ধারাবাহিক: দ্বিতীয় পর্ব

সিরিয়া সন্ধানে

    কলমে: মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ

    পূর্বে উল্লিখিত যে সিরিয়া যা নানা ভাষাভাষী ও নানা ধর্মের সম্মিলিত রূপ।প্রায় প্রতিটি প্রদেশে ভিন্ন স্বাদের ধর্মের উপস্থিতি পরিলক্ষনীয়।শিয়া ও সুন্নি ছাড়াও এখানে অন্যান্য বিশেষ মুসলিম সম্প্রদায়ের দেখা মিলে, যেমন আলাউয়ি, দ্রুজ, ইসমাইলী, ইয়াজিদী মুসলিম প্রভৃতি।

    আলাউয়ি বা নুসাইরি মুসলিম:
    আরবি শব্দ ‘আলাইয়া’ থেকে আলাউয়ি শব্দের উৎপত্তি যার অর্থ দ্বাদশবাদী শিয়া। বর্তমানে সিরিয়ার জনসংখ্যার ১২% আলাউয়ি সম্প্রদায়ের সদস্য। তুরস্ক ও উত্তর লেবাননে তারা উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু হিসেবে রয়েছে।

    অধিকৃত গোলান মালভূমির গাজার গ্রামেও আলাউয়িদের বসতি রয়েছে। তুরস্কের শিয়া আলেভি সম্প্রদায় ও আলাউয়িদের একই ধরে অনেকে ভুল করে থাকে। সিরিয়ান উপকূল এবং উপকূলবর্তী শহরে আলাউয়িরা প্রধান ধর্মীয় গোষ্ঠী।ঐতিহাসিকভাবে আলাউয়িরা বহিরাগত ও অআলাউয়িদের কাছ থেকে তাদের বিশ্বাস গোপন করে রাখত।

    ফলে তাদের সম্পর্কে গুজব রটে। আলাউয়িদের সম্পর্কে আরবি বিবরণগুলোতে ভালো মন্দ উভয় লিখিত রয়েছে।দ্বাদশবাদী শিয়ারা ১২টি ইমামে বিশ্বাসী। তবে তাদের বিশ্বাসে অন্যান্যদের সাথে ভিন্নতা রয়েছে। আলাউয়িরা আলি ইবনে আবি তালিবকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে থাকেন ।

    আলাউয়ি বলতে হজরত মোহাম্মদ(সা:)-এর জামাতা আলির অনুসারীদের বোঝানো হয়। অনেকে মনে করেন যে প্রায় ৯ম শতাব্দীতে ইবনে নুসাইর নামে জনৈক ব্যক্তি এই গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠা করেন। সেই জন্যে আলাউয়িদের অনেকে ‘ নুসাইরি’ও বলে থাকেন। সিরিয়ার মোট জনসংখ্যার ১২% হল আলাউয়ি সম্প্রদায়।

    সিরিয়ায় আলাউয়িদের সংখ্যালঘু হিসেবে দেখা হয়।আলাউয়ি সম্প্রদায় সিরিয়ায় মোট জনসংখ্যার বিচারে সংখ্যালঘু হলেও ক্ষমতার চাবি কিন্তু তাঁদের হাতেই সীমাবদ্ধ। সিরিয়ার বর্তমান সঙ্কট ও গৃহযুদ্ধের কারণ বুঝতে কীভাবে আলাউয়িগণ একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হয়েও সিরিয়ার ক্ষমতা দখল করতে সক্ষম হল তা জানা দরকার বিশ্ববাসীর।

    একজন সচেতন বিশ্বনাগরিক হিসাবে পৃথিবীর যে কোন দেশের বড় বড় সঙ্কটের ইতিহাস ও গৃহযুদ্ধের ইতিহাস জানা
    কর্তব্যের মধ্যে পরে। বিশেষ করে নিজের দেশে সে ধরণের সঙ্কটের আশংকা দেখা দিতে পারে কিনা সে
    বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক হওয়া উচিৎ, কেননা কৌশল অবলম্বন করে যেকোনো ছোট্ট সম্প্রদায় ক্ষমতা দখল করে নিয়েছে ,এইরকম উদাহরন পৃথিবীর ইতিহাস পরিলক্ষিত করলে অহরহ দেখা মিলে।

