যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা নতুন করে সর্বকালের সর্বোচ্চ হলো

 

    নতুন গতি বাংলাদেশ ব্যুরো :
    মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট এবং ডিপার্টমেন্ট অফ এডুকেশন’র যৌথ আয়োজনে আন্তর্জাতিক শিক্ষা সপ্তাহ (আইইডব্লিউ) উদযাপন উপলক্ষে ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের পক্ষ থেকে আনন্দের সাথে জানানো হচ্ছে যে, ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে ৮,৮০০ জনেরও বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ২০২০ সালের ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন এক্সচেঞ্জ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশের জন্য এটিই নতুন সর্বোচ্চ সংখ্যা যা ২০১৯ সালের প্রতিবেদনের (৮,২৪৯ জন শিক্ষার্থীর) চেয়ে ৭.১% বেশি এবং ২০০৯ সালের তুলনায় সংখ্যাটি তিনগুণেরও বেশি। ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি কৌশলগত অগ্রাধিকার হলো বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শিক্ষামূলক বিনিময় উৎসাহিত করা। আন্তর্জাতিক শিক্ষা বিনিময় আমাদের উভয় দেশ ও জনগণকে সুফল এনে দেয়, বুদ্ধিবৃত্তিক ও আন্তঃসাংস্কৃতিক সমৃদ্ধি ঘটে এবং সেইসাথে ব্যবসা ও পেশাগত সংযোগ বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার্থীদের জন্য বৈশ্বিক কর্মবাজারে প্রবেশ এবং বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের প্রস্তুতিতেও এটি সহায়ক হয়।

    যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুতবর্ধমানভাবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী প্রেরণকারী দেশগুলোর অন্যতম হলো বাংলাদেশ। সারা বিশ্ব থেকে উচ্চশিক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী প্রেরণকারী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান ১৭তম যা গত বছর ছিলো ২০তম। এই তালিকার শীর্ষ বিশটি দেশের মধ্যে শতাংশ হিসাবে বাংলাদেশের বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ এবং সংখ্যার দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের বৃদ্ধিই সর্বোচ্চ। ২০১৯-২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত ৮,৮৩৮ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫,৭৮৭ জন স্নাতক পর্যায়ে লেখাপড়া করেছেন- যা ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের তুলনায় ৯.৬% বেশি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী প্রেরণে বাংলাদেশ বিশ্বে নবম থেকে অষ্টম স্থানে উন্নীত হয়েছে।

    বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের প্রায় ৭৫ শতাংশ স্টেম (STEM) ক্ষেত্রে (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) লেখাপড়া করছেন। তাদের মধ্যে ৪১ শতাংশের বেশি প্রকৌশল, প্রায় ১৯ শতাংশ গণিত/কম্পিউটার বিজ্ঞান, এবং ১৫ শতাংশের বেশি ভৌত বা জীব বিজ্ঞান (Physical or Life Sciences) নিয়ে লেখাপড়া করছেন। প্রায় সাত শতাংশ পড়ছেন ব্যবসায়/ব্যবস্থাপনা বিষয়ে, এবং প্রায় ছয় শতাংশ সমাজ বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যনরত আছেন । ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে প্রায় ১,৩০০ বাংলাদেশী শিক্ষার্থী (সকল বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর ১৪ শতাংশ) যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের শিক্ষার অংশ হিসাবে নিজ নিজ শিক্ষা বিষয়ে চাকুরি পেতে বাস্তব প্রশিক্ষণ লাভের উদ্দেশ্য ঐচ্ছিক ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ (ওপিটি) কার্যক্রমে অংশ নিয়েছেন।

    ১৬ নভেম্বর(সোমবার) থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অফ স্টেট’র ব্যুরো অফ এডুকেশনাল অ্যান্ড কালচারাল অ্যাফেয়ার্স এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন (আইআইই) কর্তৃক প্রকাশিত ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন এক্সচেঞ্জ ২০২০ শীর্ষক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে যে, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছে উচ্চশিক্ষার গন্তব্যস্থান হিসাবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। বিগত টানা পাঁচ বছরের ন্যায় ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্র ১০ লক্ষেরও বেশি বিদেশী শিক্ষার্থীকে (১,০৭৫,৪৯৬) লেখাপড়ার সুযোগ দিয়েছে। ২০১৯-২০২০ শিক্ষাবর্ষে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা সামান্য হ্রাস পেলেও (১.৮%) সংখ্যাটি যুক্তরাষ্ট্রে সকল উচ্চশিক্ষার্থীর শতকরা ৫.৫ ভাগের প্রতিনিধিত্ব করে।

    ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস এডুকেশন-ইউএসএ বাংলাদেশ’র মাধ্যমে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অংশগ্রহণের জন্য বেশ কিছু ভার্চুয়াল কার্যক্রম আয়োজনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক এডুকেশন উইক (আইইডব্লিউ) উদযাপন করছে। আগামী পাঁচ দিন যাবত আমাদের এডইউএসএ পরামর্শ কেন্দ্রগুলো যুক্তরাষ্ট্রে লেখাপড়া সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে ওয়েবিনার আয়োজন করবে । এই অনুষ্ঠানে মিশিগান স্টেট, ইয়েল ইউনিভার্সিটি, ম্যাকনিসি স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশী শিক্ষার্থী অংশ নেবেন। যুক্তরাষ্ট্রের যেসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেবেন: বেন্টলি ইউনিভার্সিটি, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি অ্যাট সান বার্নার্দিনো, এম্ব্রি-রিডল এরোনটিকাল ইউনিভার্সিটি, ফ্লোরিডা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাউচার কলেজ, হ্যামিলটন কলেজ, মিডওয়ে ইউনিভার্সিটি, মিনেসোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি, মিসৌরি ওয়েস্টার্ন স্টেট ইউনিভার্সিটি, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এনওয়াইইউ) অধিভুক্ত ট্যান্ডন স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, নর্দার্ন অ্যারিজোনা ইউনিভার্সিটি, অরেঞ্জ কোস্ট কলেজ, পেপারডাইন ইউনিভার্সিটি, স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্ক অ্যাট অসওয়েগো এবং নিউ পালজ, স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ হিউস্টোন-ভিক্টোরিয়া, ইউনিভার্সিটি অফ নিউ মেক্সিকো, ইউনিভার্সিটি অফ নর্দার্ন আইওয়া, ইনিভার্সিটি অফ সাউথ ডাকোটা, ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস অ্যাট আর্লিংটন এবং সান আন্টোনিও, ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন অ্যাট ওউ ক্লেয়ার এবং মিলওয়াওকি এবং ভ্যালপ্যারাইসো ইউনিভার্সিটি।