|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক:- “পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম রোগীকে রাতারাতি অস্ত্রপ্রচার করে প্রাণে বাঁচিয়ে নজির স্থাপন করলো উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের শল্য চিকিৎসকরা। পথ দুর্ঘটনায় বুকে বিধেঁ যায় বাঁশ। বুকের এফোর ওফোর হয়ে যায়। সফলতার সাথে অস্ত্রপচারের মাধ্যমে জীবন বাঁচাতে সমর্থ হয় চিকিৎসকেরা। রবিবার দুপুরে উত্তর দিনাজপুর জেলার পাঞ্জি পাড়ায় এক পথ দুর্ঘটনায় গুরুতর জখম হন বিহারের কিষানগঞ্জের বাসিন্দা শোভা দেবী নামে এক ৫৫ বছর বয়সী এক মহিলা। এদিন দুপুরে উত্তর দিনাজপুর জেলার পাঞ্জিপাড়া থেকে বিহারের কিশানগঞ্জে অটোতে করে যাচ্ছিলেন শোভাদেবী। সেই সময় বাঁশ বোঝাই একটি ট্রাকের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় অটোর। মহিলার বুকের বাঁ দিকে একটি বাঁশের টুকরো”এফোর ওফোর করে ঢুকে যায়। এরপর ওই মহিলাকে প্রথমে পুর্ণিয়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।গুরুতর জখম অবস্থায় শোভাদেবীকে প্রথমে নিয়ের যাওয়া হয় পূর্নিয়া মেডিকেল কলেজে। সেখানে চিকিৎসকরা মহিলার শরীর থেকে বাঁশটি বেড় করতে অসমর্থ হলে তাকে রেফার করাহয় কিষানগঞ্জ হাসপাতালে। সেখানেও বাঁশটি মহিলার শরীর থেকে বের করতে অসমর্থ হলে মহিলাকে রেফার করা হয় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। রাত দেড়টায় ওই মহিলা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পৌঁছয়। এরপর মহিলার শারীরিক পরিস্থিতি দেখেই তৎপর হয় চিকিৎসকরা। পরিস্থিতি দেখে তারা বুঝে যান সময় নষ্ট না করে তৎক্ষনাৎ অস্ত্রপ্রচারের প্রয়োজন। সেই মতো উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের শল্য বিভাগের প্রধান ডাক্তার অমরেন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে আটজনের একটি মেডিকেল বোর্ড “গঠন করা হয়। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ শুরু হয় মহিলাত দেহে অস্ত্রোপচার। সোমবার সকাল সাড়ে ছটা পর্যন্ত অস্ত্রোপচার চলে। প্রথমে বাঁশ বুক থেকে বের করা হয়। সৌভাগ্যক্রমে মহিলার ফুসফুসের কোন ক্ষতি হয়নি, হয়নি অতিরিক্ত রক্তপাত। তবে ক্ষত খুব গভীর ছিল। চারটে বক্ষপিঞ্জরের হাড় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। টানা অস্ত্রোপচারের পর ওই মহিলাকে সাড়ে সাতটা নাগাদ আইসিইউর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করা হয়। এখন ওই মহিলার পরিস্থিতি স্থিতিশীল বলে জানা গিয়েছে। মেডিকেল বোর্ডে ছিলেন সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অমরেন্দ্র সরকার, এনেসথেসিয়া বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর চিকিৎসক অভিষেক গাঙ্গুলী, সূর্য কান্ত, সঞ্চিতা দাস। এছাড়াও ছিলেন চিকিৎসক সিনিয়র সার্জেন “অরুণাংশু বল্লভ, আদর্শ ভারদ্বাজ সহ অন্যান্যরা।মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডেপুটি সুপার সুদীপ্ত মন্ডল বলেন, “রোগীর পরিস্থিতি সত্যি খারাপ ছিল। কিন্তু হাসপাতালের চিকিৎসকরা অসাধ্য সাধন করেছে। দ্রুত অস্ত্রপ্রচার করাতেই রোগীর প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।” মেডিকেল বোর্ডের সদস্য চিকিৎসক অভিষেক গাঙ্গুলি বলেন, “রোগীর পরিস্থিতি দেখেই আমরা রাতারাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম দ্রুত এই রোগের অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে। সেইমতো তৎক্ষণাৎ মেডিকেল বোর্ড গঠন করে প্রায় সাড়ে চার ঘন্টা টানা অস্ত্রোপচারের পর রোগীর প্রাণ বাঁচাতে আমরা সক্ষম হয়েছি।