    মধ্য প্রাচ্যের এই একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রটি ১৯৪৬ সালে ফ্রান্সের অধীনতামূলক নীতি থেকে স্বাধীনতা লাভ করে ।এটা চিরসত্য যে ১৯২০
    সালে ফ্রান্সের সিরিয়া দখলের আগে থেকে বহু শতাব্দী ধরে আলাউয়ি সম্প্রদায় সিরিয়ার সবচেয়ে
    অনগ্রসর ও অশিক্ষিত একটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ছিল। মনে করা হয় যে আলাউয়িরা শিয়া সম্প্রদায়ের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ কিন্তু তাদের আচার আচরণ ইসলামিক কর্তব্য পালন প্রমাণ করে যে তারা প্রকৃত অর্থে মুসলিম নয়।

    কারণ প্রকৃত অর্থে মুসলিম হতে গেলে ইসলামের পাঁচটি আবশ্যিক কর্ম করতে হয় ,যা ইসলামের ‘পাঁচ-খুঁটি’ বা ‘পঞ্চস্তম্ভ’ নামে পরিচিত ,যেমন নামাজ, রোজা, কালেমা,যাকাত ও হজ ইসলামে আবশ্যিক পালনীয় কর্তব্যসমূহ।কিন্তু ইসলামের এই পাঁচটি স্তম্ভ আলাউয়িরা পালন করে না এবং তাদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ইসলামের মূল ভিত্তির সাথে সাংঘর্ষিক,বিপরীত মেরুতে অবস্থানরত।

    সিরিয়ায় বসবাসরত আলাউয়িরা আলী ইবনে আবুতালেব (রা:) কে আল্লাহর “অবতার” বলে বিশ্বাস করেন (নাউজুবিল্লাহ) এবং তারা পুনর্জন্মের অর্থাৎ মৃত্যুর পর আবার জীবন লাভ করবে বা এ জীবনের পূর্বে ভালো বা মন্দ কোন জীবনের অস্তিত্ব ছিল,এই মতবাদের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে, যা ইসলামে পুরপুরি নিষিদ্ধ। জসুয়া ল্যন্ডিজ সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে মন্তব্য করেন যে,“ আলাউয়ি সম্প্রদায়

    সিরিয়ার উপকূলীয় পর্বতমালা অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ছিল ১৯২০ সালের আগ পর্যন্ত অর্থাৎ সিরিয়ার উপর ফ্রান্সের আক্রমনের আগ পর্যন্ত।তাঁরা তখন অন্যান্য সম্প্রদায়ের তুলনায় অনেকাংশে দুর্বল ছিল। তারা অপরাপর সম্প্রদায়ের তুলনায় সার্বিকভাবে অত্যন্ত নিম্ন মাত্রায় ছিল, তারা ছিল হত দরিদ্র,অশিক্ষিত।সিরিয়ার সু্ন্নিরা আলাউয়িদের ডাকাত বলেই চিহ্নিত করত।

    কিন্তু সেই নিম্ন ও অশিক্ষিত আলাউয়িরা যারা ডাকাত হিসেবে বিবেচিত হত সিরিয়ার সুন্নি সমাজে তাঁরাই গত কয়েক দশকের বছরগুলোতে বিশেষ করে ১৯৫৯ সাল থেকে তারা নিজেদের অবস্থার উন্নতি করে
    আজ সিরিয়াতে একটি অভিজাত সম্প্রদায়ে পরিণত হয়েছে।তারা ইতিহাস পাল্টে দিয়ে অল্প সময়ের ব্যবধানে গরিব থেকে ধনী সম্প্রদায়ে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে
    সক্ষম হয়েছে।

    এই দ্বাদশবাদীরাই বিগত কয়েক দশক ধরে সিরিয়ার শাসন ক্ষমতাও কব্জা করে আছে।সংখ্যালঘু শিয়া গোত্রীয় হয়েও সিরিয়ার শাসনভার তাঁদের হাতে। এই দ্বাদশবাদী শিয়াপন্থীরা ১৯৭০ সালে সিরিয়ার শাসন ভাগে অভিষেক করে।এখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই এদেরই প্রতিপত্তি দেখা যায়। যেমন সিরিয়ার সামরিক, বেসামরিক সকল গুরুত্বপূর্ণ পদ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে এবং শিক্ষায়, আচার-আচরণে, রাজনীতিতে, ব্যবসা-বাণিজ্যে ও সম্পদ বণ্টনে অসমঞ্জস্যতা ছেঁয়ে গেছে সিরিয়ার আলাউয়ি রাজনৈতিক গড়লে। এক কথায়

    দেশের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা এখন দ্বাদশবাদী আলাউয়িদের হাতে।সিরিয়ার রাজনীতিতে আলাউয়ি ছাড়া বড় কোন পদ লাভ সম্ভবপর নয়।বিশিষ্ট ঐতিহাসিক ডালবার্গ অক্টোনের মতে,”ক্ষমতা মানুষকে দূষিত করে ফেলে এবং নিরঙ্কুশ ক্ষমতা মানুষকে একেবারেই নিরঙ্কুশভাবে দূষিত করে।”-যা মানুষকে সর্বনাশের দিকে ধাবিত করে।বর্তমানে সিরিয়ার অবস্থা ঠিক এরকমই।শিয়াপন্থী আলাউয়িরা
    সিরিয়ার একছত্র বা নিরঙ্কুশ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় দখল করে আছে এবং

    সুন্নিদের সামনে দ্বিজাতি তত্ত্বের উদাহরণ রাখার ফলেই আলাউয়ি সম্প্রদায়ের প্রেসিডেন্ট বাশার আল
    আসাদের বিরুদ্ধে সিরিয়ার জনগণ বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে।যদিও বর্তমানে ISIS সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সেই আসাদ বিরোধী আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে ধাবিত করে নাশকতায় লিপ্ত করেছে।যার ফলে সিরিয়ার নিস্পাপ শিশুদের ও মেয়েদের শব দেখছে বিশ্ব মুখ মেলে।এতটাই হাতছাড়া হয়ে গেছে সিরিয়ার এই নাশকতা যে, কোন ভাবেই তা দমন করা যাচ্ছে না।

    প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ফলস্বরূপ ফ্রান্স সিরিয়া দখল করে।ফরাসিরা তাদের আদেশবলি পালনে বাধ্য করে সিরিয়াবাসীকে।কিন্তু সিরিয়ার সুন্নি মুসলিমরা ফরাসিদের অধীনতামূল মিত্রতানীতি মেনে নিতে পারেনি।তাই ফরাসিদের অধীনস্থ হয়ে যাওয়ায় পর সুন্নি মুসলিমরা
    ফরাসীদেরকে সিরিয়া থেকে বিতাড়িত করতে বিদ্রোহ শুরু করে দেয়।

    সে বিদ্রোহ দমন করতে ফরাসিরা তাদের সব থেকে কূটনৈতিক বুদ্ধি ব্যবহার করে। ফরাসি সেনাবাহিনীতে সুন্নি বিদ্রোহীদে তুলনায় সেনা সংখ্যায় কম ছিল।তাই সেনার অভাব পূরণে কূটনীতি করে স্থানীয় সংখ্যালঘুদের নিয়োগ করতে শুরু করে ফরাসি সেনা বাহিনীতে।আলাউয়িরা মূলত সব চেয়ে চর্চিত সংখ্যালঘু ছিল এবং তারা ফরাসিদের অনুকূলে থাকতো সর্বদা ।

