|
---|
নিজস্ব প্রতিবেদক : নিজের বাইকটাকেই অ্যাম্বুল্যান্স বানিয়ে ফেলেছিলেন গ্রামের অসুস্থদের সেবা করতে, হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাতায়াতে অ্যাম্বুলেন্সের পরিপূরক হিসেবে। আজ তিনিই অর্থের অভাবে বিনা চিকিৎসায় ধুঁকছেন। তিনি আর কেউ নন উত্তরবঙ্গের বাসিন্দা সেই পদ্মশ্রী করিমূল হক। চিকিৎসার অভাবে প্রায় হারাতে বসেছে দৃষ্টিশক্তি। বাধ্য হয়ে চিকিৎসার খরচ জোগাতে কেন্দ্র, রাজ্য ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন পদ্মশ্রী করিমুল হক।
জলপাইগুড়ির রাজাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধলাবাড়ির বাসিন্দা করিমুল হক। একটা সময়ে তাঁর এলাকায় কোনও অ্যাম্বুল্যান্স ছিল না। সেই কারণে সময় মতো অসুস্থ মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি তিনি। ফলে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছিল করিমুলের মায়ের। এরপর গ্রামবাসীদের কথা ভেবে নিজের বাইকটাকেই অ্যাম্বুল্যান্স বানিয়ে ফেলেছিলেন করিমুল। সেই খবর পৌঁছে গিয়েছিল প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপতি, সকলের কাছেই। ফলস্বরূপ ২০১৭ সালে পদ্মশ্রী সম্মান পেয়েছিলেন ধলাবাড়ির করিমুল। তবে শুধু অ্যাম্বুল্যান্সের মাধ্যমে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দিয়েই ক্ষান্ত হননি তিনি। গ্রামের বাসিন্দাদের কথা ভেবে বাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসারও ব্যবস্থা করেছিলেন। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আবাসও তৈরি করেছিলেন। আর সেই করিমুল হকই এখন নিজের জন্য চরম সমস্যার সম্মুখীন।
জানা গিয়েছে, বিগত তিন মাস ধরে চোখের সমস্যায় ভুগছেন তিনি। গত মাসে ডান চোখে অস্ত্রোপচারও হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, চোখে বাসা বেঁধেছে বিরল রোগ। এখনও পর্যন্ত ভারতের মাত্র ১২ জন এই বিরল অসুখে আক্রান্ত। এই রোগের চিকিৎসাও যথেষ্ট ব্যেয় সাপেক্ষ। ইঞ্জেকশন পিছু খরচ ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। আর সেই খরচ বহণ করার সামর্থ্যও নেই করিমুলের। এই পরিস্থিতিতেই আগামী ২৭ এ আগষ্ট চিকিৎসার জন্যে হায়দরাবাদ যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন করিমুল। কিন্তু খরচ বহণ করার সাধ্য নেই, তাই প্রশাসনের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু আদৌ মিলবে কি সাহায্য? আদৌ কি আগের মত চোখ ভালো হয়ে
যাবে? সেই চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে করিমুল ও তার পরিবারের।