চাঁচলে শুরু অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রম আবাসনের কাজ, জমিদাতাকে প্রশংসা মহকুমা প্রশাসনের

উজির আলি, মালদা, ০৭ মার্চ: এবার অসহায় ও অবহেলিত বয়স্কাদের জন‍্য নতুন ঠিকানা হবে “আঁচলে”। অনাথ শিশুদেরও ঠাঁই হবে সেখানে। তারই লক্ষে মালদহের চাঁচল-হরিশ্চন্দ্রপুর রোডের রহমতপুরে একটি আবাসের কাজ শুরু করল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন “নতুন আলো”।
রবিবার ছিল নির্মান কাজের শুভ শিলান‍্যাস।অনুষ্ঠানে সামিল হয়েছিলেন কনুয়া হাই মাদ্রাসার প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক, নয়াটুলি হাইমাদ্রাসার সহ শিক্ষক ওসমান গনি, বিএসএফ জওয়ান আতাউর রহমান ও সমাজসেবক আব্দুল সাত্তার, জালাল আহমেদ, সাদিয়া আক্তার সহ প্রমুখরা।

    উল্লেখ্য, সন্তান সামাজিক কাজে যুক্ত।দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল অনাথ ও অবহেলিত বাবা মা দের একটা আশ্রয় স্থল গড়ে তোলা।সেই মোতাবেক বাবার কাছে তাদের সংস্থার জন‍্য জমির জন‍্য আবদার করে বসে ছেলে।ছেলে সফিকুলের দাবি মেনে চাঁচল-হরিশ্চন্দ্রপুর ৮১ নং জাতীয় সড়কের ধারে রহমতপুরে চার কাঠা জমি আঁচল পরিবারকে মুক্ত হস্তে দান করেছে বলে জানিয়েছেন জমি দাতা রহিম আলি।তিনি জানিয়েছেন ছেলের আবদার মেটাতে নয়!বর্তমান বাজার দরে আঠারো লক্ষ টাকা মূল‍্যের জমি অবহেলিত মানুষ ও অনাথ শিশুদের মাথা গোজার ঠাঁই টুকু হোক সেটাই মূল উদ্দেশ‍্য।
    রবিবার শিলান‍্যাসের পরেই আশ্রমের ভিত্তি স্থাপন কাজ শুরু হয়েছে।কাজ চলছে জোর কদমে।শিলান‍্যাস করেন জমিদাতা রহিম আলি নিজেই।
    এদিন শিলান‍্যাস অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নয়াটুলি হাইমাদ্রাসার শিক্ষক বলেন,ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় পৃথিবীর প্রথম বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল প্রাচীন চীনে।ঘরছাড়া অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রের এই উদ‍‍্যোগ বিভিন্ন জেলায় লক্ষ‍্য করা গেছে।পরিবার থেকে বিতাড়িত বৃদ্ধদের জন্য চাঁচল মহকুমায় প্রথম আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করে ইতিহাসে আলাদা জায়গা দখল করে নিল এই “আঁচল”।এবং জমি দাতাকেও কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।এমন উদ‍্যোগের খবর শুনে আঁচল পরিবারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন চাঁচলের মহকুমা শাসক সঞ্জয় পাল।সেখানে শিলান‍্যা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ ছিল মহকুমা শাসকের।নির্বাচনী অফিসিয়াল কাজের জন‍্য উপস্থিত হতে পারেননি।তবে চাঁচলে এমন উদ‍্যোগে স্বাগতম জানিয়েছেন মহকুমা শাসক।
    আঁচল পরিবারের সদস‍্য আলমগীর খাঁন ও সফিকুল ইসলাম জানান,বৃদ্ধের এমন সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। সাথে সাথে তাদের প্রতি অবহেলার মাত্রা বেড়ে চরম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।যার ফলে সূচিত হয়েছে বৃদ্ধাশ্রম নামের কলঙ্কজনক অধ্যায়। চাঁচল মহকুমার কোনো এলাকায় তাদের মাথা গোজার ঠাঁ নেই। এমনকি অনেক অনাথ পথ শিশু অবহেলায় ঘুরছে। তাদের কথা মাথা রেখে এই ক্ষুদ্র প্রয়াস আমাদের। তবে তারা জানিয়েছেন, আবাসের নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। শীঘ্রই কাজ সমপন্ন হবে।আপাতত ২০ টি শয‍্যার আশ্রম হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।এদিন আঁচল বৃদ্ধাশ্রমের কাজ শুরু হওয়াতে গোটা চাঁচল মহকুমা বাসীর মুখে শোনা যাচ্ছে “মানবতা এখনো বেঁচে আছে”।সমাজের বুকে বেঁচে অটুট থাকুক মানবিকতা সকলেই কামনা করে।