রাজ্যপালকে যদি দলের লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয় তাহলে আর সংবিধান বলে কিছু থাকেনা

রাজ্যপালকে যদি দলের লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয় তাহলে আর সংবিধান বলে কিছু থাকেনা

    বার্তা সাম্প্রতিক:-রাজ্যপাল যেভাবে এই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একেরপর এক চিঠি দিচ্ছেন বা সংবাদ মাধ্যমকে বলছেন, এরপরে কি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে কেন্দ্রিয়  হস্তক্ষেপ করিয়ে রাজ্য সরকার কে সরিয়ে দেবার কোনও ব্যাপার আসতে পারে?

    অরুণাভ ঘোষ:- নানা  কেন্দ্রীয় সরকার এটা করতে পারবে না। দেশে নির্বাচিত সরকারকে ফেলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি।

    বার্তা সাম্প্রতিক: ন্যাশনাল ডিজাস্টার আইন জারি রয়েছে সারা দেশে। পশ্চিমবঙ্গবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে কেন কেন্দ্র এটা করতে পারবে না?

    অরুণাভ ঘোষ: সমস্যা অন্য জায়গায়।এই আইনে কোনো সরকারকে সরিয়ে দেওয়া যায় না। আর পশ্চিমবঙ্গ এই মহামারিতে মৃত বা আক্রান্তের সংখ্যা বিচারে প্রথম দশটা রাজ্যের মধ্যে নেই। এর থেকে অনেক খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের গুজরাটে তামিলনাড়ুতে।

    বার্তা সাম্প্রতিক: তাহলে কি সবটাই রাজনীতি হচ্ছে এখানে?

    অরুণাভ ঘোষ: অবশ্যই। রাজ্যপালকে যদি দলের লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয় তাহলে আর সংবিধান বলে কিছু থাকেনা।

    একই জিনিস সংবিধানকে উপেক্ষা করে স্বাধীনতার পর থেকে বার বার বহু রাজ্যে হয়েছে। এ রাজ্য হয়েছে। রাজ্যপাল ধরমবীর কেও শুনতে হয়েছিল গো ব্যাক ধরম বীর। কংগ্রেস আমলে ও এই জিনিস চলেছে। তবে তখন একটু রাগ রেখেঢেকে হত। এখনো সব খোলাখুলি চলছে। একটু খেয়াল করে দেখো। এই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপাল কারা। অন্ধপ্রদেশ তামিলনাড়ু কর্ণাটক রাজস্থান উত্তরাখণ্ড  ত্রিপুরা আর নাম বাড়িয়ে কি লাভ? সর্বত্রই শুধু প্রত্যেকটি রাজ্যপাল বিজেপির কেউ-না-কেউ। তারা কখনো কেউ দলীয় সভাপতি ছিলেন, কেউবা ছিলেন মন্ত্রী। কেউবা হয়তো সাংসদ। এখানে তোমার সেই লিস্ট দিলে লম্বা হয়ে যাবে। সকলেই জানে প্রত্যেকটি রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে কাদেরকে নিয়োগ করা হয়েছে। কেন্দ্রে বিজেপি আসবার পরে এগুলো হয়েছে।

    বার্তা সাম্প্রতিক: দলীয় রাজনীতিতে এই রাজ্যের মানুষের কি উপকার হবে?

    অরুণাভ ঘোষ:  রাজনীতি হোক কিন্তু সেটা রাজ্যের স্বার্থে হোক। কিন্তু দেশ ও দশের স্বার্থ ভুলে কেবলমাত্র দলের স্বার্থে কথা বলা এটাকে রাজনীতি বলে না। যদিও এই রাজনীতি এখন সবাই করছে।এ রাজ্যের মানুষ নিজেদের ভালোর চাইতে তার রাজনৈতিক দলকে ভালোবাসে বেশি।

    রাজ্য করোনাতে কি অবস্থায় আছে, তার চাইতেও লোকে এখন বেশি কাদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। অত যদি রাজ্যকে ভালোবাসতো তাহলে সরকারের বিরোধিতা না করে হিন্দু-মুসলমানের কথা না তুলে এক হয়ে মানুষের পাশে মানুষ দাঁড়াতো এবং সরকার যা বলছে সেটা শুনে ঘরের মধ্যে বসে থাকতো। তার বদলে রাস্তায় রোজ বেরোচ্ছে লকডাউন ভেঙে ভেঙে, এই রাজ্যে আপনি কি আশা করবেন? করোনা কমে যাবে?

    এ রাজ্যের মানুষকে আগে বুঝতে হবে নিজেদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে হিংসা করে ঝগড়া করে নিজেডের ভালো কিছু হয় না। ভালো থাকা যায় না। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই বাঙালিকে হিংসে করতে শেখানো হয়। পরীক্ষার হলে নম্বর তাকেই একমাত্র বেশি পেতে হবে অন্য সকলের চাইতে তার জন্য পড়াশুনায় বন্ধুকেও  সাহায্য করা যাবে না, এই রকমই একটা কথা শুনতে শুনতে বাঙালি বড় হয়।কারণ, নিজের প্রতি আস্থা নেই। ইনসিকিউরিটি। সে রাজ্যের রাজনীতি তো এরকমই হবে।

    তথ্যসূত্র বার্তা সাম্প্রতিক