প্রায়ই দেখা গিয়েছে, সময়ে সেই অর্থ খরচ করতে না পারায় টাকা ফিরে গিয়েছে কর্মসংস্কৃতি বদলাতে নতুন পদ্ধতি নিল হাওড়া পুরসভা

নিজস্ব সংবাদদাতা : বিভিন্ন দফতরের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রতি বছর যে অর্থ বরাদ্দ হয়, তা অনেক ক্ষেত্রেই সময়ে খরচ করা হয় না বা কাজ শেষ হয় না। ফলে, থমকে থাকে উন্নয়ন। এই কর্মসংস্কৃতি বদলাতে নতুন পদ্ধতি নিল হাওড়া পুরসভা। স্থির হয়েছে, এখন থেকে বরাদ্দ অর্থ খরচের ভিত্তিতে বিভিন্ন দফতরকে পারফরম্যান্স গ্রান্ট বা কর্মদক্ষতা অনুদান দেবে পুরসভা। অর্থাৎ, যে দফতর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বরাদ্দ অর্থ কাজে লাগাবে, কাজে উৎসাহিত করতে সেই দফতরকে অতিরিক্ত অর্থ অনুদান দেওয়া হবে। প্রকল্পের সাফল্যের বিভিন্ন দিক বিচার করে ঠিক হবে অনুদানের পরিমাণ। সেই অঙ্ক এক কোটি থেকে দু’কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষ থেকেই এই পদ্ধতি অনুসরণ করবেন পুর কর্তৃপক্ষ।পুরসভার যে কোনও প্রকল্প রূপায়ণের জন্য প্রতি বছর বাজেটে অর্থ বরাদ্দ হয়, অথবা কোনও প্রকল্পের জন্য অর্থ কমিশনের বরাদ্দ করা টাকা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খরচ করার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া থাকে। তবে হাওড়া পুরসভার ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা গিয়েছে, সময়ে সেই অর্থ খরচ করতে না পারায় টাকা ফিরে গিয়েছে। এমনও হয়েছে, ইঞ্জিনিয়ারিং, রাস্তা, সিভিল দফতর কাজ শেষ করতে না পারায় ২৫ শতাংশ টাকা ফেরত চলে গিয়েছে। ধরা যাক, কোনও প্রকল্পের বরাদ্দকৃত অর্থ ২০ কোটি টাকা। কিন্তু যে দফতরের জন্য অর্থ বরাদ্দ হয়েছে, তার ইঞ্জিনিয়ার, অফিসার বা কর্মীদের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই মূলত টাকা খরচ করা যায় না। এ দিকে অর্থবর্ষের সময়সীমা পেরিয়ে যায়। আবার প্রকল্পের কাজও শেষ হয় না।পুরসভা সূত্রের খবর, এর ফলে বহু উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ হয়ে যায় মাঝপথে। যেমন, বছর চারেক আগে ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামের উন্নয়নে রাজ্য ক্রীড়া দফতরের দেওয়া টাকা সময়ে খরচ করতে না পারায় বেশির ভাগটাই ফেরত চলে হয়েছে। অথচ স্টেডিয়ামের সৌন্দর্যায়ন শেষ হয়নি। রাস্তা মেরামতির টাকাও সময়ে খরচ করতে না পারায় ফিরে গিয়েছে। কাজও শেষ হয়নি। কিন্তু প্রকল্পের কাজ সময়ের মধ্যে শেষ হয় না কেনপুরসভার এক পদস্থ অফিসার বলেন, ‘‘অনেক সময়ে টাকা আসার পরে প্রকল্পের ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরি করতে সময় লেগে যায়। এর পরে রয়েছে দরপত্র ডাকা-সহ আরও কিছু সময়সাপেক্ষ কাজ। সেগুলি করতে গিয়ে দেখা যায়, সময় পেরিয়ে গিয়েছে। ফলে বরাদ্দ টাকা ফেরত দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।’’

    পুরসভার চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ না করা বা বরাদ্দ অর্থ খরচ করতে না পারার কর্মসংস্কৃতিকেই পাল্টাতে চাইছি। না হলে উন্নয়নের গতি থমকে যাচ্ছে। কাজে দফতরগুলির উৎসাহ বাড়াতে চালু করা হচ্ছে কর্মদক্ষতা অনুদান। যে দফতর বরাদ্দ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করবে, সেই দফতরগুলিকে নতুন প্রকল্পের জন্য খুব বেশি হলে ১ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হবে।’’