পেশাদার ফুটবলে নিজের হাজারতম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখলেন লিওনেল মেসি

নিজস্ব সংবাদদাতা:  পেশাদার ফুটবলে নিজের হাজারতম ম্যাচকে স্মরণীয় করে রাখলেন লিওনেল মেসি (Lionel Messi)। অস্ট্রেলিয়ার রক্ষণকে নিয়ে কার্যত ছেলেখেলা করলেন। নিজে গোল করলেন। সাজিয়ে দিলেন গোলের জন্য অতুলনীয় কিছু বল। যদিও সুযোগ নষ্টের প্রদর্শনী করে ব্যবধান বাড়াতে পারেননি আলেহান্দ্রো পাপু গোমেস, লউতারো মার্তিনেজরা। শেষ ষোলোর ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-১ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইানালে পৌঁছে গেল আর্জেন্তিনা। শেষ আটের ম্যাচে মেসিদের প্রতিপক্ষ মেম্ফিস দেপাই-কোডি গ্যাকপোদের নেদারল্যান্ডস। যাঁরা শনিবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছেছেন।

     

    ম্যাচের শুরু থেকেই ছিল আর্জেন্তিনার দাপট। পরিসংখ্যান বলছে, ম্যাচে ৫৪ শতাংশ বলের দখল ছিল আর্জেন্তিনার। ৩৪ শতাংশ সময়ে বল ছিলে অস্ট্রেলিয়ার দখলে। তবে গোল পাচ্ছিল না আর্জেন্তিনা। অস্ট্রেলিয়া রক্ষণভাগ আঁকড়ে থাকায় বারবার অজি বক্সে ঢুকেও মারণকামড় দিতে পারছিলেন না মেসিরা।তবে সেই ছবিটা বদলে গেল ম্যাচের ৩৫ মিনিটে। অস্ট্রেলিয়া বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় আর্জেন্তিনা। মেসির মারা ফ্রি কিক হেড দিয়ে প্রাথমিকভাবে বিপন্মুক্ত করেন অজি ফুটবলার সাউটার। কিন্তু শীঘ্রই বলের দখল ছিনিয়ে নেয় আর্জেন্তিনা। আগের ম্যাচের অন্যতম নায়ক ম্যাক অ্যালিস্টার বল কেড়ে নিয়ে পাস বাড়ান বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়া নিকোলাস ওতামেন্দিকে। আর্জেন্তিনা রক্ষণভাগের স্তম্ভ ওতামেন্দি মেসির উদ্দেশে বল বাড়ান। প্রায় ১৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের মাটি ঘেঁষা ভলিতে গোল করেন মেসি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে নিজের অষ্টম গোল। সব মিলিয়ে চলতি বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় গোল। ১-০ এগিয়ে যায় আর্জেন্তিনা।

     

    গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে পেনাল্টি নষ্ট করেছিলেন মেসি। সেই আক্ষেপ যেন এদিন সুদে আসনে পুষিয়ে দিলেন দুরন্ত ফুটবল দিয়ে। একবার তো অস্ট্রেলিয়ার পাঁচ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিলেন। যা দেখে ধারাভাষ্যকারেরা পর্যন্ত বলে উঠলেন, পঁয়ত্রিশ কোথায়, এ তো যেন পঁচিশের মেসি!

     

    ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ৫৭ মিনিটে অস্ট্রেলীয় গোলকিপারের ভুলে দ্বিতীয় গোল আর্জেন্তিনার। সতীর্থের ব্যাক পাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি অজি গোলরক্ষক ম্যাট রায়ান। রদ্রিগো দি পল বল তাড়া করতেই রায়ান তা জমা দেন হুলিয়ান আলভারেজের পায়ে। সেই বল জালে জড়িয়ে ২-০ করেন সুযোগসন্ধানী আলভারেজ।

     

    ম্যাচের ৭৭ মিনিটে অবশ্য গতির বিরুদ্ধে ২-১ করে দেয় অস্ট্রেলিয়া। ক্রেগ গুডউইনের জোরাল শট এনজো ফার্নান্দেজের শরীরে লেগে গোলে ঢুকে যায়। আত্মঘাতী গোলের পর স্কোর দাঁড়ায় ২-১। যদিও গোল খেয়ে তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করে আর্জেন্তিনা। মেসি চলতি বিশ্বকাপের সেরা খেলাটা সম্ভবত খেললেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই। পরিবর্ত হিসাবে নামা লউতারো মার্তিনেজকে এমন সব বল সাজিয়ে দিলেন যে, সেখান থেকে গোল না করাটাই বরং কঠিন। কিন্তু সব সুযোগই নষ্ট করলেন মার্তিনেজ। অন্তত দুবার গোলকিপারকে একা পেয়েও লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেন। তা নাহলে ব্যবধান বাড়ত।

     

    ম্যাচের একেবারে শেষ লগ্নে একটাই সুযোগ পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। গারাং কুয়োলের শট এগিয়ে এসে দুর্দান্তভাবে বাঁচিয়ে দেল আর্জেন্তিনীয় গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজ। গোটা ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া আর সেভাবে কোনও সুযোগ পায়নি।