    তারা আলাউয়িদেরকে তাদের মিত্র মনে করে মূলত তাদেরকেই বিরাট সংখ্যায় সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করত। ঠিক যেমন ভারতীয় উপমহাদেশের আটশো বছরের মুসলিম শাসনের অবসান করে ব্রিটিশদের ভারত দখলের ইতিহাসের ন্যায়। তখন ব্রিটিশরা যেভাবে হিন্দুদেরকে মিত্র মনে করে ও মুসলিমদের শত্রু ভেবে বিশেষ করে হিন্দুদের প্রশাসনিক বিভিন্ন কাজের দায়িত্ব দিয়েছিল ও হিন্দু- মুসলিম এক জঘন্য দ্বন্দ্বের সূত্রপাত করে ছিল।

    ঠিক একইরকম খেলা খেলেছিল ফরাসীরা সিরিয়াতে আলাউয়িদেরকে দিয়ে,উপমহাদেশের ন্যায় আলাউয়িরা হিন্দুদের ও সুন্নি মুসলিমরা মুসলিমদের সাদৃশ্য।ফরাসিরা আলাউয়িদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিল সিরিয়ার পবিত্র ভূমিতে।সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পৃথিবী থেকে সব কিছুরই অবসান হয়।ইতিহাস থমকে থাকে না মূর্তির মতো, ইতিহাস সময় মতো পাল্টে যায়।ফরাসিদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।প্রভাবশালী ফরাসিদেরও সিরিয়ার মাটি ছাড়তে হয়েছিল।

    ফরাসীদের বিদায়ের পর ১৯৫৫ সাল নাগাদ আলাউয়িরা সেনাবাহিনীর ৬০ শতাংশ হয়ে যায় এবং ৬০-এর দশকে পুরো সামরিক বাহিনী আলাউয়িদের হাতে চলে যায়।ফরাসিরা দ্বিজাতির যে বীজ বপন করে ছিল,তা আলাউয়িরা পুরোপুরই লাভবান হয়ে ছিল।১২ শতাংশ আলাউয়ি হয়েও সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে আলাউয়িরাই সংখ্যাগুরু।

    ডেনিয়েল পাইপ তাঁর নিবন্ধতে ফরাসি মেন্ডেটের প্রাককালে আলাউয়িদের অবস্থান সম্পর্কে বলেছেন।বিস্তারিত জানতে তাঁর বই পড়া যেতে পারে। ডেনিয়েল পাইপ তাঁর বইয়ে বলেন যে,”বিদ্রোহী নেতা সোলাইমান মুর্শিদের ব্যর্থতার পর আলাউয়িরা প্রতিশোধ নেয়ার জন্য দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিল । তারা আর্মি এবং বাথ পার্টিতে কোটারি তৈরির
    লক্ষ্যে কার্যকর কৌশল হাতে নিয়েছিলএবং দামেস্কের ক্ষমতা অর্জন করেছিল।”কারও কারও মতে আলাউয়িদের উত্থান কাল হচ্ছে ১৯৫৯, যেই বছর বাথ পার্টির মিলিটারি কমিটি গঠিত হয়।

    ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৪৬
    থেকে ১৯৬৩ পর্যন্ত সুন্নিদের হাতে সিরিয়ার শাসন ক্ষমতা ছিল।সুষ্ঠুভাবে চলছিল সুন্নিদের শাসনব্যবস্থা।কিন্তু তখন থেকেই সুন্নিদের শাসন ব্যবস্থায় আধিপত্য আলাউয়িরা মানতে অস্বীকার করেছিল। এই ছিল তাদের সুন্নিদের উপর পাশবিক অবহেলা।আলাউয়িরা একটি আলাদা রাষ্ট্রের দাবী করে এবং কয়েকবার সশস্ত্র বিদ্রোহও করে সুন্নি মুসলিমদের বিরুদ্ধে। সিরিয়ার দ্বিতীয় বিদ্রোহে নেতৃত্ব দেয়ায় সোলায়মান আল মুর্শিদের মৃত্যুদন্ড হয়।

