অভিযোগ পাওয়ার ২৪ ঘন্টার মধ্যে অপহৃতকে উদ্ধার সোনারপুর থানার পুলিশের

জাকির হোসেন সেখ, নতুন গতি ১২ জুলাই, সোনারপুর: কম দামে ভালো আম পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে মালদহে অপহরণ করা হয়েছিল সোনারপুরের ঐ ব্যবসায়ীকে। সোনারপুর সাহেব পাড়ার ইমারত দ্রব্যের ঐ ব্যবসায়ী অশোক রায় গত ৭ জুলাই মালদহ গিয়েছিলেন পাথর কিনতে। সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় যুবক বিশ্বজিৎ ওড়াও। সময়মতো পাথর কেনা না হওয়ায় বাড়িতে আনার জন্য ভালো আমের খোঁজ করছিলেন। সেই সুযোগে দুজন অপহরণকারী কম দামে ভালো আম পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে একটি গাড়িতে করে অশোক বাবু ও তাঁর সঙ্গীকে কালিয়াচকের দিকে নিয়ে যায়।
কিছুটা যাবার পর গাড়ির মধ্যে বন্দুক দেখিয়ে একটি ফাঁকা মাঠে নিয়ে গিয়ে দুজনকে দড়ি দিয়ে বেঁধে রেখে কাছে থাকা সমস্ত কিছু কেড়ে নিয়ে দুদিন ধরে ফাঁকা মাঠে বেঁধে রেখে অত্যাচার করে। এরই মধ্যে বিশ্বজিৎ কোনরকমে পালিয়ে যায়। এরপর অশোক বাবুকে ইংরেজবাজার থানা এলাকার একটি জায়গায় ঈশারুদ্দিন শেখের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। মুক্তিপণ হিসেবে আট লক্ষ টাকা দাবি করে বাড়িতে ফোন করে অপহরণকারীরা।
সোনারপুরের বাড়িতে অশোক বাবুর স্ত্রী অপর্ণা দেবী মুক্তিপনের ফোন পেয়ে ১০ জুলাই সোনারপুর থানার দ্বারস্থ হয়। বিষয়টি জানার পরেই বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খানের নির্দেশে সোনারপুর থানার দুই অফিসার প্রদীপ রায় ও অর্ঘ মন্ডলের নেতৃত্বে চার জনের একটি দল অপর্ণা দেবীকে সঙ্গে নিয়ে মালদহ রওনা দেয়। টোপ হিসাবে নেওয়া হয় মুক্তিপণ দেয়ার টাকার ব্যাগ। অপারেশনের ছক অনুযায়ী জায়গায় জায়গায় আগে থেকেই উপস্থিত ছিল সাদা পোষাকের স্থানীয় পুলিশ। স্টেশনে নেমে অপর্ণা দেবী প্রথমেই মোবাইলে যোগাযোগ করেন অপহরণকারীদের সঙ্গে।
তারা টাকা চাইলে ব্যাগ খুলে তাদের টাকা দেখিয়ে আগে স্বামীর কাছে নিয়ে যেতে বলেন। অপহরণকারীরা অপর্ণা দেবীকে একটি টোটোতে উঠতে বলে। অপর্ণা দেবীর সঙ্গে টোটোতে ওঠেন একজন সাদা পোশাকের পুলিশও। এরপর ওই টোটোর পিছু নেয় অন্য একটি টোটোতে থাকা বাকি পুলিশ এর দলটি। ঈশারুদ্দিন এর বাড়িতে গিয়ে স্বামীকে দেখতে পায় অপর্ণা দেবী। এর পরই পুলিশ চারিদিক দিয়ে ঘিরে ধরলে তিনজন পালিয়ে যায়। ঈশারুদ্দিন শেখ ও বিলাল শেখ নামে দুজন কুখ্যাত অপহরণকারীকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে সোনারপুর থানার পুলিশ।

    আজ শুক্রবার ধৃতদের বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খান সাংবাদিকদের জানান এই দুষ্কৃতকারীরা এর আগেও বেশ কয়েকটি অপহরণের ঘটনায় যুক্ত। এই দুজন ছাড়া ও গোটা দলটিকে হাতে পেতে এই দুজনকে নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হলে আদালতে তা মঞ্জুর হয়।

    হিন্দি সিনেমার কায়দায় অপহৃত হ‌ওয়া এবং থানায় অভিযোগ জানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সেই অপহৃতকে উদ্ধার করার সাথে সাথে অপহরণকারী দুই কুখ্যাত দুষ্কৃতীকেও গ্রেফতার করায়
    বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার রশিদ মুনির খানের প্রতি, সোনারপুর থানার দুই অফিসার প্রদীপ রায় ও অর্ঘ মন্ডলের নেতৃত্বে চার জনের অপারেশন টিমের প্রতি, সর্বোপরি সোনারপুর থানার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রায় দম্পতি সহ এলাকার আপামর জনসাধারণ।