সরকার বলেছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে, তালেবান জোর করে রাজধানী কাবুল দখল করবে না

নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের চারপাশ ঘিরে ফেলেছে সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠী তালেবান। পরিস্থিতি থমথমে। সরকার বলছে, শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। তালেবানও জানিয়েছে, তারা জোর করে রাজধানী কাবুল দখল করবে না।

    আফগানিস্তানের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তালেবানের যোদ্ধারা দেশটির প্রেসিডেন্ট প্যালেসে পৌঁছে গেছেন। সরকারের কাছ থেকে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে প্রেসিডেন্ট প্যালেসে গেছেন তারা। জার্মানিতে নিযুক্ত আফগানিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত আলী আহমদ জালালিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

    খবরে বলা হয়েছে, আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করবেন এবং তালেবানদের ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন। এর আগে, একজন তালেবান মুখপাত্র বলেছিলেন যে, তালেবানরা রাজধানীর উপকণ্ঠে প্রবেশ করার পর ‘শান্তিপূর্ণভাবে কাবুল শহর হস্তান্তরের অপেক্ষা’ করবে। কাতারের আল-জাজিরা ইংরেজি স্যাটেলাইট নিউজ চ্যানেলে সুহেল শাহীন এই মন্তব্য করেছেন। তিনি তার বাহিনী এবং সরকারের মধ্যে কোন সম্ভাব্য আলোচনার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিতে অস্বীকার করেছিলেন। আফগান কর্মকর্তারা তালেবানদের রাজধানীর কালাকান, কারাবাগ এবং পাগমান জেলায় থাকার পর তিনি এ মন্তব্য করেন।

    তালেবান যোদ্ধারা রবিবার আফগান রাজধানীর উপকণ্ঠে প্রবেশ করে, দেশটির উপর তাদের অবস্থান আরও শক্ত করে তোলে। কারণ, আতঙ্কিত শ্রমিকরা সরকারি অফিস থেকে পালিয়ে যায় এবং মার্কিন দূতাবাসে হেলিকপ্টার অবতরণ করে। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দেশব্যাপী আক্রমণে তালেবানরা আফগান নিরাপত্তা বাহিনীকে পরাজিত করেছে। তালেবানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা জোর করে কাবুল দখল করবে না। তবে যোদ্ধাদের অবস্থান নিতে বলা হয়েছে। তালেবান যোদ্ধারা কাবুলের চারপাশ থেকে শহরটিতে ঢুকতে শুরু করেছে এমন খবর আসার মধ্যে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টোলো টিভিতে সম্প্রচারিত এক ভিডিওতে কথা বলতে দেখা গেছে আফগানিস্তানের ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল সাত্তারকে।

    আফগান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ওই ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, অন্তর্বতীকালীন সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে। এমন কথা জানিয়ে তিনি বলেন, রাজধানী শহর কাবুলে কোনো ধরনের হামলা হবে না। আফগান সরকারি কর্মকর্তাদের বরাতে মার্কিন বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, তালেবানের আলোচকরা ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রস্তুতি নিতে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে যাচ্ছেন। এতে করে চাপের মুখে গনি সরকারের ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া যে শুরু হয়েছে তা স্পষ্ট।

    কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানাচ্ছে, তালেবানের দাপটে কাবুলের বাসিন্দাদের মধ্যে যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছিল তা অনেকাংশে কেটে গেছে। সবাই যার যার বাড়িতে অবস্থান করছেন। রাস্তায় এখন তেমন কোনো যানবাহন দেখা যাচ্ছে না। তালেবানের মুখপাত্র সুহাইল শাহিন বলেছেন, তালেবান এখনো কাবুলে ঢোকেনি। তবে যোদ্ধাদের কাবুলের প্রবেশদ্বারগুলোতে থাকতে বলা হয়েছে। পরবর্তী পরিস্থিতি নির্ভর করছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরে সরকারের সহযোগিতার ওপর। রাজধানী কাবুলের উপকণ্ঠে তালেবান যোদ্ধাদের দেখা যাওয়ার খবর পাওয়ার পর কাবুল ভয় ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিবিসির এক প্রতিনিধি বলছেন, কিছু সরকারি অফিস খালি করতে বলা হয়েছে এবং দোকানপাট বন্ধ। এর কোনো কারণ জানানো হয়নি।