দ্রুত আম পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ মালদহ জেলায়

নিজস্ব প্রতিবেদক:- দ্রুত আম পাকাতে রাসায়নিক ব্যবহারের অভিযোগ মালদহ জেলার বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যে মালদহের গোপালভোগ প্রজাতির আম পাকতে শুরু করেছে। তবে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী গোপালভোগ ছাড়াও লক্ষণভোগ কাঁচামিঠা ও কিছু গুটি প্রজাতির আম পরিপূর্ণ না হতেই গাছ থেকে পেড়ে নিচ্ছেন। অভিযোগ ইথিলিন গ্যাস ও কার্বাইড দিয়ে আম পাকানো হচ্ছে। শুধু মালদহ জেলা নয় জেলার বাইরে রাসায়নিকের সাহায্যে পাকানো আম পাঠানো হচ্ছে। এমনটা হতে থাকলে মালদহ জেলার আমের সুনাম নষ্ট হবে বলে মনে করছেন জেলার সাধারণ মানুষ থেকে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা।চলতি মরশুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মালদা জেলায় আমের উৎপাদন তুলনায় অনেকটাই কম হয়েছে। বাজারে এখনো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আম। মালদা জেলার গোপালভোগ সহ বেশকিছু গুটি প্রজাতির আম বাজারে বিক্রি হচ্ছে। জেলার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আমের দাম পেতে ইথিলিন ও কার্বাইড দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে দ্রুত আম পাকাচ্ছেন। অপরিপূর্ণ অবস্থায় গাছ থেকে আম পেরে সেগুলিকে ইথিলিন বা কার্বাইড দিয়ে প্যাকিং করা হচ্ছে। প্যাকিং করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আম পেকে যায়। ইথিলিন গ্যাসকে পাউডার তৈরি করে প্যাকেট করা হচ্ছে। এই প্যাকেট ইথিলিন চীন থেকে আসছে এমনটায় দাবি ব্যবসায়ীদের। একটি আমের কার্টুনে দুটি করে প্যাকেট দিচ্ছেন। তাতেই একদিনে আম পেকে যাচ্ছে।এই পাউডার আসার পর অধিকাংশ অসাধু ব্যবসায়ী কার্বাইড এর পরিবর্তে এই গ্যাস ব্যবহার করছেন। যদিও ব্যবসায়ীরা ইথিলিন গ্যাসকে চায়না পাউডার নামে চেনেন। ইথিলিন দিয়ে আম পাকানো হলে উপরের খোসা দেখতে সুন্দর হয়। তাই ব্যবসায়ীরা এই চায়না পাউডার ব্যবহার করছেন। তবে আসলে এই চায়না পাউডার কি তা অধিকাংশ আম ব্যবসায়ী জানেন না। শুধুমাত্র কৃত্রিম উপায়ে দ্রুত আম পাকানো যায় ও আমের রং ভালো হওয়ায় এই ক্ষতিকারক রাসায়নিক ব্যবহার করছেন তারা। যার থেকে মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।প্রায় অধিকাংশ আমবাগানেই ব্যবসায়ীরা আম ভাঙতে শুরু করেছেন। বাগান বাড়িতে গেলেই চোখে পড়বে আমের প্যাকেট করার দৃশ্য। সেখানেই দেওয়া হচ্ছে চায়না পাউডার। জেলার বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের এই চায়না পাউডার ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেছেন জেলা উদ্যানপালন দফতরের কর্তারা। এই বিষয়ে নজরদারি চালানোর পাশাপাশি কৃষকদের সচেতন করতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান উদ্যানপালন দফতরের কর্তারা। জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তা জানান, আম এমন একটি ফল যা পরিপূর্ণ হওয়ার পর গাছ থেকে পেড়ে নিলেও পাকানো যায়। ঘরের মধ্যে খোলা অবস্থায় পরিপূর্ণ আম রেখে দিলে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে পেকে যায়। কিন্তু জেলার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় অপরিপূর্ণ অবস্থায় ভালো প্রজাতির আম পেড়ে রাসায়নিক দিয়ে পাকাচ্ছেন। যা খুবই ক্ষতিকর।রাসায়নিক দিয়ে আম কৃত্রিম উপায়ে পাকানো আম খেলে মানুষের শরীরে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন জেলার চিকিৎসকদের একাংশ। রাসায়নিক পদার্থ মানুষের শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর। আমের মধ্যে দিয়ে সেই রাসায়নিক শরীরে ঢুকলে নানান মারণ রোগ পর্যন্ত হতে পারে। চিকিৎসকদের মতে ইথিলিন বা কার্বাইড দিয়ে কৃত্রিম উপায়ে পাকানো আম খেলে লিভার , কিডনি এমনকি পোষ্টিকতন্ত্রের মারাত্মক ক্ষতি করবে। কারণ এই সমস্ত রাসায়নিক মানুষের শরীরে নষ্ট করার মত ক্ষমতা নেই। তাই মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ দিচ্ছেন জেলার ঐতিহ্যবাহী আম যেন স্বাভাবিক পদ্ধতিতেই পাকানোর পর ব্যবসায়ীরা বাজারে বিক্রি করেন।