নারীর অধিকার ও ইসলাম ( প্রথম পর্ব)

সিফ আলম, বহরমপুর: এ বিশ্বের যা কিছু কল্যাণকর তার অর্ধেকই নারী জাতির অবদান।নারী-পুরুষের সমন্বিত প্রচেষ্টায় গঠিত হয় পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও জাতি। পুরুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ ছড়িয়ে এবং নারীকে অবহেলিত করে আদর্শ সমাজ গঠিত হতে পারে না। পুরুষের ভূমিকার পাশাপাশি নারীরও সমৃদ্ধ দেশ এবং সমাজ গড়ার ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রয়েছে।

    কিন্তু কথিত আধুনিক ও সভ্যতার যুগেও প্রতি দিন বহু সংখ্যক কিশোরী ও যুবতী কিংবা নারী অমানবিকতা, নৃশংসতা, পাশবিকতা এবং নানা ধরনের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। গত কয়েক দশকে পশ্চিমা সমাজ নারীকে পুরুষের সমান অধিকার দেয়ার নামে নারীর অধিকার পুনরুজ্জীবিত করার এবং তাদেরকে সামাজিক অঙ্গনের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত করার চেষ্টা চালিয়েছে। এরপরও বিশ্ব নারী সংস্থার পরিচালক ও বিশিষ্ট লেখিকা শার্লোট পাঞ্চ লিখেছেন, বিশ্বের জনসংখ্যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ কেবল নারী হবার কারণে প্রতিনিয়ত, নির্যাতন, অবমাননা, ক্ষুধা এবং এমনকি হত্যারও শিকার হচ্ছে।

    আর এ ক্ষেত্রে ইসলাম নারীকে সর্বাধিক অগ্রাধিকার দিয়েছে। পৃথিবীতে একমাত্র ধর্ম আল ইসলাম যা নারীকে মর্যাদার শীর্ষাসনে সমাসীন করেছে।

    ইসলাম আসার পূর্বে নারীদের অবস্থানঃ

    “যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যা সন্তানকে জিজ্ঞেস করা হবে;কোন্ অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। ১(-সূরা তাকভীর, আয়াত : ৮-৯)
    এই আয়াতে নারীর বিষয়ে জাহেলী যুগের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে উঠেছে। সে সমাজে পুরুষ ও জীবজন্তুর মধ্যস্থলে ছিল নারীর অবস্থান। কন্যা সন্তানের জন্ম সেখানে ছিল অভিশাপ আর অপমানের বিষয়। যেন তা মহাপাপ বা স্থায়ী অমর্যাদার কারণ। অপমানবোধ আর মর্যাদা রক্ষায় জীবন্ত কবর দেয়া হতো কন্যা সন্তানকে। কত হীন মানসিকতা ও কতটা অপমানবোধ হলে মানুষ নিজের ঔরসজাত সন্তানকে জীবন্ত পুঁতে ফেলতে পারে! সেখানে তো নারীকে মানুষ বলেই গণ্য করা হতো না। না নিজের সত্তার ওপর ছিল তার কোনো অধিকার, না সম্পদের উপর; বরং সে নিজেই ছিল সম্পদ;ওয়ারিসসূত্রে যার হাত বদল হত।

    ইসলাম এল, নারী মুক্তি পেল। ঘোষণা হল, কত নিষ্ঠুর তোমাদের এ কাজ। কন্যা সন্তানের জন্মকে বলা হল ‘সুসংবাদ’

    “তাদের কাউকে যখন কন্যা সন্তানের ‘সুসংবাদ’ দেয়া হয় তখন তার চেহারা মলিন হয়ে যায় এবং সে অসহনীয়
    মনস্তাপে ক্লিষ্ট হয়। সে এ সুসংবাদকে খারাপ মনে করে নিজ সম্প্রদায় থেকে লুকিয়ে বেড়ায় (এবং চিন্তা করে ) হীনতা স্বীকার করে তাকে নিজের কাছে রেখে দেবে,নাকি মাটিতে পুঁতে ফেলবে। কত নিকৃষ্ট ছিল তাদের সিদ্ধান্ত। ২(সূরা নাহল,আয়াত : ৫৮-৫৯)