    কিন্তুএখানেই এই বিদ্রোহ থেমে থাকেনি ,পরবর্তীতে সোলায়মান আল মুর্শিদের পুত্র ১৯৫২ সালে তৃতীয় বিদ্রোহ করে এবং ব্যর্থ হয়। তখন থেকেই তারা বৃহত্তর
    সিরিয়ার মধ্যে থেকেই তাদের অবস্থা সুদৃঢ় করার পরিকল্পনা শুরু করে। এদিকে সুন্নিরাও নিজেদের
    মধ্যে ক্ষমতার লড়াই শুরু করলে তাদের মধ্যেও অনৈক্যের বীজ বাড়তে থাকে।সুন্নিদের মধ্যেও অসমতা বিশেষ লক্ষনীয় ছিল সেই সময়।আরেকটি কারণ হচ্ছে উপনিবেশিক আমলের সেকুলার

    শিক্ষাব্যবস্থায় গড়ে উঠা তখনকার সুন্নি এলিটদের ঔপনিবেশিক আদর্শ ও মতবাদের দিকে ঝুঁকে পরা। ষাটের দশকে পৃথিবী জুড়ে ধর্মনিরপেক্ষতা ,সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদের যে জোয়ার শুরু হয়েছিল, সিরিয়ার এলিট সমাজের যুবকেরা দেশের সকল সমস্যার সমাধান খুঁজতে চেয়েছিল সেসব আদর্শকে প্রধান হাতিয়ার করে।

    ষাটের দশকে পৃথিবী জুড়ে তখন চলছে পুঁজিবাদের অবসানে তৃতীয় বিশ্বে সমাজতন্ত্রের প্রতিষ্ঠার জোয়ার।সেই সময় সুন্নি মুসলিমদের ঐক্যের কথা চিন্তা করার সময় কারো ছিলনা। একমাত্র পারস্য উপসাগরের তেল সমৃদ্ধ রাষ্ট্রগুলো ছাড়া সিরিয়া সহ আরবের সর্বত্র সম্ভব হয় বামপন্থী বাথ পার্টি গঠন করা। তাই আলাউয়িরাও যোগ দেয় বাথ পার্টিতে এবং অতি অল্প সময়ে তারা পার্টির গুরুত্বপূর্ণ পদদখল করতে সক্ষম হয়।আলাউয়িরা বরাবরই স্বার্থান্বেষী প্রকৃতির ছিল।

    বাথ পার্টিতে আলাউয়িরা তদের স্বার্থের খেয়াল মাথায় রেখে ছিল, তাই তারা পদোন্নতি লাভ করে ছিল।কিন্তু সুন্নিদের মাথায় সেটাছিলনা,তাই তারা পিছিয়ে পরে ছিল। বিশেষ করে নিজেদেরকে অসাম্প্রদায়িক প্রমাণ করতে তাদেরকে আরো বেশী উদার হতে হয়েছে।মাত্র দশ বছরের মাথায়
    আলাউয়িরা সামরিক বাহিনীতে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করে ফেলে। দ্বাদশবাদী আলাউয়ি হাফেজ আল আসাদ সিরিয়ার ক্ষমতা হাতে নেন। ৪৫ বছর ধরে এই আসাদ পরিবারের কাছেই সিরিয়ার শাসন
    ভার চলে আসছে। আজ তাঁরই পুত্র বাশার আল্ আসাদ বর্তমানে তার বাবার হাফেজ এক আসাদের আর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।

    কিন্তু তিনি শাসন ব্যবস্থা পরিচালনায় অপারগ কারণ তার সময়ই দেশে গৃহযুদ্ধ লেগেছে ,যার ফলে লক্ষ লক্ষ শিশু ,মহিলা ও নিরপরাধ সাধারণ মানুষ প্রাণ দিতে হচ্ছে ও উদ্বাস্তু হতে হচ্ছে। এই গৃহ যুদ্ধের অবসান হবে কি আদেও হবে না, কেউ বলতে পারে না।