পুকুরে ডুব দিলেই রোগ জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়

নিজস্ব প্রতিবেদক:- ভক্তদের বিশ্বাস, শ্রী শ্রী ঝাড়েশ্বর জিউর মন্দিরের পুকুরে ডুব দিলেই রোগ জ্বালা যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আবার অনেকে মনে করে এই মন্দিরে মানত করলে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এই বিশ্বাস মনে নিয়েই কেউ ৩০ বছর আবার কেউ ৪০ বছর ধরে এই মন্দিরে এসে থাকেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জঙ্গলমহল শালবনী ও কেশপুরের মধ্যবর্তী আনন্দপুরের কানাশোলে অবস্থিত শ্রীশ্রী ঝাড়েশ্বর জিউর শিব মন্দির। প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিতে এই মন্দিরে পালিত হয় জল ঢালা ও মেলা উৎসব। যেখানে শিবের মাথায় জল ঢালতে ঢল নামে লক্ষাধিক নারী-পুরুষের।বুধবার ঝাড়েশ্বর জিউর মন্দিরে মহা ধুমধামে উৎসাহ-উদ্দীপনায় পালিত হল জল ঢালা উৎসব। বর্তমানে এই মন্দিরের দায়ভার রয়েছে আনন্দপুরের মিশ্র পরিবারের হাতে। মন্দির কমিটির অন্যতম সদস্য তরুণ কারক জানান, প্রায় তিন শতাধিক বছরের পুরনো এই ঝাড়েশ্বর জিউর মন্দির। মাঝে একবারই মন্দির সংস্কার করে নতুন রং করা হয়েছে। তবে এই মন্দিরকে কেন্দ্র করে নানা কথা শোনা যায় এলাকার মানুষের কাছে। কেউ কেউ বলে এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল অসুরের দ্বারা। আবার কারও মুখে শোনা যায়, ৩০০ বছর আগে দেব পরিবারের দ্বারা প্রতিষ্ঠা লাভ করে ঝাড়েশ্বর জিউর মন্দির। মন্দিরে আগত ভক্তরা জানায়, দীর্ঘ চল্লিশ বছর বৈবাহিক জীবনে সন্তান না হওয়ায় এই মন্দিরে মান্নত করলে পুত্র সন্তান লাভ হয়। অনেকের বিশ্বাস এই মন্দিরের পুকুরে স্নান করলে নানা রোগ জ্বালা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। বিশ্বাস বা মান্যতা যাই হোক, প্রাচীন মন্দিরের বাৎসরিক উৎসবে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগম আজও বর্তমান।প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির কারণে গত দুই বছর আনন্দপুরের কানাশোলের ঝাড়েশ্বর মন্দিরের বাৎসরিক উৎসব বন্ধ ছিল। তবে এবারে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় মহাধুমধামে পালিত হচ্ছে জল ঢালা উৎসব। তাই অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারের ভক্তবৃন্দের আগমনের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই দলে দলে ভক্তরা কাঁধে বাঁক নিয়ে বিভিন্ন নদী ও জলাশয় থেকে জল তুলে ঝাড়েশ্বর জিউর মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। বুধবার সকালের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শুরু হয় শিবের মাথায় জল ঢালার প্রক্রিয়া।