পপুলার ফ্রন্টের নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামপুরে প্রতিবাদ মিছিল

নিজস্ব প্রতিনিধি : ফেনসিডিল পাচারের মিথ্যা মামলা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ উঠলো এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ ও পপুলার ফ্রন্টের অন্যতম দায়িত্বশীল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক রফিকুল ইসলামকে ।অবিলম্বে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে সমস্ত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জেলা জুড়ে গণ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া । রবিবার পপুলার ফ্রন্টের উদ্যোগে মুর্শিদাবাদের ইসলামপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয় উক্ত মিছিলে উপস্থিত ছিলেন পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার জেলা সভাপতি মাসুদুল ইসলাম ,ডোমকল মহকুমা সভাপতি হাকিকুল ইসলাম সহ কয়েকশো নেতাকর্মী । পপুলার ফ্রন্টের নেতাদের দাবি ডাঃ রফিকুল ইসলাম একজন সৎ নিষ্ঠাবান যুবক বলে এলাকায় সুপরিচিত ।তার বিরুদ্ধে এমন মামলা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও পরিকল্পিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি ।অবিলম্বে ডাঃ রফিকুল ইসলামকে নিঃশর্ত ভাবে মুক্তির দাবি তোলেন ।নেতারা আরও দাবি তোলেন যেখানে আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এনআরসি বিরোধী অন্যতম মুখ সেখানে রাজ্য পুলিশ একজন এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের নেতাদের কিভাবে ফাঁসানোর ষড়যন্ত্র করে রাজ্য পুলিশ ।অবিলম্বে এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি তোলেন পপুলার ফ্রন্টের নেতৃত্বগণ ।

    অন্যদিকে এই ঘটনার নিন্দা ও অবিলম্বে ডাঃ রফিকুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বন্দি মুক্তি কমিটি ও পপুলার ফ্রন্টের রাজ্য নেতৃত্ব ।পপুলার ফ্রন্টের এক প্রেস বার্তায় রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ডক্টর মিনারুল সেখ জানান পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার শাহজাদপুর এরিয়া কমিটির সভাপতি রাফিকুল ইসলামকে গত ১২ ই ফেব্রুয়ারি বুধবার বিকেল ৫.৩০ মিনিট নাগাদ তার গ্রামের চিকিৎসালয় থেকে কয়েকজন কালো রংয়ের বলেরো গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যায়। অনেক খোঁজা-খুঁজির পর সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বহরমপুর থানায় গেলে থানার আইসি জানান এরকম কোন খবর তাদের কাছে নেই। বহরমপুর থানার পুলিশ এ কাজ করেনি। পরের দিন ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১ টা নাগাদ বহরমপুর থানার আইসি জানান রাফিকুল ইসলাম মুর্শিদাবাদ থানায় আছে। পরে জানা যায় মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ তাকে নারকোটিক ড্রাগ (NDPS) মামলা দিয়ে বহরমপুর আদালতে তুলছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে মুর্শিদাবাদ থানার পুলিশ তাকে লালবাগের বরপখানা থেকে রাত্রি ১০ টার পরে ফেনসিডিল নামক ড্রাগের বোতল সহ গ্রেপ্তার করে। সে এখন জেল হাজতে।

    এই ঘটনাকে আমরা রফিকুলের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র বলে মনে করছি। এ মামলা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও সাজানো। পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা কয়েকটি প্রশ্ন করতে চাই। এবং এটা যে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা সাজানো মামলা তার প্রমাণ তুলে ধরতে চাইছি।
    ১) পুলিশ রাফিকুল কে তুলে নিয়ে এসেছে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কে সম্পূর্ণ অমান্য করে।
    ২) রাফিকুল কে পুলিশ নিয়ে এসেছে বহরমপুর থানার শাহজাদপুর গ্রাম থেকে। এফ আই আর দেখিয়েছে মুর্শিদাবাদ থানার বরপখানা থেকে গ্রেপ্তার করেছে।
    ৩) F.I.R অনুযায়ী রাফিকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে রাত্রি ১১ টা 15 মিনিটে। তাকে বরপখানায় ধরেছে তার ও কিছু আগে। কিন্তু সত্য ঘটনা হল তাকে মুর্শিদাবাদ থানায় নিয়ে যাওয়া হয় সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ। থানায় সিসি টিভি ক্যামেরা তার প্রমাণ দেবে। সিসিটিভি ফুটেজ বলবে পুলিশ মিথ্যা বলছে।
    ৪) ঘটনা হলো রাফিকুল কে বিকেল ৫ টা ৩০ মিনিট নাগাদ শাহজাদপুর থেকে নিয়ে এসে সন্ধ্যা ছটা নাগাদ উত্তরপাড়া ইন্ডিয়ান পেট্রোল পাম্প থেকে পুলিশ গাড়িতে তেল নেয়। তখন রাফিকুল গাড়িতে বসে। পেট্রলপাম্পের সিসিটিভি ক্যামেরা পরীক্ষা করলে এসব সত্য বেরিয়ে আসবে।
    আমরা পুলিশের এই ষড়যন্ত্রমূলক ঘৃণ্য অপরাধের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। রাফিকুল ইসলাম এর উপর থেকে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা সাজানো মামলা প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। রাফিকুল ইসলাম একজন শিক্ষিত যুবক। পেশায় গ্রামীণ হোমিও চিকিৎসক। সৎ চরিত্রবান,পরোপকারী, সমাজসেবী হিসাবে এলাকার দল মত ধর্ম নির্বিশেষে সকল স্তরের মানুষের কাছে সুপরিচিত। গত ২২ ই জানুয়ারি থেকে ৩০ই জানুয়ারি পর্যন্ত বহরমপুরে এনআরসি বিরোধী সংহতি -র উদ্যোগে এনআরসি বিরোধী মহিলাদের যে ধর্না বসেছিল, রাফিকুল ইসলাম ছিল সে কর্মসূচির একজন সক্রিয় নেতা। আমরা মনে করছি এনআরসি বিরোধী আন্দোলন করার জন্যই তাকে এভাবে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

    দুর্ভাগ্য হলো, আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যখন দেশে এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের প্রধান মুখ, তিনি সবাইকে এনআরসি বিরোধী আন্দোলন করার জন্য উৎসাহিত করেছেন, তখন তার পুলিশ এনআরসি বিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিচ্ছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি রফিকুল ইসলাম-এর অবিলম্বে মুক্তির ব্যবস্থা করুন এবং পুলিশের এহেন অপরাধের বিচারের ব্যবস্থা করুন ।