|
---|
আজিজুর রহমান,গলসি : গলসি ১ নং ব্লকের তৃণমূলের রাজনীতি নিয়ে চরম বিভ্রান্তিতে পরছেন দলের সাধারন কর্মীরা। এমনই অভিযোগ তুললেন ব্লকের উচ্চগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য গদাধর ঘোষ। তাছাড়াও ব্লকে বিভিন্ন জায়গায় কান পাতলেই তৃণমূলের তিনটি গোষ্ঠী আছে বলে জানতে পারা যাচ্ছে। গদাধর বাবুর দাবী, ব্লক জুড়ে যে রাজনীতি চলছে তাতে তাদের মতো বহু সাধারণ মানুষ চরম বিভ্রান্তিতে পরছে। তারা কার মিটিংয়ে যাবেন আর কার মিটিংয়ে যাবেন না সেই নিয়েই চিন্তায় পরেছেন। তার দাবী, ব্লকে তিন চারটি গোষ্ঠী কারনে আগামী পঞ্চায়েত ভোটে এর ব্যাপক প্রভাব পরবে। সেখ সাইদুর নামে আর এক তৃণমূল কর্মী বলেন, দলের উদ্ধতোন নেতৃত্বকে এইগুলি দেখা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। যার সংগঠন বড় আছে তাকে দায়িত্ব দেওয়া উচিত। না হলে তাদের মত সাধারণ কর্মীরা বিভ্রান্তিতে পরছেন। এদিকে আগামী ২১ জুলাই এর কর্মসুচীকে সামনে রেখে ব্লক জুড়ে শুরু হয়েছে কর্মীসভা। সেই নিয়ে নিজের গোষ্ঠীর লোকজন নিয়ে ব্লকের বুদবুদ, শিড়রাই, রাইপুর, কোলকোল, কৃষ্ণরামপুর, গলিগ্রাম সহ বিভিন্ন জায়গায় কর্মসুচি করছেন দলের নেতারা। যা স্থানীয় বিধায়ক নেপাল ঘরুই এর কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, গত বিধানসভা নির্বাচনে সকলে মিলিত ভাবে কাজ করেছেন। বর্তমানে দলীয় নির্দেশে ছোট ছোট অনুষ্ঠান করে দলের বার্তাকে প্রতি গ্রামে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। যৌথ্য ভাবে কর্মীসভা করলে সব জায়গা তারা দলের বার্তাকে পৌছেতে পারবেন না। তার দাবী গলসি ১ নং ব্লকে তাদের কোন গোষ্ঠীদন্দ নেই। সবার সাথে সবার যোগাযোগ আছে। আগামী সাতেরা তারিখে তাদের একটি বড় মিছিল আছে রামগোপালপুর এলাকায়। সেখানে তিনি ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জ্জী ছাড়াও সবাই থাকবেন। তবে ওইদিন তাদের আরও চারটি অঞ্চলে কর্মসুচী রয়েছে। তৃণমূল যুব, তৃণমূল সংখ্যালঘু সেল ও বিভিন্ন শাখা সংগঠন সেই পোগ্রাম গুলি করবেন। তিনিও সেই চারটি পোগ্রামেও যাবেন। এদিকে ব্লকের গলিগ্রাম মথুরাপুরে নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে দু দফায় কর্মীসভা করতে দেখা গেছে দলীয় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিকে। গত ১১ এই জুলাই গলসির গলিগ্রাম মথুরাপুরে কর্মী সভা করেন এলাকার বিধায়ক নেপাল ঘরুই। যেখানে হাজির ছিলেন, ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি পার্থ সারথি মন্ডল ও পঞ্চায়েত সমিতির সহসভাপতি অনুপ চ্যাটার্জ্জী ও জেলা তৃণমূল সংখ্যালঘু সেলের সহসভাপতি মহম্মদ মোল্লা। তবে সেই মিটিংয়ে বর্তমান ব্লক তৃণমূল সভাপতি ও প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতির দেখা মেলেনি। ঠিক তার একদিন পর ১৩ ই জুলাই ওই সভাস্থলের একটু দুরেই কর্মীসভা করলেন ব্লক সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জ্জী। তবে সেই সভাতে দেখা যায়নি দলের বিধায়ক থেকে অন্য নেতাদের। ওই দিনই বিধায়ক ও যুব সভাপতিকে ব্লকের আটপাড়া গ্রামে ও প্রাক্তন ব্লক সভাপতিকে তার নিজ এলাকায় ও পুরসাতে কর্মীসভা করতে দেখা যায়। আর এর ফলেই কি সাধারণ কর্মীরা বিভ্রান্তিতে পরছেন ? প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জাকির হোসেন বলেন, আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। এখানে কোন গোষ্ঠী দন্দ নেই। কয়েকদিন পূর্ব পারাজের মিটিংয়ে সাধারণ তৃণমূল কর্মী সহ সবাই ছিলেন বলেই অতো মানুষের সমাগম হয়েছিল। আবার সাতেরো তারিখে রামগোপালপুরের মিছিলে আমি ও ব্লক সভাপতি থাকছি। বিধায়কও থাকবেন। ঘর চালাতে নিজেদের মধ্যে একটু আধটু সমস্যা আছে তবে সেটা এমন কিছু নয়। এই বিষয়ে ব্লক তৃণমূল সভাপতি জনার্দ্দন চ্যাটার্জ্জী বলেন, বিধায়ক তিনটি ব্লকে পোগ্রাম করছেন। তাই সব জায়গায় উনি আসতে পারছেন না। আমি আমার মতো পোগ্রাম করছি। যে সব কর্মীরা ভাবছেন কার মিছিলে যাব কার মিছিলে যাব না তাদের বলছি, আপনার ভুল রাগ অভিমান ভুলে আসুন একসাথে চলি। একসাথে চলার মজাই আলাদা। তার হুসিয়ারী, তবে কেউ যদি গ্রামে গ্রামে গোষ্ঠী করে দাঙ্গা লাগায় তাহলে আমি মানবো না। তাতে আমাকে আপনারা গোষ্ঠীবাজ বলুন না কেন। এ বিষয়ে গলসি এক নম্বর ব্লক তৃণমূল যুব সভাপতি পার্থ সারথি মন্ডলকে ফোন করা হলে তিনি ফোন না তোলায় তার প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে জেলা সংখ্যালঘু সেলের সহ সভাপতি মহম্মদ মোল্লা বলেন, আমরা তো ব্লক সভাপতির বাইরে দল করিনা। ব্লকের সভাপতি আমন্ত্রণ করলে রামগোপালপুরের মিছিলে অবশ্যই যাবো।