রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট

নতুন গতি নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে ভোট পরবর্তী অশান্তির তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট৷ উচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাল বিজেপি৷ একইসঙ্গে হিংসা ইস্যুতে আবারও তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকারকে তুলোধনা করেছে কেন্দ্রের শাসকদল৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে বাংলায় আইনের শাসন ভেঙে পড়েছে বলে তোপ দেগেছে বিজেপি৷ উল্টোদিকে, রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইটে জানিয়েছেন, সরকার এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্দেশ খতিয়ে দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবেন।

    বাংলায় বিধানসভা ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করবে সিবিআই৷ কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এমনই রায় দিয়েছে৷ খুন, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো ঘটনাগুলির তদন্ত করবে সিবিআই৷ তবে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মামলাগুলির ক্ষেত্রে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত৷ সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে কাজ করবে সিট৷ হিংসা নিয়ে আরও কোনও অভিযোগ থাকলে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা যাবে বলেও জানিয়েছে হাইকোর্ট৷

    জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিল৷ সেই রিপোর্টে রাজ্যে ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে চলা অশান্তির দায় চাপানো হয়েছিল শাসকদলের ঘাড়ে৷ এদিন ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আদালতের রায় বেরনোর পরেই তৃণমূলকে আক্রমণ শানিয়ে ফের ময়দানে বিজেপি৷ দিল্লিতে দলের সদর দফতরে তড়িঘড়ি সাংবাদিক বৈঠকে বসেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র গৌরব ভাটিয়া৷ তৃণমূলকে তুলোধনা করে তিনি বলেন, ‘‘ভোটের ফল বেরনোর পর থেকে লাগাতার হিংসা চলছে বাংলায়৷ শাসকদল তৃণমূলের মদতেই হিংসা চলছে৷ যাঁরা তৃণমূলকে ভোট দেননি তাঁদের চিহ্নিত করে হামলা৷’’

    পশ্চিমবঙ্গে পুলিশকে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করছে তৃণমূল, এমনই অভিযোগ বিজেপির৷ এপ্রসঙ্গে বিজেপি মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘পুলিশের মদতেই হামলা৷ আক্রান্তরা থানায় গেলে এফআইআর নেওয়া হচ্ছে না৷ উলটে আক্রান্তদের ধমক দিচ্ছে পুলিশ৷ খুন আটকাতে পারেনি তৃণমূলের সরকার৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ব্যর্থ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷’’

    টুইটে রাজ্যকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও৷ তিনি লিখেছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের শাসকরা বাংলাকে রাজনৈতিক সহিংসতার পরীক্ষাগার বানিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের মাননীয় পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের আজকের রায় মানবাধিকার রক্ষায় ব্যর্থতার ইঙ্গিত দেয়। সুতরাং, এটা প্রমাণিত যে বিচার বিভাগ সংবিধান গণতন্ত্রের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ।’’

    এদিকে, রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ টুইটে লিখেছেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে প্রকাশ্য বিরোধিতা করা যায় না। ওঁরা নির্দেশ দিয়েছেন। সরকার এবং দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এই নির্দেশ খতিয়ে দেখে প্রতিক্রিয়া জানাবেন। সম্ভাব্য আইনি দিকগুলি বিবেচিত হবে। আমরা মনে করি NHRC-র রিপোর্ট সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। তবে HC নিয়ে এখন কোনও মন্তব্য করছি না।’’