বকেয়া রেশন না দেওয়ায় অভিযোগে আটক দুয়ার সরকার কর্মসুচীতে আসা রেশন গাড়ি

আজিজুর রহমান, গলসি : বকেয়া রেশন না দেওয়ায় অভিযোগে আটক দুয়ার সরকার কর্মসুচীতে আসা রেশন ও গাড়ি ডিলারের লোকজন। পাশাপাশি  তাদের আটক রেখে বিক্ষোভ দেখালেন শতশত গ্রাহক। ঘটনা ঘিরে একপ্রকার উতপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। খবর পেয়ে গলসি পুলিশ এসে ক্ষিপ্ত গ্রাহকদের নিয়ন্ত্রণ করে। খবর যায় ব্লক খাদ্য সরবরাহ দপ্তরে। জানা গেছে, শুক্রবার সকালে ট্রাক্টর করে গলসি ২ নং ব্লকের ছালালপুর গ্রামে রেশন নিয়ে আসেন ডিলার অঞ্জলী হাজরা নাতি চন্দন হাজরা। তখনই গ্রামের গ্রাহকরা ট্রাক্টর ও ডিলারের লোকদের দীর্ঘক্ষণ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখান। ওই গ্রামের গ্রাহক জনুবা সেখ, মনি হাসদা, রুপামুনি টুডু, রহিম সেখ, মাখন সেখ দের অভিযোগ, তাদের গোটা এক মাসের রেশন দিচ্ছেন না ওই ডিলার। সুকৌশলে গ্রামের একজনের স্বাক্ষর করে একমাস গোটা রেশন চুরি করছে ডিলার। জুলাই মাসের রেশন আগষ্ট মাসে দিয়ে আগষ্টের রেশন পুরো হজম করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। তাই এদিন রেশন দেওয়ার সময় তারা দুইমাসের মাল একত্রে দেওয়ার দাবী জানান। দিতে অস্মিকার করলে ঘটনার চাউর হয় গ্রামে। এরপরই গ্রামের মানুষ ডিলারের লোকজন ও ট্রাক্টর আটকে রাখেন। গ্রাহক সরুবালী হাঁসদা, বলেন আমরা গরীব মানুষ মাঠে ঘাটে কাজ করি। সবসময় আমাদের নিম্নমানের আটা দেয়  ডিলার। তাছাড়া আমাদের আদিবাসী পাড়ায় মাল কম দেয়। কোন কাগজ দেয় না। আর এক গ্রাহক লক্ষী হাঁসদা বলেন, দেব দেব করে গোটা এক মাসের রেশন এখনও দিচ্ছে না। তারজন্যই ডিলারকে আটকে রেখেছি। রেশন দিলে তবেই যেতে দেব। গ্রাহক হাবীল মিদ্দা বলেন, আমি বা আমার বাবা যে রেশন নেবে তার আঙুলের ছাপ তো মেশিনে থাকবে। তাহলে সেই ছাপ দেখাক ডিলার। তার দাবী, এবছর তিনি ছয় বার মাল নিয়েছেন। ডিলার মিথ্যাকরে সাতবার বলছে। পরিকল্পিত ভাবে তাদের এক মাসের রেশন গায়েব করেছে ওই ডিলার। সরকার ব্যবস্থা নিক ওই ডিলারের বিরুদ্ধে।  আবাবীল মিদ্যা বলেন, বিভিন্ন ভাগে রেশন কম দেয় ওই ডিলার। সেইজন্য আগেও ওর বাড়ি ঘেরাও করেছিল এলাকার গ্রামের মানুষ। তারা আগস্ট ও সেপ্টেম্বর এই দুই মাসের রেশন পাবে। এখন মিথ্যা করে বলছেন আগষ্টের রেশন বিলি করেছেন। তবে রেশন দিতে ডিলার অঞ্জলী হাজরার নাতি চন্দন হাজরা জানান, তিনি  ১৮ ই আগস্ট ওই গ্রামের আগস্ট মাসের প্রাপ্য রেশন বিলি করেছেন। যেটা গ্রাহকরা মানতে চাইছে না। তার দাবী গ্রাহকরা ব্লকের অফিসে গেলেই রেশন তুলেছে কিনা জানতে পারবেন। তিনি প্রমান হিসাবে তার খাতায় এক গ্রাহক স্বাক্ষর করিয়ে রেখেছেন। তবে অনলাইন বায়োমেটিক মেশিন থেকে রেব হওয়া কোন কুপন তিনি দেননি। কেন? জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, নেটওয়ার্ক সমস্যা ও বায়োমেটিক মেশিনের ব্যাটারির সমস্যা জন্যই তিনি কুপন দেননি। তিনিই আর বলেছেন, ছালালপুর গ্রামের তাদের আনুমানিক ১২০০ সরকারী গ্রাহক আছে। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের চাল, গম ও আটা মিলিয়ে কমবেশি ১৩৫ বস্তা মাসিক রেশন পান। ঘটনা তদন্ত শুরু হয়েছে।  এ বিষয়ে গলসি ২ ব্লক খাদ্য পরিদর্শক দিবেন্দু তরফদার বলেন, প্রধান মন্ত্রী গরীব কল্যান যোজনার জানুয়ারি মাসের বরাদ্দ না দেওয়ায় ডিলার ও উপভোক্তাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তিনি সেখানে গিয়ে গ্রাহকদের বুঝিয়ে সমস্যার সমাধান করেছেন। তবে বায়োমেটিক স্লিপ না দেওয়ায় বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে তার উদ্ধতোন কতৃপক্ষকে জানাবেন। ওই বিষয়ে উদ্ধতোন কতৃপক্ষ যা ব্যবস্থা নেবার নেবেন।