|
---|
মালদা; ০৬ফেব্রুয়ারি: বেহাল দশা রাস্তার। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়েও শুরু হচ্ছে না রাস্তার কাজ। তাই টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালো গ্রামবাসীরা। এদিকে কাজ শুরু না হওয়ার জন্য, স্থানীয় তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে শাসকদলের পঞ্চায়েতের প্রধান এবং উপ-প্রধানকে। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। শাসক দলকে তীব্র নিশানা সানিয়েছে বিজেপি। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূল।
রাস্তার কাজ শুরুর দাবিতে পথ অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ভোট বয়কটের ডাক দিলেন গ্রামবাসীরা। রবিবার মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটেছে। গ্রাবাসীদের অভিযোগ দীর্ঘ এক বছর আগে রাস্তা নির্মাণের জন্য পঞ্চায়েত থেকে এন-আর-জিএস প্রকল্পের ৬ টি বোর্ড লাগানো হলেও এখনো পর্যন্ত রাস্তার কাজ শুরু হয়নি। পঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধান ও স্থানীয় প্রশাসনকে বারংবার জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।স্বল্প বৃষ্টি হলেই রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে যায়।রাস্তা দিয়ে চলাফেরা করা অযোগ্য হয়ে পরে। কোন গাড়ি যাতাযাত করলেই দুর্ঘটনার কবলে পরে। রাস্তায় জল জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।রাস্তার পচা নোংরা জল বাড়ির ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে।কঙ্কালসার কর্দমাক্ত রাস্তার জন্য গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স ও দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারে না।বিয়ে অনুষ্ঠানে বর ও কনেকে কোলেতে করে রাস্তা পারাপার করাতে হয়।পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাস্তার কাজ শুরু না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা দ্রোপদী দাস বলেন, কোন প্রসূতিকে হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার জন্য এম্বুলেন্স ঢুকতে পারছে না গ্রামে। প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। এরকম হলে আমরা ভোট বয়কট করব।”
স্থানীয় বাসিন্দা শাহজাহান আলী, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রধান বারবার বলছে রাস্তার কাজ হবে কিন্তু এখনো শুরু হয়নি। এই রাস্তা দিয়ে কুশিদা হয়ে বিহার পর্যন্ত আমরা যাতায়াত করি। প্রচন্ড সমস্যা হচ্ছে। গ্রামে কারুর বিয়ে হলে বরযাত্রীর গাড়ি ঢুকতে পারছে না। অ্যাম্বুলেন্স বা দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারছে না। দ্রুত রাস্তার কাজ শুরু না হলে আমরা ভোট বয়কট করব।”
পঞ্চায়েত সদস্য আতিকুল ইসলাম জানান বারবার পঞ্চায়েত প্রধানকে জানানো সত্ত্বেও কোনো কথা শুনছে না।এই রাস্তা নিয়ে তাকে বারবারে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে।রাস্তার কাজ দ্রুত শুরু করার দাবি জানিয়ে বিডিও র নিকট লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন তিনি।
বিজেপি জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল কটাক্ষ করে বলেন, সব জায়গায় পঞ্চায়েত জুড়ে অরাজকতা চলছে। তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যরা কাজ না করতে পেরে ক্ষোভ জানাচ্ছে। কাটমানি ছাড়া এই দল কোন কাজ করে না। মানুষ সব দেখতে পাচ্ছে। আগামী পঞ্চায়েত ভোটে এর জবাব দেবে।”
পাল্টা তৃণমূলের অঞ্চল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা বলেন, বিজেপির কাজ ভাওতাবাজি। সারা দেশ জুড়ে কোন কাজ না করে ভাঁওতাবাজি করছে। ওরা সব কিছু নিয়ে মিথ্যাচার করে। বিধানসভা ভোটে পুরভোটে মানুষ ওদের জবাব দিয়েছে। আগামীতে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেবে।”
তবে এই হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকা জুড়ে বারবার সরকারের বিভিন্ন কাজ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে আসছে। প্রকাশ্যে আসছে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কিন্তু এই সব কিছুর মাঝে সাধারণ মানুষ তাদের সঠিক পরিষেবা পাচ্ছে না। রাজনীতির জাঁতাকলে বিপাকে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। জন-প্রতিনিধিদের উচিত রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সাধারণ মানুষের জন্য সঠিক পরিষেবা দেওয়া। এদিকে যেহতু শাসকদলের পঞ্চায়েত সদস্য, খোদ অভিযোগ জানাতে প্রধান এবং উপ-প্রধানের বিরুদ্ধে তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদলের উচ্চ নেতৃত্ব।