এনআইএ-র তদন্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেলেন আইনজীবী আবু বকর সাব্বাক

এনআইএ-র তদন্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেলেন আইনজীবী আবু বকর সাব্বাক

     

     

    নতুন গতি ওয়েব ডেস্ক: জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনআইএ-র একটি স্পেশাল কোর্ট ১৫ জন ব্যক্তিকে ১০ বছরের কঠোর কারাবাস ও জরিমানার নির্দেশ দিয়েছে। ২০১৫ সালে আইএস এ নিয়োগ ও ভারতের বুকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নিযুক্ত থাকার অভিযোগে ১৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযোগ, সিরিয়া-ভিত্তিক সশস্ত্র দল আইএস এর মিডিয়া প্রধান ইউসুফ-আল-হিন্দির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল তাদের। এনআইএ-র বিশেষ আদালত এ সংক্রান্ত রায় প্রদান করেছে ১৬ অক্টোবর। ১৫ জন অভিযুক্ত দোষ স্বীকার করলেও অভিযুক্ত ১৬তম ব্যক্তি ইমরান খান অপরাধের কথা কবুল করেননি।

     

    ইমরানের আইনজীবী আবু বকর সাব্বাক এনআইএ-র তদন্ত প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। সাব্বাক বলেন, ‘আমার মক্কেল ছাড়া এই মামলায় সকলেই অপরাধ স্বীকার করেছে। কারণ হল, তারা অপরাধী ছিল না, এনআইএ চাপ প্রয়োগের নীতি নিয়ে এটা করিয়েছে। এরকমটা এখন অনেক মামলাতে দেখা যাচ্ছে, যেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও তারা দোষ স্বীকার করছে।’ বেআইনি ক্রিয়াকলাপ বন্ধে আইন বা ইউএপিএ মামলাগুলির ট্রায়াল সর্বদাই অত্যন্ত ধীর গতিতে হয়ে থাকে।

     

    এই মামলায় অভিযুক্তরা জেল থেকেও সহজে বের হতে পারেন না। এমনও হয়েছে যে, অনেকে ১০-১৫ বছর জেল খাটার পর বেকসুর প্রমাণিত হয়ে খালাস পেয়েছেন। অনেকক্ষেত্রে ২০ বছরও জেল খাটতে হয়েছে কোনও নির্দোষ ব্যক্তিকে। ‘তাই যখন এনআইএ বা আইনজীবীরা অভিযুক্তদের দ্রুত মুক্তির আশা দেখায়, অনেকেই দোষ স্বীকারে রাজি হয়ে যায়’, বলেন সাব্বাক। আইনজীবী সাব্বাকের কথা স্পষ্ট করলে বলতে হয়, ১৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে একজনের ১০ বছরের কঠোর কারাবাস হল, ৩ জনের ৭ বছরের জেল হল, একজনের হল ৬ বছরের জেল, আর বাকিদের প্রত্যেকের হল পাঁচ বছরের জেল।

     

    এর অর্থ, ১০ জন ইতিমধ্যেই তাদের সাজা ভোগ করেছেন বা দ্রুত মুক্তি পেতে চলেছেন। বাকি চারজন আগামী এক বা দুই বছরে মুক্তি পাবেন। শুধুমাত্র একজনই এমন রয়েছেন যাকে আরও পাঁচ বছর জেলে থাকতে হতে পারে। সাব্বাকের কথায়, ‘আইন ব্যবস্থা একটি উপহাসে পরিণত হয়েছে। অভিযুক্তরা যে আসলে জঙ্গি তার কোনও প্রমাণই নেই। অভিযুক্তরা জেল থেকে দ্রুত মুক্তির পাওয়ার জন্য ও এনআইএ-র চাপের মুখে অপরাধ স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে। অভিযুক্তদের জেলে রেখে আদালতে জেতাটাই এনআইএ-র আগ্রহ।’ বিগত এক মাসের মধ্যে সন্ত্রাসবাদে অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তির অপরাধ স্বীকারের দ্বিতীয় ঘটনা এটি।

     

    বিগত মাসে বর্ধমান বিস্ফোরণ মামলায় তিনজন অভিযুক্ত কলকাতার এনআইএ-র বিশেষ আদালতে দোষ স্বীকার করে অ্যাপলিকেশন জমা দিয়েছিল। বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে সেই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল ৩১ জনকে। এদের মধ্যে থেকে ২৪ জনই এখনও পর্যন্ত অপরাধ স্বীকার করেছে। এনআইএ-র বিশেষ আদালত তাদের প্রত্যেককেই পাঁচ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছে।