বীরভূম জেলা জুড়ে মহাসমারোহে নবী দিবস পালন!

 

    নিজস্ব সংবাদদাতা: সমগ্র বিশ্বজুড়ে মহাসমারোহে পালিত হচ্ছে বিশ্ব নবী দিবস। আজ অর্থাৎ হিজরী সনের মাস অনুযায়ী ১২ ই রবিউল আউয়াল প্রিয় নবী হজরত মহম্মদের জন্মদিন। তাই এই দিনটিকে বলা হয় ঈদ মিলাদুন নবী।

    দেশের অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি বীরভূম জেলার মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম সহ বিভিন্ন এলাকায় সুসজ্জিত বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়।বিশ্ব নবী দিবসকে সামনে রেখে অনেক সংগঠন আগে থেকেই বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কর্মসূচি পালন করে চলেছে।যেমন সাফাই অভিযান,বস্ত্র দান, রক্তদান,হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে ফল বিতরণ,কোরান তেলাওয়াত,নাত- গজল থেকে শুরু করে ইসলামিক ক্যুইজ প্রতিযোগিতা সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়।জেলার দুবরাজপুর ব্লকের ইসলামপুরের সদর মসজিদ থেকে শুরু করে স্থানীয় ফকির বাবার মাজার শরীফ পর্যন্ত শোভাযাত্রায় ছিল সুসজ্জিত ট্যাবলো, ইসলামিক নাত পড়ে এবং সমোচ্চারিত ভাবে তকবীর দিতে দিতে সেখানে পৌঁছয়। এখানের শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন পীরে তরিকত হজরত আল্লামা মৌলানা সৈয়দ আজিমুদ্দিন নঈমী, হজরত নিজাম উদ্দিন নঈমী, হজরত ফহিম উদ্দিন নঈমী, হজরত সাহাব উদ্দিন নঈমী সহ ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষেরা।

    এদিন হাফিজ নুরুল আবসার জানান, প্রতি বছরের মত এবারেও বিশ্ব নবী দিবস পালন করা হচ্ছে। দুবরাজপুর শহর পরিক্রমার পর ফকির বাবার ময়দানে গিয়ে ফাতেহা করা হবে।পাড়ুই থানার খুষ্টিগিরী দরগাহ শরীফ একটি প্রসিদ্ধ পূণ্যভূমি। এখানেও প্রায় দুই হাজার নবী প্রেমিক চার চাকা গাড়ি, মোটরসাইকেল, টোটো যোগে পাড়ুই ও সদাইপুর থানার বিভিন্ন গ্রাম প্রদক্ষিণ করে বিশ্বনবী হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এঁর আবির্ভাব দিবস পালন করলেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী বেশ কিছু গ্রাম থেকে মিছিল খুষ্টিগিরী দরগাহ শরীফে উপস্থিত হয়। শোভাযাত্রা শেষে সকলকে তাবাররুক বিতরণ করা হয় দরগাহ শরীফের পক্ষ থেকে।

     

    বিকালবেলায় কচিকাঁচাদের সুরা ও গজল পাঠের একটি অনুষ্ঠান হয়।মাজার শরীফ প্রাঙ্গণে নবী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের ইসলামিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।এখানে ছিলেন খুষ্টিগিরী দরগাহ শরীফের বর্তমান মোতাওয়াল্লী ও সজ্জাদানেশীন হজরত সৈয়দ শাহ মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান কেরমানী সাহেব,স্থানীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম জনাব মওলানা শামসের রেজা প্রমুখ। খয়রাশোল ব্লকের বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম এলাকার মধ্যে ও যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে বিশ্ব নবী দিবস পালন করা হয়। গত রাতে মসজিদে মসজিদে এ উপলক্ষে মিলাদ মেহেফিল অনুষ্ঠিত হয়। রবিবার সুসজ্জিত বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। লোকপুর থানা এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে আগত শোভাযাত্রা স্থানীয় খন্নি গ্রামে বিরাজমান হজরত সৈয়দ শাহতাজ ওলীর মাজার শরীফ প্রাঙ্গণে জমায়েত হোন। সেখানে মাজার শরীফ জিয়ারত, মিলাদ মেহেফিল ও দোয়া খায়ের করা হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজায়ে মুস্তাফা লোকপুর থানা কমিটির সভাপতি হাফিজ সামিউল খান, সহসভাপতি মৌলানা নাজিমুদ্দিন আহমেদ সহ বিভিন্ন গ্রামে থেকে আগত বিশ্ব নবী দিবস পালন কমিটির সদস্য ও মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজন। কাঁকরতলা থানা এলাকার বড়রা ডাঙ্গালপাড়ায় ও অনুরূপ সুসজ্জিত বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। সেখানে নাত, গজল সহ বিশ্ব নবীর জীবন সম্পর্কে আলোকপাত করেন উপস্থিত স্থানীয় মসজিদের ইমাম গন।বিশ্ব নবীর যে বার্তা শান্তি, সেই শান্তি সমস্ত মানুষের মধ্যে যেন বিরাজ করেন। সেই হিসেবে দোয়া খায়ের ও করা হয় সমবেত ভাবে।রাজনগর ব্লক এলাকায় বিভিন্ন মুসলিম অধ্যুষিত গ্রাম থেকে শোভাযাত্রা স্থানীয় শাহবাজিয়া মাদ্রাসা তথা ঐতিহাসিক স্থান ইমামবাড়া প্রাঙ্গণে জমায়েত হোন এবং সুসজ্জিত বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা রাজনগর বাজার এলাকা পরিক্রমা করে শেষে উক্ত স্থানে ফিরে এসে বিশেষ দোয়া খায়ের ও সিন্নি বিতরণ করা হয়। উল্লেখ্য ইতিমধ্যে রাজনগর রাহে ইসলাম সমাজকল্যাণ সোসাইটির উদ্যোগে সাফাই অভিযান, রক্তদান দান, বস্ত্র দান,হাসপাতালে রোগীদের ফল বিতরণ করা হয়েছে এবং আগামী কাল ইসলামিক ক্যুইজ সহ অন্যান্য অনুষ্ঠান রয়েছে বলে জানান সোসাইটির সম্পাদক আবুল ফজল খান। এখানে শোভাযাত্রায় উপস্থিত ছিলেন রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুকুমার সাধু, রাজনগর থানার ওসি দেবাশীষ পন্ডিত সহ স্থানীয় মাদ্রাসা , মসজিদের ইমাম ও সোসাইটির সদস্য বৃন্দ সহ মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষজন। অপরদিকে জেলা সদর সিউড়ি শহরের মসজিদ মোড় থেকে সুসজ্জিত শোভাযাত্রা বের করে সিউড়ি ঈদগাহ ময়দানে জমায়েত হোন।সেখানে দোয়া খায়ের করা হয়।উপস্থিত ছিলেন সিউড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায় চৌধুরী, সিউড়ি পৌরসভার উপ পৌর প্রধান বিদ্যাসাগর সাউ, কাউন্সিলর কাজী ফয়জুদ্দিন সহ বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসার ইমাম গন।শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের সকলের হাতে জলের বোতল ও খেজুর তুলে দেন বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি।