|
---|
নিজস্ব সংবাদদাতা : হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুক মেসেঞ্জারে অচেনা নম্বরের ভিডিও কল । প্রথমবার না ধরলেও পরপর আসতেই থাকে ওই কল। ভুল করেও একবার ওই কল ধরে ফেললেই বিপদ। ব্ল্যাকমেল (Blackmail) চক্রের ফাঁদে পড়তে পারেন যে কেউ। সেই কারণেই সম্প্রতি পদক্ষেপ করেছে চন্দননগর পুলিশ। তাদের পক্ষ থেকে লাগাতার সতর্কতামূলক প্রচার করা হচ্ছে সাইবার অপরাধের ফাঁদে পা না দিতে। তাও অনেকে নিজেদের অজান্তে বা অজ্ঞতার কারণে এই ফাঁদে পা দিয়ে প্রতারিত হচ্ছেন। সাইবার (Cyber Crime) অপরাধ দিন দিন বাড়তে থাকায় চন্দননগর পুলিশের সাইবার ক্রাইম সেলকে থানায় পরিণত করা হয়েছে। যেখানে ওসি উৎপল সাহার নেতৃত্ব একটি দল অপরাধ দমনে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিন এই ধরনের অভিযোগ জমা পড়ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সাইবার ক্রাইম থানা থেকে সম্প্রতি ‘সাইবার লাইটস রিসক্ ভিশন” নামে একটি ইউ টিউব চ্যানেল প্রকাশ করা হয়েছে। যেখানে মোবাইল সিম কার্ড কেনা থেকে স্মার্ট ফোন ব্যবহার করলে কী কী ভাবে প্রতারণার শিকার হতে পারেন তা ছোট ছোট ভিডিওর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। ব্যাঙ্ক প্রতারণা, ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডে প্রতারণা, মোবাইলে অ্যাপ ডাউনলোড করিয়ে প্রতারণার মতো নানা ঘটনা নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে। একইরকমভাবে এই ধরনের ভিডিও কর করে প্রতারণা নিয়েও সতর্ক করা হচ্ছে।
কী ভাবে অপরাধ:
অভিযোগ, ফোন ধরলেই ফোনের স্ক্রিনে ভেসে উঠছে নগ্ন ভিডিও। কিছুক্ষণ পরেই কেটে যাচ্ছে সেই কল। তারপর শুরু হচ্ছে ব্ল্যাকমেল (Blackmail)। যাবতীয় সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই ভিডিও কলের অংশ ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে ভয় দেখিয়ে চাওয়া হচ্ছে টাকা। ইদানিং রাজ্যের নানা ব্যক্তির সঙ্গে এমনটাই হয়েছে। যেমনটা হয়েছে চন্দননগরের সিপিএম নেতা গোপাল শুক্লার সঙ্গে।
ঘটনাটি কী?
রবিবার গোপাল শুক্লা একটি মিটিংয়ে ছিলেন। সেখানে তাঁর ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি অচেনা নম্বর থেকে কল আসে। সেই কল রিসিভ করতেই এক মহিলার নগ্ন ছবি ভেসে ওঠে বলে অভিযোগ। ভিডিও কলে যেমনটা হয়, স্ক্রিনের এক কোণে গোপাল শুক্লার ছবিও ছিল। এই পরিস্থিতে গোটা কলটি রেকর্ড করে অপরাধীরা। গোপালের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যদিও ঘটনার পরে সোজা পুলিশের কাছে যান তিনি। প্রথমে চন্দননগর থানায় যান, সেখান থেকে চুঁচুড়ায় চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম থানায় যান তিনি। সোমবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেন। সিপিএম-এর নেতা গোপাল জানান, অচেনা নম্বরে ভিডিও কল রিসিভ করতেই বিপত্তি ঘটে। পায়েল রেড্ডি নামে এক জনের ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে কল আসে এবং ব্ল্যাকমেল করা হয়। তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা নিয়ে গোটা বিষয়টা জানা ছিল তাই টাকা দিইনি। তবে সামাজিক সম্মান বাঁচাতে যে কেউ এই ফাঁদে পা দিতে পারে। তড়িঘড়ি ফেসবুকে ঘটনাটি জানিয়ে বন্ধুদের সতর্ক করি। সাইবার থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’
পুলিশের তরফে তদন্তের পাশাপাশি সচেতনও করা হচ্ছে। এমন ঘটনা ঘটলে তৎক্ষণাৎ পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেও বলা হচ্ছে। এই ইউটিউব চ্যানেলটি দেখতে উৎসাহ দিচ্ছেন সাইবার থানার আধিকারিকরা।