর্ক নেই।’
তৃণমূলে মুকুল শিবিরের বলেই পরিচিত ছিলেন সুনীল মণ্ডল। পরে মুকুল রায়ের মতোই যোগ দেন বিজেপিতে। গত শুক্রবারই গেরুয়া দল ছেড়ে মুকুল যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এবার কী তাহলে সুনীল মণ্ডলেরও ঠিকানা হবে জোড়া-ফুল? উত্তরে সাংসদের ইঙ্গিতবাহী জবাব, ‘সেটা এখনই বলার সময় হয়নি।’
মুকুল রায়ের বিজেপি ছাড়ার পরই বাংলায় দলত্যাগ আইন কার্যকর করার দাবি তুলেছে বিজেপি। মুকুলকে বিধায়ক পদে ইস্তফার কথা বলা হয়েছে গেরুয়া শিবিরের তরফে। পাল্টা দলত্যাগী দুই সাংসদ শিশির অধিকারী ও সুনীল মণ্ডলের পদ খারিজের আবেদন জানিয়েছে তৃণমূল। আপাতত দলত্যাগ ও সাংসদ-বিধায়ক পদ খারিজের টানাপোড়েন নিয়ে উত্তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। তার মধ্যেই সুনীল মণ্ডলের বিস্ফোরক দাবি একদিকে যেমন বিজেপির অস্বস্তি বাড়ালো, তেমনই তাঁর ফের তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা তৈরি করলো।