ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের তত্ত্বাবধানে বাঁকুড়া জেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:- বাঁকুড়া শহর থেকে 4 কিলোমিটার পথ পেরোলেই বিকনা গ্রাম ৷ আর তার এক দিকে রয়েছে ডোকরা পাড়া ৷ শিল্পের পাড়া, শিল্পীদের পাড়া ৷ যেখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শিল্পীরা সৃষ্টি করে চলেছেন ডোকরার নানা শিল্পকলা ৷ এই পাড়ায় পিতলের ক্যানভাসে সরস্বতী, লক্ষী, গণেশ বা দশভূজার রূপ ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত থাকেন শিল্পীরা ৷ একটা সময় ছিল যখন কাজের বরাতের চাপ এত থাকত যে, নাওয়া-খাওয়ার সময় পেতেন না কারিগররা ৷ কিন্তু, করোনা পরিস্থিতির পর থেকে তাঁদের সেই ব্যস্ততা কমে গিয়েছিল ৷ কিন্তু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের তত্ত্বাবধানে বাঁকুড়া জেলা পরিষদ ডোকরা পাড়াকে মডেল শিল্পতালুক হিসেবে তৈরি করছে (Dokra Model Industry is Being Created by MSME Department) ৷ ইতিমধ্যে তাঁর সুফলও পেতে শুরু করেছেন শিল্পীরা ৷মাঝখানে একটা সময়ে অভাব ও সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার কারণে, ডোকরা শিল্পীদের মনোবল ভেঙে পড়েছিল ৷ এই শিল্পীদের শিল্পের কদর থাকলেও অভাব কখনও তাঁদের পিছু ছাড়ত না ৷ যার ফলে পরবর্তী প্রজন্ম মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিল যুগ যুগ ধরে চলে আসা এই ডোকরা শিল্প থেকে ৷ প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই পাড়াতে বাস করলেও, তাঁদের নিজস্ব কোনও বসবাসের জমি ছিল না ৷ মাটির ঘরে বাস করা এই শিল্পীরা আজ আছি তো কাল নেই ৷ এমনি অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাতেন ৷ কিন্তু, রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে সঙ্গে ডোকরা শিল্পীরা তাঁদের শিল্পসৃষ্টির মনোবল ফিরে পেয়েছেন ৷ কিন্তু, তাও যথেষ্ট ছিল না ৷তবে, সেই পরিস্থিত এ বার বদলাতে শুরু করেছে ৷ বাঁকুড়া জেলা পরিষদের উদ্যোগে 84 জন ডোকরা শিল্পীর পরিবারকে জমির পাট্টা তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে এই ডোকরা পাড়াকে একটা মডেল শিল্পতালুক (Dokra Model Industry) বানিয়ে তোলার কাজ চলছে ৷ রাজ্য-সহ রাজ্যের বাইরের থেকে আগত সমস্ত ক্রেতাদের জন্য তৈরি হয়েছে গেষ্ট হাউস ৷ কোভিডের কালোছায়া থেকে আপত মুক্তির পর,বাইরের পর্যটকদের আনাগোনাও হচ্ছে বেশ ৷ ফলে শিল্পীদের তৈরি করা জিনিস বিক্রিও ভালই চলছে ৷বাঁকুড়া জেলা পরিষদের একটি প্রতিনিধিদল ডোকরা পাড়ায় পরিদর্শনে যায় ৷ প্রতিনিধিরা যাওয়ার পর তাঁদের ঘিরে বেজায় আপ্লুত ডোকরার পাড়ার শিল্পীরা ৷ জেলা পরিষদের পূর্ত ও পরিবহণ কর্মাধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমাদের সরকার সবসময় শিল্পীদের পাশে আছে ৷ ভবিষ্যতে আরও কিছু প্রয়োজনেও আমরা আছি ৷ এই শিল্পতালুকে আগত পর্যটকরাও এই শিল্পীদের কাজ দেখে মন্ত্রমুগ্ধ ৷’’ স্বাভাবিকভাবেই জেলা পরিষদের উদ্যোগে পুরো ডোকরা শিল্পতালুক বাড়তি অক্সিজেন নিয়ে আবারও পথচলা শুরু করেছে ৷