2500 বাড়িতে খাবার পৌঁছে দিল মোহাম্মদবাজারের দুই সংস্থা

 

    নিজস্ব সংবাদদাতা, করোনা আতঙ্কে কাঁপছে বিশ্ব। ইউরোপের উন্নত দেশ গুলোও করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে। ভারতের মত উন্নয়নশীল দেশও করোনার থাবা থেকে মুক্ত নয়। এত দ্রুত হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে যে দেশব্যাপী লকডাউন ছাড়া অন্য কোন রাস্তা খোলা ছিল না সরকারের হাতে। কিন্তু লক ডাউনের ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছে পরিযায়ী শ্রমিক ও অন্যান্য প্রান্তিক সমাজের মানুষজন। যেহেতু এই শ্রেণির মানুষদের ক্রয়ক্ষমতা খুবই কম বা একেবারেই নেই তাই লকডাউন পিরিয়ডের জন্য পর্যাপ্ত খাবার মজুত রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এর ফলে খাদ্য সংকট সৃষ্টি হওয়ার প্রবল সম্ভবনা রয়েছে।

    এমতাবস্থায় এলাকার প্রান্তিক শ্রেণির মানুষদের খাদ্য সংকট মোচনের জন্য এগিয়ে এলেন বীরভূমের মহঃবাজারের সংহতি মহফিলের সভাপতি ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ মোশারফ হোসেন খান। খাদ্যসংকট মোচনের যাবতীয় পরিকল্পনা রূপায়ণসংক্রান্ত পরামর্শ দিয়েছে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন। এই মঞ্চ বাইরের রাজ্যে পড়ে থাকা পরিযায়ী বাঙালী শ্রমিকদের খাদ্যসংকটের সমস্যা সমাধান ও তথ্যপঞ্জি তৈরির কাজ দিবারাত্র করে চলেছে। এখনও অব্দি মহঃবাজার এলাকার ২৫০০ ক্রয়ক্ষমতাহীন পরিবারকে পরিবারপিছু ১০ কেজি চাল ও ১ কেজি মসুর ডাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংহতি মহফিলের সম্পাদক সেখ সিরাজ।

    এ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে মোশারফ হোসেন খানের পুত্র মোতাহার হোসেন খান বলেন, “এলাকার মানুষ না খেয়ে থাকবে এটা আমরা হতে দেব না। খাদ্যসংকটের ভয়াবহতার কথা চিন্তা করেই আমরা তড়িঘড়ি ২৫ টন চাল ও ১ টন মসুর ডাল বাজার থেকে ক্রয় করেছি।” মহঃবাজারের সোহা অনুষ্ঠান ভবনে দুইদিন ধরে চলছে প্যাকিং এর কাজ। এই কাজে হাত লাগিয়েছে সংহতি মহফিল ও বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের তরুণ সদস্যরা। প্রশাসনের সহযোগীতায় আগামী দিনকয়েক ধরে গ্রামে গ্রামে চাল ও মসুর ডাল তারাই বিলি করবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই বিলির কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানান মোশারফ হোসেন খান। একই সঙ্গে সংহতি মহফিলের সহঃ সম্পাদক রুহুল আমীন ১০০ টি ক্রয়ক্ষমতাহীন পরিবারের জন্য চিনি, লবন ও সরিষার তেলের ব্যবস্থা করতে পেরেছেন বলে জানিয়েছেন।

    এ প্রসঙ্গে বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সভাপতি অধ্যাপক সামিরুল ইসলাম বলেন, “আমরা যখন খাদ্যসংকটের বিষয়টি সংহতি মহফিলকে জানায় তাঁরা বিষয়ের গুরুত্ব বুঝে দিন দুয়েকের মধ্যে তড়িঘড়ি সবকিছু আয়োজন করে। মোশারফ হোসেন খান সাহেবের মত অর্থবান উদার মানুষেরা এই কাজে এগিয়ে এলে বাংলার প্রান্তিক মানুষদের খাদ্য সমস্যা আমরা মেটাতে পারব”। প্রান্তিক মানুষদের সমস্যা গভীর হলে ভবিষ্যতে আরও কিছু পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার লক্ষ্য রয়েছে বলে জানালেন বাংলা সংস্কৃতি মঞ্চের সদস্য আশরাফুল আমীন। এই রকম বাস্তবমুখী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকার মানুষ।